কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে ওয়াকফ সম্পত্তি জরিপের কাজ করছে কলকাতা পুরসভা। কিন্তু, সেই কাজ দায়সারাভাবে করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুললেন ওয়াকফ এস্টেটের মোতায়াল্লি তথা কর্ণধারেরা। তাদের অভিযোগ, কলকাতা হাইকোর্ট যথাযথভাবে জরিপ করার নির্দেশ দিলেও তা ঠিকমতো করছে না পুরসভা। সে ক্ষেত্রে হাইকোর্টের নির্দেশ মানা হচ্ছে না বলে তারা অভিযোগ তুলেছেন। তাদের বক্তব্য, একাধিক জায়গায় শাসক দলের মদতে ওয়াকফ সম্পত্তি দখল হয়েছে। সেখানে জরিপ করার জন্য ঢোকার সাহস পাচ্ছেন না পুরসভার কর্মীরা। সেক্ষেত্রে জরিপের কাজ হচ্ছে না।
আরও পড়ুন: ওয়াকফ সম্পত্তি নিয়ে বড় ঘোষণা জেপি নাড্ডার, হিমাচল ভোটের ইস্তেহার
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি টালিগঞ্জে একটি ওয়াকফ সম্পত্তির জরিপ করতে গিয়েছিল কলকাতা পুরসভা।সেক্ষেত্রে যারা সম্পত্তি জবর দখল করেছিল তাদের হুমকিতে মাঝপথে ফিরে আসতে হয় পুরসভার কর্মীদের। শুধু তাই নয়, জবরদখলকারীদের হাতে ওই ওয়াকফ এস্টেটের এক মহিলা প্রহৃত হয়েছিলেন বলে অভিযোগ। ইতোমধ্যেই ওই মহিলা কলকাতা পুলিশ কমিশনারের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন। অন্যদিকে, টালিগঞ্জের সতীশ মুখার্জি রোডে বেশ কয়েক বিঘা জমি জুড়ে টিপু সুলতানের পরিবারের সদস্যদের যে কবর রয়েছে সেটি গ্রেড ওয়ান হেরিটেজ থাকা সত্ত্বেও জবরদখল হয়েছে বলে অভিযোগ। তবে সেখানে কলকাতা পুরসভা এখনও সমীক্ষা করেনি বলে অভিযোগ উঠেছে। টিপু সুলতানের প্রপৌত্র তথা মাইসোর ফ্যামিলি ওয়াকফ এস্টেটের সম্পাদক শাহিদ আলম এই অভিযোগ তুলেছেন। তাঁর বক্তব্য, এখানে দখলদারদের হুমকির কারণেই পুরসভা আসেনি। তার ফলে আসল কাজ হচ্ছে না। সেক্ষেত্রে কেন পুরসভা পুলিশ নিয়ে যাচ্ছে না? সেই প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই।
ওয়াকফ সম্পত্তি জরিপের জন্য কলকাতা হাইকোর্ট পুরসভার বিশেষ কমিশনার সোমনাথ দে’কে ওয়াকফ কমিশনের পদে নিযুক্ত করেছে। ওয়াকফ সম্পত্তির জরিপ যে ঠিকমতো করা হচ্ছে না সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পুরসভা। তাদের বক্তব্য, ঠিকমতোই কাজ চলছে। পুরসভার কাজে সমস্যা হচ্ছে না। পাশাপাশি পুরসভার কর্মীরা বাধা পেলে পুলিশের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে বলেও জানানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ওয়াকফ সম্পত্তি বাঁচানোর জন্য কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন টিপু সুলতানের প্রপৌত্র শাহিদ আলম। গত অগস্ট মাসে মামলার শুনানিতে বিচারপতি রাই চট্টোপাধ্যায় ওয়াকফ সম্পত্তি রক্ষার ক্ষেত্রে সরকার তথা পুরসভার ভূমিকায় তীব্র উষ্মা প্রকাশ করেন। এরপরে বিচারপতি চলতি বছরের মধ্যেই জরিপের কাজ শেষ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।