রাজ্যে এখন বহু সামাজিক প্রকল্প চলে। যার সরাসরি উপকার পান বাংলার মানুষজন। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের ‘আর্থিক অবরোধ’ সমস্যায় ফেলেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে। কারণ বকেয়া টাকা না দেওয়ায় বড় সংকট তৈরি করেছে। তাই এবার আয়ের সন্ধানে বিকল্প ব্যবস্থা করছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার। রাজ্য সরকারের অব্যবহৃত জমি এবং যেসব জমি দখল হয়ে রয়েছে এবার সেসব জমির জরিপ শুরু করেছে নবান্ন বলে সূত্রের খবর। দখল হওয়া জমি দখলমুক্ত করে নিলামে বিক্রির পথে হাঁটতে পারে রাজ্য সরকার বলে খবর। ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর সূত্রে খবর, সব ঠিক থাকলে এই পথে একলপ্তে বড় অঙ্কের টাকা ঢুকবে কোষাগারে।
বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছে? এই কাজ করতে ইএম বাইপাস সংলগ্ন তিনটি ওয়ার্ডকে চিহ্নিত করা হয়েছে। ১০৭, ১০৮ এবং ১০৯ ওয়ার্ডে এমন জমি আছে। এই তিনটি ওয়ার্ড বাইপাস সংলগ্ন এলাকা। এখানে রাজ্য সরকারের প্রচুর জমি পড়ে রয়েছে। সেই সব জমি সার্ভে করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলে সূত্রের খবর। এমনকী আগামী ২৭ অগস্টের মধ্যে জমি সংক্রান্ত সার্ভে রিপোর্ট মুখ্যমন্ত্রীর টেবিলে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই জায়গাগুলি পরিদর্শন করেছেন কয়েকজন মন্ত্রী। সরকারি জমি গায়ের জোরে দখল করে রাখা যাবে না বলে আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
আর কী জানা যাচ্ছে? বামফ্রন্ট সরকারের আমলে ইএম বাইপাসের পাশে আবাসন গড়ে তোলার জন্য বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগ করেছিল। তবে সে পথ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার সরে এসেছে। কারণ তাতে সরকারের আর্থিক সুবিধা হয় না। সেখানের সরকারি জমি বাজার দরেই বিক্রি হবে। এই সরকারি জমিগুলি বিক্রির পরামর্শ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিয়েছেন উপদেষ্টা অমিত মিত্র। অমিতবাবুই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে এই প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তাতে সিলমোহর দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী বলে সূত্রের খবর। নবান্ন সূত্রে খবর, এদিকে ১০৮ নম্বর ওয়ার্ডের অধীনে থাকা ১০ একর জমি নিলামে বিক্রি করার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। এবার তার পাশের দুই ওয়ার্ডের সরকারি জমিও বিক্রি করতে চাইছে রাজ্য সরকার।
আরও পড়ুন: যাদবপুর কাণ্ডে ধরনায় বসতে চলেছে তৃণমূল কংগ্রেস, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে সক্রিয় ছাত্র সংগঠন
জমি বিক্রির নিয়ম কি শিথিল হবে? বাংলায় বাম জমানা থেকেই বন্ধ কারখানার জমি পড়ে রয়েছে। আবার অনেকে জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ফেলে রেখেছেন। এইসব অব্যবহৃত সরকারি জমি বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নবান্ন আগেই নিয়েছিল। তখন নিয়ম জারি করে বলা হয়েছিল, ঢালাও জমি বিক্রি করা হবে না। নির্দিষ্ট শর্ত দিয়েই জমি বিক্রি করবে রাজ্য সরকার। এবার সূত্রের খবর, যে শর্ত রাখা হয়েছিল তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হল, ওইসব জমি বিক্রি করা হবে রিয়েল এস্টেটের কাজে। জমি কিনে সেখানে অন্য কাজ করা যাবে না। কিন্তু এবার সেই নিয়ম কিছুটা শিথিল করতে চাইছে রাজ্য সরকার।