যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় ক্যাম্পাসেই এখন প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। রাজ্যপাল থেকে মুখ্যমন্ত্রী মুখ খোলায় তোলপাড় হয়েছে রাজ্য রাজনীতি। পড়ুয়া এবং নাগরিক সমাজও রাস্তায় নেমে পড়েছে। সকলের মুখে একটাই দাবি, ‘আমরা বিচার চাই’। এই ঘটনার প্রতিবাদে এবার রাজনৈতিক দলগুলিও নানা কর্মসূচি নেওয়ার পরিকল্পনা ছকে ফেলেছে। স্বাধীনতা দিবস মিটলেই যাদবপুর কাণ্ডে ধরনায় বসতে চলেছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে এই ধরনা হতে চলেছে বলে সূত্রের খবর। এই ঘটনায় অত্যন্ত রেগে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সে কথা তিনি নিজে মুখে বলেছেনও।
কবে হবে ধরনা কর্মসূচি? এদিকে সূত্রের খবর, আগামী ১৬ অগস্ট যাদবপুর ৮বি বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ধরনা কর্মসূচি পালন করবে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। হাজরা এলাকায় স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে ফ্রিডম অ্যাট মিডনাইট অনুষ্ঠিত হয়। সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্যদের ডেকে ধরনা কর্মসূচি পালনের কথা বলেছেন। দলের সুপ্রিমোর থেকে নির্দেশ পেয়েই ধরনা কর্মসূচির প্রস্তুতি শুরু করে দেয় তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য এবং দক্ষিণ কলকাতার তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি সার্থক বন্দ্যোপাধ্যায় একসঙ্গে এই কর্মসূচির রূপরেখা তৈরি করেন।
আর কী দেখা গেল? এদিন ছাত্র মৃত্যুর প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে মিছিল করে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি তুলো ঢাকুরিয়া থেকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত মিছিল করা হয়। এই প্রতিবাদ মিছিলে পা মিলিয়ে ছিলেন বহু অধ্যাপকরাও। তবে মিছিল থেকে বামপন্থী ছাত্র সংগঠনের দখল থেকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়কে মুক্ত করার ডাক দেয় তাঁরা। এদিন পুনর্নির্মাণ হয় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। তখন ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন কলকাতা পুলিশের ডিসি (দক্ষিণ শহরতলি) বিদিশা কলিতা দাশগুপ্ত। বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় এখনও পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে ৬ জনকে আরও তলব করেছে যাদবপুর থানা।
আরও পড়ুন: যাদবপুর কাণ্ডে হল পুনর্নির্মাণ, ক্যাম্পাসে সিসি ক্যামেরার দাবি, নির্দেশিকা শিক্ষা দফতরের
ঠিক কী বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী? এই ছাত্র মৃত্যুর ঘটনার জন্য সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘মার্কসবাদীদের’ দায়ী করেন মুখ্যমন্ত্রী। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনা টেনে এনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘যাদবপুরের ছেলেটির উপর অত্যাচার করে ওকে মেরে ফেলল। ওর বাবাকে ফোন করেছিলাম। ওর বাবা কাঁদতে কাঁদতে আমাকে বলছিলেন, দিদি আমি ভেবেছিলাম কালকেই যাব। ছেলেটা বলছিল, বাবা আমার উপর অত্যাচার করছে। কিন্তু আমি যাওয়ার আগেই সব শেষ হয়ে গেল। ওরা আমার ছেলের উপর অত্যাচার করে উপর থেকে ছুড়ে ফেলেছে। আমি দুঃখিত, আমি স্তম্ভিত, আমি মর্মাহত। আমি সব জায়গায় গেলেও, যাদবপুরে আমি যেতে চাই না। পড়াশোনায় ওরা ভাল হতে পারে। কিন্তু শুধু পড়াশোনায় ভাল হলে মানুষ মানুষ হয় না। যদি তার বিবেক না থাকে। এই ঘটনায় কাউকে রেয়াত করা হবে না।’