ছাত্রছাত্রীদের সমাজের বুকে দাঁড় করানোর কাজটি করে থাকেন শিক্ষক–শিক্ষিকারা। তাই তাঁদের সমাজ গড়ার কারিগর বলা হয়। এখন সরকারি স্কুলে মাধ্যমিক– উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় ভাল ফল করছে। কিন্তু দিনের পর দিন যেসব শিক্ষক, শিক্ষিকা এই সমাজ গড়ার কাজ করে চলেছেন এবং আগামী প্রজন্মকে তৈরি করার গুরু দায়িত্ব নিজেদের কাঁধে নিয়েছে তাঁদের মন কেমন আছে? এই খোঁজ কেউ নেয় না। এবার রাজ্যের সরকারি স্কুলের শিক্ষকদের মনের অবস্থা কেমন আছে তার খোঁজ নিতে রাজ্যের প্রত্যেকটি সরকারি স্কুলে সমীক্ষা চালাবে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ।
কবে থেকে সমীক্ষা হবে? সূত্রের খবর, দুর্গাপুজো মিটলেই শিক্ষক–শিক্ষিকাদের মনের অবস্থা কেমন আছে সেই সমীক্ষার কাজ শুরু হবে। ‘মেন্টাল ওয়েলবিয়িং অফ টিচার্স সার্ভে’–এর অধীনে এই সমীক্ষার কাজ করা হবে। কারণ কোথাও যেন একঘেয়েমি তৈরি না হয় সেটাই দেখতে চান পর্ষদের আধিকারিকরা। এই প্রকল্পটি কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকের ‘মনোদর্পণ’–এর অধীনে। শিক্ষকদের মানসিক স্বাস্থ্যের সমীক্ষা করতেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে কেন্দ্রের শিক্ষা মন্ত্রকের পক্ষ থেকে দেশের প্রতিটি রাজ্যের কাছে এই নির্দেশিকা পাঠানো হয়। বাংলা বিষয়টিকে মান্যতা দিয়েছে বলে খবর।
কেমন করে হবে সেই সমীক্ষা? মধ্যশিক্ষা পর্ষদ সূত্রে খবর, এই সমীক্ষার বিষয়ে রাজ্যের প্রত্যেকটি সরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের নির্দেশিকা পাঠিয়েছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। এই সমীক্ষা করতে ডেপুটি সেক্রেটারি (অ্যাকাডেমিক) ঋতব্রত চট্টোপাধ্যায়ের সাক্ষরিত নির্দেশিকায় রয়েছে একটি লিঙ্ক। সেই লিঙ্কে গেলে খুলে যাবে গুগল শিট। সেখানেই শিক্ষকদের যাবতীয় তথ্য আপলোড করতে হবে। আগামী ১৫ অক্টোবর তারিখের মধ্যে স্কুলগুলিকে শিক্ষকদের যাবতীয় তথ্য আপলোড করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দুর্গাপুজোর পর এই বিষয়ে শুরু হবে সমীক্ষা। এই সমীক্ষা রিপোর্ট রেকর্ড করা হবে।
আরও পড়ুন: যোগেশচন্দ্র চৌধুরী ল’ কলেজের অধ্যক্ষ চাপে, সিআইডি তদন্তের নির্দেশ বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের
আর কী জানা যাচ্ছে? নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক পর্ষদের আধিকারিকের কথায়, ‘স্কুল থেকে পাঠানো নথির ভিত্তিতে শুরু হবে সমীক্ষা। এভাবেই শিক্ষকদের মনের স্বাস্থ্যের খোঁজ নেওয়া হবে।’ এই কাজের মধ্য দিয়ে একদিকে প্রত্যেক শিক্ষক–শিক্ষিকার মনের অবস্থা বোঝা যাবে। আর তাঁদের অভাব–অভিযোগও শোনা যাবে। তাছাড়া স্কুলের কোনও সমস্যা সেটাও উঠে আসবে। সুতরাং সরাসরি স্কুলগুলির সঙ্গে একটা সমন্বয় গড়ে উঠবে। ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে কোনও বক্তব্য থাকলে সেটাও জানা যাবে। সব থেকে বড় কথা মনের স্বাস্থ্য জেনে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।