কোনও রাজনৈতিক দলের দুর্গাপুজো এ বছর প্রথম দেখবে কলকাতা। কেন্দ্র সরকারের প্রতিষ্ঠান সল্টলেকের পূর্বাঞ্চলীয় সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে (ইজেডসিসি) হচ্ছে বিজেপি–র দুর্গাপুজো। আগামী বৃহস্পতিবার ভার্চুয়াল মাধ্যমে যার উদ্বোধন করবেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ইতিমধ্যে মণ্ডপ চত্বরে তুঙ্গে গেরুয়া শিবিরের প্রস্তুতি। আর তার মাঝেই সামনে এসেছে দলের ভেতরকার ফাটল।
বিজেপি–র মহিলা মোর্চা দ্বারা আপাত ভাবে এই পুজো পরিচালিত হলেও এর মূল দুই মাথা হলেন রাজ্য বিজেপি–র কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় ও সর্বভারতীয় সহ সভাপতি মুকুল রায়। অথচ রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষকে (বর্তমান করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন) পুজোর সঙ্গে জড়িত কোনও কর্মকাণ্ডে রাখা হয়নি বলে অভিযোদ। বাদ পড়েছেন গেরুয়া শিবিরের একাধিক শীর্ষ নেত্বত্বে। সম্প্রতি এ নিয়ে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘পুজো করা দলের কাজ নয়। দল পুজো করছে না। প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের আগে শুধু একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। চার দিনের নয়, অনুষ্ঠান হবে একদিনের জন্যই।’
কিন্তু বাস্তবে যে তা আদৌ হচ্ছে না তা জানিয়ে দিলেন পুজোর দায়িত্বে থাকা রাজ্য বিজেপি–র সম্পাদক সঙ্ঘমিত্রা চৌধুরী। তাঁর কথায়, পুজো উপলক্ষে সপ্তমীতে ছৌনাচ, অষ্টমীতে বাউল আর সহজিয়া এবং নবমীতে গান করবে দোহার।
দলের পক্ষ থেকে আরও জানা গিয়েছে, ইজেডসিসি–তে আয়োজিত বিজেপি–র ওই দুর্গোৎসবে নৃত্য পরিবেশন করবেন ডোনা গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি পেশাদার শিল্পী তো বটেই, একইসঙ্গে তিনি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের স্ত্রী। আর সম্প্রতি সৌরভের সঙ্গে বিজেপি–র শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে সৌরভের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগকে ঘিরে রাজ্য রাজনীতিতে যথেষ্ট জল্পনা ছড়িয়েছে। তাই বিজেপি–র দুর্গাপুজো ডোনা গঙ্গোপাধ্যায়ের অনুষ্ঠান বেশ তাৎর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।
উল্লেখ্য, বিজেপি–র এই পুজো উদ্বোধনের পাশাপাশী ষষ্ঠীর দিন ভার্চুয়াল মাধ্যমে শারদোৎসব উপলক্ষে ভাষণ দেওয়ার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। তার আগে নিজের বাসভবনে দুর্গাপ্রতিমা আরাধনা করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী। ভাষণ দেওয়ার সময় তাঁর পরনে থাকতে পারে বাঙালির পোশাক ধুতি–পাঞ্জাবি। সব মিলিয়ে বিজেপি–র দুর্গাপুজোকে ঘিরে উৎসবের আমেজ আরও কিছুটা বাড়ছে বলেই মনে করছে আপামর বাঙালি।