গাউনেই যেন চেনা যায় আইনজীবীদের। কিন্তু সেই কালো গাউনই ছিল না আইনজীবীদের শরীরে। এমনকী কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল এমভি রাজুকেও কালো গাউনে দেখা যায়নি। এদিকে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি এনিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। সিআইএসএফের আইনজীবী ডিপি সিংহকে কালো গাউন ছাড়া দেখে তিনি প্রশ্ন করেন। তবে তিনি এনিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
এদিন তিনি ভার্চুয়াল মাধ্যমে শুনানিতে অংশ নিয়েছিলেন। তবে আইনজীবী ডিপি সিংহকে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে এটা দেখেই দ্রুত কালো গাউন চাপিয়ে নেন কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল।
আসলে আদালতে আইনজীবীরা কালো গাউন পরে, কালো কোর্ট পরে বিচারপ্রক্রিয়ায় অংশ নেন। অনেকের মতে, প্রাথমিকভাবে এটা ছিল ব্রিটিশ রীতি। ১৬৬৫ সালে রাজা দ্বিতীয় চার্লসের মৃত্যুর পরে আদালতে শোক প্রকাশের জন্য আইনজীবী ও বিচারপতিরা এই পোশাক পরা শুরু করেছিলেন। ইংরেজরা যেখানে উপনিবেশ করত সেখানেও তারা কোর্টে কালো গাউন বা কোট পরার রীতি চালু করে দিয়েছিল। পরবর্তীতে ভারতের আদালতেও কালো গাউন বা কোট পরার রেওয়াজ চালু হয়। সেই রীতি চলছে এখনও। তবে করোনা পরিস্থিতির সময় সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল যে আইনজীবীদের গাউন পরতে হবে না। তবে করোনার দাপট কমে যাওয়ার পরে আইনজীবীদের গাউন পরে আসতে হবে জানিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট।
এদিন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি, আইনজীবী ডিপি সিংহকে জানিয়েছিলেন, আপনি গাউন না পরেই কেন শুনানি করছেন? কারণ জানতে পারি? একথা শুনে কিছুটা থমকে যান তিনি। পরে জানান ভার্চুয়াল মাধ্যমে রয়েছি বলে গাউন পরেননি। তখন প্রধান বিচারপতি জানান, ভার্চুয়াল মাধ্যমে কোর্ট চলছে মানে তো সেটাও আদালতের প্রক্রিয়া। এখানেও তো গাউন পরা দরকার। তবে আইনজীবী জানিয়েছিলেন, সুপ্রিম কোর্টে ভার্চুয়াল মাধ্যমে শুনানিতে গাউন পরতে হয় না। সেখানে অনুমতি দেওয়া হয়। সেকারণে এখানেও অংশ নিয়েছি। তিনি এনিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন।
তবে অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল জানিয়েছেন, সুপ্রিম কোর্টে ভার্চুয়াল মাধ্যমে শুনানি হলে আইনজীবীদের গাউন পরতে হয় না। তবে বিচারপতি জানিয়েছেন, ঠিক আছে আপনারা বলুন। আমি শুধু নিয়মটা বললাম।
দীর্ঘদিন ধরেই কালো গাউন পরা আইনজীবীদের রীতির মধ্যে পড়ে। সেই রীতি মেনে আজও কালো গাউন বা কালো কোট পরে বিচারপ্রক্রিয়ার শুনানিতে অংশ নেন আইনজীবীরা। গোটা দেশ এটা দেখতেই অভ্যস্ত। আদালতে এভাবেই আইনজীবীদের দেখতে অভ্যস্ত সাধারণ মানুষ। সেই রীতির কথাটাই এদিন মনে করিয়ে দিলেন প্রধান বিচারপতি।