বাংলায় এবারই প্রথম জঙ্গিরা লুকোচুরি খেলল এমনটা নয়। এর আগেও দেখা গিয়েছে বার বার জঙ্গিদের নিরাপদ আশ্রয় হল এই বাংলা। এর আগের নজিরগুলোর কথা শুনলে হতবাক হয়ে যাবেন আপনিও। কুখ্য়াত সব জঙ্গিরা বাংলায় লুকিয়েছে অতীতে। কিছু ক্ষেত্রে ধরা পড়েছে, কিছু ক্ষেত্রে হয়তো ধরা পড়েনি।
এদিকে এর আগে যে সমস্ত জঙ্গিরা বাংলায় ডেরা নিয়েছিল তা জানলে চোখ কপালে উঠতে পারে। ২০০৭ সালে বেঙ্গালুরুতে তথ্য় প্রযুক্তি সংস্থার নাশকতার ঘটনার উঠে এসেছিল আল বদর নামে একটা জঙ্গি সংগঠনের নাম। সেই ঘটনায় ধরা পড়েছিল ফৈয়াজ নামে এক যুবক। আর তদন্তে জানা যায় সে একটা সময় কলকাতায় ডেরা নিয়েছিল।
এদিকে ২০১৩ সালে লস্করের বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ আব্দুল করিম টুন্ডাকে দিল্লি পুলিশ বাংলা থেকেই গ্রেফতার করেছিল।
সেই সঙ্গেই ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ইয়াসিন ভাটকলও নাকি লুকিয়েছিল এই বাংলাতেই।
তবে বাংলায় জঙ্গি কার্যকলাপ সম্পর্কে কথা বলতে গেলে বার বার উঠে আসে বর্ধমানের খাগড়াগড় বিস্ফোরণের প্রসঙ্গ। কেঁপে উঠেছিল খাগড়াগড়। কেঁপে উঠেছিল গোটা দেশ। সেই সময় বোঝা যায় জেএমবির কুখ্যাত জঙ্গিরা ঘাঁটি গেড়েছে এই রাজ্য়েই। কিন্তু বিস্ফোরণের জেরে তাদের সব ছক ভেস্তে যায়।
২০০৯ সালে পাক গুপ্তচর সন্দেহে শাহবাজ ইসমাইলকে গ্রেফতার করেছিল কলকাতা পুলিশের এসটিএফ।
এদিকে আল কায়দার শীর্ষ নেতা আবু তালহা আবার কোচবিহারে লুকিয়ে ছিল বলে খবর। সে নাকি ভোটার কার্ডও বের করে ফেলেছিল বলে অভিযোগ। কলকাতা পুলিশের সূত্র ধরে বাংলাদেশ পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছিল। এদিকে ২০১৭ সালে বুদ্ধগয়া বিস্ফোরণের সঙ্গে যুক্ত অভিযুক্তদেরও এই রাজ্য থেকে গ্রেফতার করেছিল কলকাতা পুলিশের এসটিএফ।
কিন্তু কেন বার বার জঙ্গিরা বাংলায় লুকিয়ে থাকে? ওয়াকিবহাল মহলের মতে, বাংলার সঙ্গে বাংলাদেশের একাধিক ক্ষেত্রে খোলা বর্ডার রয়েছে। এটা জঙ্গিদের ক্ষেত্রে সুবিধার। এখানে তাড়া খেলে তারা বাংলাদেশে পালিয়ে যেতে পারে। আবার বাংলা থেকে প্রয়োজনে উত্তর পূর্বেও চলে যেতে পারে জঙ্গিরা। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে একাধিক ক্ষেত্রে দেখা যায় যে এই জঙ্গিরা বাংলায় এসে আধার কার্ডও বানিয়ে ফেলেছে। তবে কি বাংলায় জঙ্গি মডিউলের স্লিপার সেল আজও সক্রিয়?
এদিকে সেই বাংলা থেকেই গ্রেফতার করা হল সন্দেহভাজন দুই আইএসআইএস জঙ্গিকে। আবদুল মাথিন তহ্বা এবং মুসাভির হুসেন সাজিব নামে দুই সন্দেহভাজন জঙ্গিকে বাংলার নিউ দিঘা থেকে গ্রেফতার করে এনআইএ। কর্নাটকের শিবামোগায় একসঙ্গে এরা পড়াশোনা করত। সেই থেকেই দু’জনের আলাপ–পরিচয়। তারা নাম ভাঁড়িয়ে কলকাতার হোটেলেও ছিল। বাংলার একাধিক পর্যটনস্থানে গিয়েছিল তারা।