ঈশ্বরকণা আবিষ্কার ঘিরে ২০১২ সালে কার্যত তীব্র সাড়া ফেলে দিয়েছিল জেনিভার অদূরে অবস্থিত গবেষণা কেন্দ্র সার্ন। লার্জ হ্যাড্রন কোলাইডার যন্ত্র দিয়ে এই কণার অস্তিত্ব আবিষ্কার কার্য গোটা বিশ্বকে নাড়া দিয়ে দেয়। সার্নের বিজ্ঞানীরা যখন এই আবিষ্কার ঘিরে তুমুল কৌতূহলের কেন্দ্রে, তখন সেখান থেকে ক্রোশ ক্রোশ দূরে হাওড়ার এক লেদ কারাখানার শ্রমিকরাও সকলের অজান্তেই সেই আবিষ্কারের প্রক্রিয়ার ছোট্ট একটা অংশের অংশিদার হয়ে ওঠার আনন্দে উচ্ছ্বসিত ছিলেন। এই কারখানার শ্রমিকরাই আজ মে দিবসে সম্মানিত।
ঘটনা ১০ বছর আগের। ২০১২ সালে পরমাণু গবেষণা কেন্দ্র সার্নের গবেষণার জন্য প্রয়োজন ছিল একটি যন্ত্র। যা ২৭ কিলোমিটার দীর্ঘ সুড়ঙ্গে প্রবেশ করতে পারবে। সেই যন্ত্রের একটি অংশ তৈরি হয়েছিল হাওড়ার লেদ কারখানায়। সেদিনের কথা আজও মনে করেন যন্ত্রাংশের নির্মাণে থাকা প্রধান মিস্ত্রী কালিপদ প্রামাণিক। তাঁর মনে পড়ে, কীভাবে সাহেবরা এসে দেখে যেতেন যন্ত্রাংশ নির্মাণের কর্ম পদ্ধতি। মাত্র তিন মাসের সময়ে মাঝখানে গর্ত যুক্ত গোলাকার প্লেট তৈরি করে দেওয়া হয়েছিল। আর সেই কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত শ্রমিকদের আদ সংবর্ধনা দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, সেই গবেষণার সঙ্গে জড়িত ছিলে এদেশের স্বনামধন্য সাহা ইনস্টিটিউট অফ নিউক্লিয়ার ফিজিক্স। হাওড়ার এই কারখানায় এমন কর্মকাণ্ডে ওই প্রতিষ্ঠানের বহু বিজ্ঞানীরাই হাত লাগিয়েছেন। এদিকে এই সংবর্ধনা পর্বের গোটা ঘটনায় উঠে আসে বিশিষ্ট বিজ্ঞানী বিকাশ সিনহার নাম। তিনি বলছেন, হাওড়ার কালিপদবাবুরা ১০০ শতাংশ নিখুঁত যন্ত্রাংশ তৈরি করে দিয়েছিলেন সেবার। সেই ঘটনার পর সময় পেরিয়েছে অনেক। আজ মে দিবসে সেই শ্রমিকদের সংবর্ধনা ফের একবার উস্কে দিল সেই গর্বের ইতিহাসের ছবি।