পড়াশোনার পাশাপাশি নজর দিতে হবে খেলাধুলা, সামাজিক মেলামেশাতেও। বার্ষিক পরীক্ষায় শুধু ভালো নম্বর পেলেই হবে না। প্রত্যেকেই বছরের শেষের পরীক্ষাগুলিতে ভালো ফল করার দিকে মনোনিবেশ করছেন, শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি অভিভাবকরাও একই পথে হেঁটে চলেছেন। স্কুলের প্রথাগত শিক্ষায় আটকে, নিজস্বতা হারিয়ে ফেলছে পড়ুয়ারা। তাই এবার পড়ুয়াদের মধ্যে আত্ম-সচেতনতা বাড়াতে অন্য পদক্ষেপ এনসিইআরটি-র। তৈরি করা হবে অন্য রকমের রিপোর্ট কার্ড। এই বিষয়টিকেই নজরে রেখে এবার এনসিইআরটি-র মান-নির্ধারণকারী সংস্থা পরখ, একটি হোলিস্টিক প্রোগ্রেস কার্ড (এইচপিসি) তৈরি করেছে৷ দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের একটি প্রতিবেদন অনুসারে, এইচপিসি পড়ুয়াদের অভিভাবক, তার সহপাঠীদের প্রতিক্রিয়া ভিত্তিতেও রিপোর্ট কার্ডটি প্রস্তুত করবে। শ্রেণীকক্ষে পড়াশোনা চলাকালীন শিক্ষার্থীদের অ্যাকাডেমিক পারফরম্যান্সই নয় বরং তাদের জ্ঞান, সামাজিক ও মানসিক ক্ষমতা ব্যবহারের উপরও নজর রাখবে পরখ।
- ওই রিপোর্ট কার্ড কীভাবে পাবে শিক্ষার্থীরা
পরখ-র এই হোলিস্টিক মূল্যায়নে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকেই সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করতে হবে। বিভিন্ন বিষয়ে তাদের দক্ষতা এবং শেখার আগ্রহ সহ আরও বিভিন্ন দিকের উপর ভিত্তি করে করা হবে রিপোর্ট কার্ডের মূল্যায়ন। তিনটি বিশেষ ভাগে ডিজাইন করা হয়েছে এইচপিসি, যথাক্রমে ফাউন্ডেশন ফেজ, এই ক্ষেত্রে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর পড়ুয়াদের রিপোর্ট কার্ড তৈরি হবে। এন্ট্রি ফেজ এই ক্ষেত্রে তৃতীয় থেকে ও পঞ্চম শ্রেণীর পড়ুয়াদের রিপোর্ট কার্ড তৈরি হবে এবং মিড ফেজ, এই ক্ষেত্রে ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণীর পড়ুয়াদের রিপোর্ট কার্ড তৈরি হবে। এছাড়াও ওই কার্ডে শিক্ষার্থীদের বাবা-মা, এবং তাদের সহপাঠীদের মতামত সহ শিক্ষার্থীদের নিজস্ব মতামত নিয়েও রিপোর্ট কার্ড তৈরি করা হবে।
- মূল্যায়নে আর কী কী থাকবে
মূল্যায়নে শিক্ষার্থী কতটা হোমওয়ার্ক করেছে, তাকে ক্লাসে কী শেখানো হচ্ছে, সেই সমস্ত বিষয়ে সে নিজে কতটা শিখছে, এমনকি বাড়িতে বসে সে কতক্ষণ পড়াশোনা করছে, এই সব দিকটা বিচার বিবেচনা করা হবে মূল্যায়নে। এমনকি এই ডিজিট্যাল যুগে সারা দিনে পড়ুয়া কতক্ষণ মোবাইল ফোন ঘাঁটছে, ওই স্ক্রিন টাইম তার কোনও ক্ষতি করছে কিনা, এছাড়াও এই সমস্ত দিকে পড়ুয়ার পিতা মাতার কতটা দায়িত্ববোধ রয়েছে, সবটাই রিপোর্ট কার্ডে তোলা হবে।
ইতিমধ্যেই এনসিইআরটি সমস্ত রাজ্যকে এইচপিসি অনুসারে নিজেদের রিপোর্ট কার্ডের প্যাটার্ন প্রস্তুত করার নির্দেশ দিয়েছে। ন্যাশনাল কারিকুলাম ফ্রেমওয়ার্ক ফর স্কুল এডুকেশন (NCFSE) এই মূল্যায়নকে আরও 'শিক্ষা-কেন্দ্রিক' করে তুলতে চায়। ন্যাশনাল এডুকেশন পলিসি (NEP) ২০২০ অনুযায়ী, HPC চালু করা হয়েছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্ম-সচেতনতা বাড়ানোর জন্য। এটি জীবনে উন্নতির ক্ষেত্রে তাদের সাহায্য করবে।