বিগত ২১ বছর কখনও ছুটি নেননি, প্রথম দিন থেকে ১৫ ঘন্টা কাজ করে গিয়েছেন এল এন্ড টি গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান এএম নায়েক। মানিকন্ট্রোলের সঙ্গে কথোপকথনের সময়ে ৮১ বছরের এই ব্যবসায়ী বলেন, ‘পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে আমি প্রতি তিন বছর অন্তর নিজেকে পরিবর্তন করেছি।’ নায়েক তার কলেজ জীবনের স্মৃতিচারণ করেন আজকের সময়ে এসে। কলেজে এক প্রফেসর তাকে বিদ্রূপ করত ক্লাসে উপস্থিত না থাকার জন্য। নায়েককে লক্ষ্য করে সেই প্রফেসর বলতেন, কেউ কেউ আছে যারা এসএসসিতে ভালো ফলাফল করেছে কিন্তু কলেজে আসে না। এসএসসিতে ভালো ফল করা মানেই কিন্তু কলেজেও ভালো ফল করা নয়।
এএম নায়েক স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করার পরে বহু ক্ষেত্রেই পরিবর্তিত আসে। এই সময়টিকে তিনি ‘ট্রানজিশন পিরিয়ড’ বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলে, ‘যেদিন আমি গেট থেকে বের হয়েছিলাম, আমি নিজেকে বলেছিলাম যে ছাত্র জীবন শেষ হল। এখন আমাকে কর্পোরেট জীবনে প্রবেশ করতে হবে। আমি একটা সময়ে প্রায় কলেজের ক্লাস করতাম না, আর তারপর কর্মজীবনে টানা ২১ বছর ধরে একদিনও ছুটি নিইনি। প্রতিদিন ১৫ ঘন্টা করে কাজ করেছি।’
কাজের জন্য তার ব্যাক্তিগত জীবনে ঝড়ঝাপটা কম আসেনি। দীর্ঘ সময় অফিস করে অনেক সময়ই শেষ বাসটিও পেতেন না নায়েক। তার স্ত্রী সারাদিন একা বাড়িতে থাকতেন, এমনকি কোনও কোনও দিন সারাদিনও বাড়ির বাইরে কাটাতে হয়েছে ৮১ বছরের অভিজ্ঞ ব্যবসায়ীকে। সেসব কথাও কয়েক মুহূর্তের জন্য তুলে ধরেন তিনি। অফিসের টেবিলেই শুয়ে রাত কাটানোর গল্প আজই জলজ্যান্ত মিস্টার নায়েকের মুখে।
নায়েকের প্রথম নিয়োগকারী মিস্টার বেকার এই সমস্যা সমাধানের উদ্দেশ্যে তার জন্য একটি স্কুটারের ব্যবস্থা করে দেন। এছাড়াও তিনি মিস্টার নায়েককে তাড়াতাড়ি একটি গাড়ি পাইয়ে দেওয়ার জন্য যথা সাধ্য চেষ্টা করেছিলেন। স্মৃতিচারণ কালে এমনই সব অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন তিনি। এই সকল কারণে কোম্পানির কাছে ঋণী বলে দাবু করেন নায়েক। তিনি আরও দাবি করেন, ‘আমি যে কাজে যুক্ত ছিলাম, তা আমি পছন্দ করতাম। আমি একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে চেয়েছিলাম, যা দেশ গঠনে সাহায্য করবে।’ প্রসঙ্গত নায়েক যিনি এল এন্ড টি-এর প্রাণ পুরুষ ছিলেন, তিনি আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর পদত্যাগ করতে চলেছেন তবে এল এন্ড টি-এর এমপ্লই ট্রাস্টের চেয়ারম্যান হিসেবে নিযুক্ত থাকবেন।