বর্তমানে ভারতের প্রবীণতম বিলিয়নেয়ার লছমনদাস মিত্তল। LIC এজেন্টের চাকরি থেকে অবসর শেষে নিজের ব্যবসা শুরু করেছিলেন তিনি। আর আজ তিনি কয়েক হাজার কোটি টাকার মালিক। তাঁর জীবনকাহিনীই প্রমাণ করে যে বয়স একটি সংখ্যামাত্র।
৯২ বছরের লছমনদাস মিত্তল সোনালিকা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান। অথচ, কেরিয়ারের শুরু থেকে কিন্তু সরাসরি ব্যবসার তেমন কোনও অভিজ্ঞতা ছিল না। এক সাধারণ, মধ্যবিত্ত বিমা কর্মী হিসাবে নিজের গোটা কর্মজীবন কাটিয়েছেন। অবসরের বয়স পর্যন্ত সেই কাজই করেছেন। তবে অবসরের পরেও 'অবসর' নেননি এই প্রবীণ যুবক। আরও পড়ুন: ব্যাগ বেচেই বিশ্বের ধনীতম বার্নার্ড আরনল্ট, গাড়ি-রকেটের কারবারি মাস্ক দু'নম্বরে
১৯৩১ সালে পঞ্জাবের হোশিয়ারপুরে জন্ম লছমনদাস মিত্তলের। সাদামাটা LIC এজেন্ট হলেও, তাঁর মনের মধ্যে বরাবরই ব্যবসায়ী হওয়ার সুপ্ত বাসনা ছিল। কিন্তু মধ্যবিত্ত পরিবারে যা হয়... দায়িত্ব, মূলধনের অভাব ইত্যাদি কারণে কখনই সব ছেড়ে ব্যবসায় ঝাঁপাতে পারেননি। তাঁর কথায়, 'একবার আমি মারুতি ইন্ডাস্ট্রিজের ডিলারশিপের জন্য আবেদন করেছিলাম। সেটা রিজেক্ট হয়ে গিয়েছিল। আর আজ আমিই লোককে নিজের কোম্পানির ডিলারশিপ দিচ্ছি।'
জীবন বিমা কর্পোরেশন (LIC) থেকে অবসরের প্রায় ৬ বছর পরে, ৬৫ বছর বয়সে লছমনদাস তাঁর ব্যবসা জীবন শুরু করেন।
LIC-তে এজেন্ট হিসাবে শুরু করলেও, নিষ্ঠার জেরে ক্রমেই পদোন্নতি করেছিলেন তিনি। ১৯৯০ সালে LIC-র ডেপুটি জোনাল ম্যানেজার হিসাবে অবসর নেন। চাকরি করতে করতে বেশ কিছু টাকাপয়সাও জমিয়ে ফেলেছিলেন। অবসরের প্রায় ৬ বছর পরে বুক ঠুতে তাই নেমেই পড়েন মাঠে। সোনালিকা গ্রুপের প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। কয়েক দশকের লড়াই শেষে আজ সেই সংস্থাই বাজারের শেয়ারের ভিত্তিতে ভারতের তৃতীয় বৃহত্তম ট্র্যাক্টর প্রস্তুতকারক।
সোনালিকা ট্র্যাক্টরসের এই সাফল্যের জেরেই আজ লছমনদাস মিত্তল ভারতের সবচেয়ে বয়স্ক ধনকুবের। তাঁর নেট ওয়ার্থ প্রায় ২.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
আপাতত সোনালিকা গ্রুপের প্রতিদিনের কাজকর্ম থেকে কিছুটা সরে দাঁড়িয়েছেন তিনি। এখন তাঁর ছেলে কোম্পানির কার্যক্রমের তদারকি করেন। বড় ছেলে অমৃত সাগর কোম্পানির ভাইস-চেয়ারম্যান। ছোট ছেলে দীপক ম্যানেজমেন্ট পরিচালক। মেজ ছেলে অবশ্য ব্যবসার সঙ্গে জড়িত নন। তিনি নিউ ইয়র্কে একজন চিকিত্সক হিসাবে কর্মরত।
মজার ব্যাপার হল, যে LIC-তে কাজ করতেন লছমনদাস, সেই LIC-তেই এখন উচ্চপদে রয়েছেন তাঁর মেয়ে উষা সাঙ্গাওয়ান। তিনি LIC-র প্রথম মহিলা MD। আরও পড়ুন: Thomas Lee: গুলি চালিয়ে আত্মহত্যা! মার্কিন কোটিপতি ফিনান্সার থমাস লি প্রয়াত, উঠছে বহু প্রশ্ন