মহম্মদ আমির ফিক্সিং করা সত্ত্বেও তাঁকে ক্রিকেটে ফেরার সুযোগ করে দিয়েছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড। কিন্তু দানিশ কানেরিয়া হাজার কাকুতি-মিনতি করা সত্ত্বেও তাঁকে ক্রিকেটে ফিরতে দিতে রাজি হচ্ছে না পিসিবি। দানিশ কানেরিয়া হিন্দু ধর্মাবলম্বী। পাকিস্তানে তিনি সংখ্যালঘু। সেই জন্যই কি তাঁকে এমন বিড়ম্বনা সহ্য করতে হচ্ছে? এমন অভিযোগ এনেছিলেন কানেরিয়া নিজেই।
দানিশ কানেরিয়া অনেক আগেই দাবি করেছিলেন, ক্রিকেট থেকে নির্বাসিত হওয়ার পর তাঁকে কোনও সাহায্য করা হয়নি। টুইট করে কানেরিয়া ক্ষোভ উগরে দিয়ে লিখেছিলেন, ‘এটা সত্যি যে নিষেধাজ্ঞার পরে এবং স্পট ফিক্সিং নিয়ে স্বীকারোক্তির পরে পাকিস্তান সরকার বা বোর্ডের কাছ থেকে আমি কোনও সমর্থন পাইনি। অন্যদিকে একই পরিস্থিতিতে অন্য খেলোয়াড়রা পিসিবি-র সমর্থন নিয়ে দেশের হয়ে খেলেন এবং সম্মানিত হন।’
কানেরিয়া ক্রিকেট কোচিং করাতে চান। কিন্তু তাঁর আজীবন নির্বাসনের শাস্তি বহাল রয়েছে। কিছুতেই কানেরিয়াকে ক্রিকেটে ফেরাতে সাহায্য করছে না পাক ক্রিকেট বোর্ড। অগত্যা পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের থেকে কোনও রকম সাহায্য না পেয়ে, এবার কানেরিয়া দ্বারস্থ হয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বিসিসিআই-এর। নিজের নির্বাসন তোলার জন্য সাহায্য চেয়েছেন ভারতের কাছে।
পিসিবি কানেরিয়াকে জানিয়েছিল, নির্বাসনের শাস্তি কমাতে হলে ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডের দ্বারস্থ হতে হবে তাঁকে। এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে, পিসিবি তাঁকে ইসিবির দরজায় কড়া নাড়ার পরামর্শ দিয়েছিল। পিসিবি জানিয়েছিল, ইসিবির দুর্নীতিবিরোধী আইনের ৬.৮ অনুচ্ছেদে স্পষ্ট লেখা রয়েছে, দুর্নীতিগ্রস্থ কোনও ক্রিকেটারের শাস্তি কমানোর অধিকার একমাত্র তাদেরই রয়েছে, যারা তাঁকে নির্বাসনে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। প্রসঙ্গত, স্পট-ফিক্সিংয়ের জন্য ২০১২ সালে ইসিবি (ইংল্যান্ড এবং ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড) তাঁকে আজীবন নির্বাসিত করে।
আজতককে কানেরিয়া সম্প্রতি বলেছেন, ‘আমি ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং বিসিসিআই-এর কর্তাদের কাছে আবেদন করতে চাই যে, ইসিবি আমাকে যে নির্বাসনের শাস্তি দিয়েছে, সেটা অপসারণের জন্য তাঁরা যেন আমাকে সাহায্য করেন।’
এর আগেও ২০১৬ সালে একবার তিনি বিসিসিআই-এর দ্বারস্থ হয়েছিলেন বলে একটি প্রতিবেদন লেখা হয়েছিল। কিন্তু সেই সময়ে বিষয়টি অস্বীকার করে কানেরিয়া বলেছিলেন, ‘এই প্রতিবেদনটি বিভ্রান্তিকর। আমি একজন ভারতীয় প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলেছিলাম। কিন্তু আমার কথার ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে এবং আমার মামলার নতুন পর্যালোচনার জন্য বিসিসিআই-এর কাছ থেকে কোনও সাহায্য চাওয়ার ইচ্ছা আমার নেই।’
সঙ্গে তিনি যোগ করেছিলেন, ‘হ্যাঁ আমি খুবই হতাশ, আহত। তবে আমি একজন গর্বিত পাকিস্তানি। আমি শুধু জানতে চাই যে, আমাকে আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ করার আসল প্রমাণ কী আছে এবং কেন পাকিস্তান বোর্ড আমার মামলাকে একপাশে রেখে দিয়েছে।’ যাইহোক কানেরিয়া নিজের নির্বাসন তোলা নিয়ে, আরও একবার ভারতের শরণাপন্ন হয়েছে। তবে চাপে পড়ে ফের ভোল বদলাবেন কিনা, সে কথা সময়ই বলবে।