কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সুনীল গাভাসকর পুরো পাল্টি খেলেন। যে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে তীব্র সমালোচনায় ভরিয়ে দিয়েছিলেন, কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ফের নিজের বক্তব্য পাল্টাতে বাধ্য হলেন ভারতের কিংবদন্তি তারকা। দিল্লিতে অস্ট্রেলিয়া বনাম নেদারল্যান্ডস ম্যাচ শুরুর কয়েক মিনিট আগে গাভাসকর স্টার স্পোর্টসের একটি প্রাক-ম্যাচ শোতে টুর্নামেন্টে তাঁর খারাপ ফর্মের জন্য ম্যাক্সওয়েলের তীব্র সমালোচনা করেছিলেন। গাভাসকর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ম্যাক্সওয়েলের শট নির্বাচন নিয়ে বিশেষ ভাবে সমালোচনা করেছিলেন। শাহিন শাহ আফ্রিদির বিরুদ্ধে ওয়াইল্ড স্লগ করার চেষ্টা করার পরে অস্ট্রেলিয়ার অলরাউন্ডার গোল্ডেন ডাকে আউট হয়ে গিয়েছিলেন।
গাভাসকর বলেছিলেন, ‘এটা ইগোর বিষয়। আমার মনে হয়, আরসিবি-তে ও খুব খুশিতে ছিল, যখন ও তিন নম্বরে ব্যাট করতে নামত। ও নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করত। কারণ ও সব ম্যাচেই অবদান রাখার সুযোগ পেত। এখানে ও পাঁচ, ছয় এবং সাতে নামছে। ক্রিকেটে কেয়ারলেস এবং কেয়ারফ্রি- এই দু'টি বিষয়ের মধ্যে একটা সূক্ষ্ম লাইন রয়েছে। তিনি (এই বিশ্বকাপে) বেশি কেয়ারলেস হয়ে পড়েছেন। পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম বলে আউট হওয়াটা কী ধরনের শট ছিল? তাই ও কেয়ারলেস, কেয়ার ফ্রি নয়।’
গাভাসকরের এমন তীব্র সমালোচনা আদৌ ম্যাক্সওয়েলের কান পর্যন্ত হয়তো ম্যাচের আগে পৌঁছয়ওনি, তবে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ম্যাক্সি ঝড়ের পর ডিগবাজি খেতে বাধ্য হয়েছেন গাভাসকর। বুধবার ৬ নম্বরে ব্যাট করতে নেমে ডানহাতি তারকা ঝোড়ো মেজাজে ৪০ বলে নিজের সেঞ্চুরি পূরণ করেন। এটি ওডিআই বিশ্বকাপের ইতিহাসে দ্রুততম সেঞ্চুরি তো বটেই, ওয়ানডে-তে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটারদের মধ্যেও দ্রুততম সেঞ্চুরি এটি। ওডিআই-এর শেষ দশ ওভারে ১০০-এর বেশি রান করা প্রথম অজি ব্যাটার ম্যাক্সওয়েলই।
আরও পড়ুন: আফগানদের কাছে হারের পর কেঁদেছে বাবর- ড্রেসিংরুমের তথ্য ফাঁস পাক প্রাক্তনীর
ম্যাক্সওয়েলের ব্যাটিং এতটাই ভালো ছিল যে, গাভাসকর তাঁর ব্যাটিং সম্পর্কে ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে প্রশংসা করতে বাধ্য হন। ম্যাচের পরে ম্যাক্সওয়েলের সুইচ হিট এবং রিভার্স সুইপের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন গাভাসকর। স্টার স্পোর্টস-এর ম্যাচ-পরবর্তী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘এটি ক্রিকেটের অন্যতম সেরা শট। এটি একটি আশ্চর্যজনক শট। এই শটে ছক্কা হয়েছে ঠিকই, আসলে এই শটের জন্য ওর ১২ রান পাওয়া উচিত। এটি একটি অবিশ্বাস্য শট। হ্যাঁ, দু'টি ছক্কার পর, বোলিং কিছুটা বিপর্যস্ত হয়েছিল। বুঝতে পারছিল না, কোথায় বল করতে হবে। নেদারল্যান্ডস ধীরগতিতে বল করার চেষ্টা করেছিল, মিডরিফের চারপাশে বোলিং করার চেষ্টা করেছিল। এটি অবিশ্বাস্য ব্যাটিং ছিল। আমি রানের খাতা খুলতে ৪০ বল নিয়েছিলাম, আর ও ৪০ বলে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছে।’ প্রসঙ্গত, ১৯৭৫ বিশ্বকাপে গাভাসকর ১৭৪ বলে ৩৬ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। আর সেই ইনিংস নিয়ে আজও তীব্র আলোচনা চলে।