শুভব্রত মুখার্জি: মঙ্গলবার আইপিএলের মিনি নিলামে জোরদার টাকার লড়াইয়ের সাক্ষী থেকেছে ক্রিকেট বিশ্ব। সানরাইজার্স হায়দরাবাদ দল ২০.৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রথমে অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিন্সকে তাদের দলে নেয়। যা আইপিএলের ইতিহাসে রেকর্ডমূল্যের অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে নয়া নজির গড়ে। এই ঘটনার রেশ কাটার আগেই, ফের অর্থের 'ক্ষেপনাস্ত্র' প্রয়োগ করে কলকাতা নাইট রাইডার্স দল। ২৪.৭৫ কোটি টাকা ব্যয়ে তারা দলে নেয় প্যাট কামিন্সের সতীর্থ মিচেল স্টার্ককে। দুই ঘন্টার মধ্যে হায়দরাবাদের গড়া রেকর্ড ভেঙে দেয় কলকাতা। আর এই ঘটনায় বেশ আশঙ্কা, উদ্বেগের সুর শোনা গিয়েছে ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেটার দীনেশ কার্তিকের গলাতে। তাঁর বক্তব্য নিলামের 'লুপহোল' অর্থাৎ ফাঁক ফোকরকে ব্যবহার করে ফায়দা লুটছে বিদেশি ক্রিকেটাররা। কী ভাবে এই জিনিসকে বন্ধ করা যায়, তার বেশ কিছু উপায়ও তিনি বাতলে দিয়েছেন বিসিসিআই-কে।
ক্রিকবাজের তরফে পোস্ট করা এক ভিডিয়োতে দীনেশ কার্তিককে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘ক্রিকেটাররা সরাসরি মিনি নিলামে অংশ নিক এই বিষয়টার আমি একেবারেই ফ্যান না। আমি মনে করি বিদেশি ক্রিকেটাররা এবং তাদের এজেন্টরা এই বিষয়টিকে বেশ চালাকির সঙ্গে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করছেন। আমি মনে করি, বিসিসিআই এই সমস্যার সমাধান করতে পারে। আমি এই বিষয়টির কয়েকটি সমাধান আমি ক্রিকবাজে আমার সাম্প্রতিকতম ভিডিয়োতে দিয়েছি।’
আরও পড়ুন: এত টাকা দিয়ে মিচেল স্টার্ককে কেন দলে নিল KKR? যুক্তি দিয়ে ব্যাখ্যা করলেন গম্ভীর
মিনি নিলামে কোটি কোটি টাকা দিয়ে বিদেশি ক্রিকেটারদের কেনা প্রসঙ্গে কার্তিক বলেছেন, ‘মেগা নিলাম তিন বছরে একবার হয়। অনেক বিদেশি ক্রিকেটার রয়েছে, যারা মেগা নিলামে অংশ না নিয়ে মিনি নিলামে অংশ নেয়। কারণ তারা জানে, মিনি নিলামে দলগুলোর নির্দিষ্ট স্লট ফাঁকা থাকে। ওই স্লট পূরণ করতে দলগুলো অল আউট ঝাঁপাবে, সেটা তারা ভালো ভাবেই জানে। আর সেখানেই তাদের অতিরিক্ত টাকা কামিয়ে নেওয়ার রাস্তা থাকে। এটার সুযোগ তারা নেয়। এই বিষয়টি নিয়ে বিসিসিআই দু'টি পদক্ষেপ নিতে পারে। এক) মেগা নিলামে যদি ওই ক্রিকেটার অংশ নিয়ে থাকে এবং পরবর্তীতে সে মিনি নিলামেও অংশ নেয়, তাহলে সেখানে মেগা নিলামে তাঁর যে সর্বোচ্চ দর উঠেছিল মিনি নিলামেও সেই দামটাই সর্বোচ্চ দেওয়া যেতে পারে। আর দুই) যদি ওই ক্রিকেটার মেগা নিলামে অংশ না নিয়ে মিনি নিলামে অংশ নেন, তাহলে যে দল তাঁকে নিচ্ছে সেই দলের সর্বোচ্চ দাম দিয়ে রিটেন করা ক্রিকেটারের দামটাই ওই ক্রিকেটারকে দেওয়া হবে। নিলামে বেশি দাম উঠলেও, ওই রিটেনড ক্রিকেটারের সর্বোচ্চ দামের সঙ্গে যে দামের পার্থক্য হবে সেই অর্থ বিসিসিআইকে জমা দিতে হবে। অর্থাৎ সর্বোচ্চ দামের একটা ক্যাপ দেওয়া। না হলে দেখুন মুম্বই ইন্ডিয়ান্স দল জসপ্রীত বুমরাহকে রিটেন করেছে ১১ কোটি টাকায়। অথচ এই মিনি নিলামে অনেক অনামী, অখ্যাত বোলারও তাঁর থেকে বেশি অর্থ পেয়ে গিয়েছে এই নিলামে। এতে অনেক সময় ওই রিটেনড হওয়া ক্রিকেটারের মধ্যে হতাশা আসতে পারে। বিসিসিআই এই দু'টি উপদেশ আশা করি গুরুত্ব দিয়ে দেখলে এই সমস্যার সমাধান হতে পারে।’