লো স্কোরিং রঞ্জি ম্যাচ এমন রূদ্ধশ্বাস রূপ নিতে পারে, মধ্যপ্রদেশ বনাম অন্ধ্রপ্রদেশের কোয়ার্টার ফাইনাল না দেখলে বোঝা যেত না। তৃতীয় দিনের শেষে ম্যাচ যে পর্যায়ে দাঁড়িয়েছিল, তাতে অন্ধ্রপ্রদেশ অনায়াসে জয় তুলে নেবে বলে মনে হচ্ছিল। কেননা শেষ দু'দিনে জয়ের জন্য তাদের দরকার ছিল মোটে ৫৯ রান। ৪৩ রান করে ক্রিজে অপরাজিত ছিলেন হনুমা বিহারীর মতো অভিজ্ঞ ব্যাটার।
তবে চতুর্থ দিনের সকালে মধ্যপ্রদেশের ডানহাতি পেসার অনুভব আগরওয়াল পরপর উইকেট তুলে ম্যাচ রুদ্ধশ্বাস করে তোলেন। জয়ের জন্য ১৭০ রানের লক্ষ্যমাত্রা সামনে নিয়ে শেষ ইনিংসে ব্যাট করতে নামা অন্ধ্র একসময় ৪ উইকেটে ১১২ রান তুলে ফেলে। তবে সেখান থেকে হঠাৎ করে তাদের স্কোর হয়ে যায় ৮ উইকেট ১২৯। অর্থাৎ, তখনও জয় থেকে ৪১ রান দূরে দাঁড়িয়ে ছিল অন্ধ্র।
ব্যক্তিগত হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করে সাজঘরে ফেরেন হনুমা। তিনি ৫টি বাউন্ডারির সাহায্যে ১৩৬ বলে ৫৫ রান করে মাঠ ছাড়েন। অভিজ্ঞ হনুমা আউট হওয়ার পরে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যায় অন্ধ্রর। তবে ১০ নম্বর ব্যাটার গিরিনাথ রেড্ডিকে সঙ্গে নিয়ে দলকে জয়ের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেন সাত নম্বরে ব্যাট করতে নামা অশ্বিন হেব্বার।
যদিও তীরে এসে তরী ডোবে তাদের। জয় থেকে মাত্র ৫ রান দূরে দাঁড়িয়ে যেতে হয় অন্ধ্রপ্রদেশকে। টান টান ম্যাচে অন্ধ্রপ্রদেশকে ৪ রানের সংক্ষিপ্ত ব্যবধানে হারিয়ে চলতি রঞ্জি ট্রফির সেমিফাইনালে ওঠে মধ্যপ্রদেশ।
রাঁচির ভারত বনাম ইংল্যান্ড চতুর্থ টেস্টের চতুর্থ দিনের খেলার লাইভ আপডেটে চোখ রাখতে ক্লিক করুন এখানে
ইন্দোরে টস জিতে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে মধ্যপ্রদেশ তাদের প্রথম ইনিংসে ২৩৪ রান তোলে। যশ দুবে ৬৪, হিমাংশু মন্ত্রী ৪৯ ও সরাংশ জৈন ৪১ রান করেন। বেঙ্কটেশ আইয়ার ১ রান করে মাঠ ছাড়েন। অন্ধ্রর কেভি শশীকান্ত ৪টি ও নীতীশ রেড্ডি ৩টি উইকেট নেন।
পালটা ব্যাট করতে নেমে অন্ধ্রপ্রদেশ তাদের প্রথম ইনিংসে অল-আউট হয় ১৭২ রানে। করণ শিন্ডে ৩৮ ও রিকি ভুই ৩২ রান করেন। হনুমা বিহারী ১৪ রানের যোগদান রাখেন। মধ্যপ্রদেশের অনুভব আগরওয়াল ও কুমার কার্তিকেয়া ৩টি করে উইকেট দখল করেন। ২টি করে উইকেট নেন আবেশ খান ও কুলবন্ত খেজরোলিয়া।
প্রথম ইনিংসের নিরিখে ৬২ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় দফায় ব্যাট করতে নামে মধ্যপ্রদেশ। তবে তারা দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ১০৭ রানে অল-আউট হয়ে যায়। ৪৩ রান করেন হিমাংশু মন্ত্রী। বেঙ্কটেশ আইয়ার ১৭ রান করে মাঠ ছাড়েন। নীতীশ রেড্ডি ৪টি এবং ললিত মোহন ও কেভি শশীকান্ত ৩টি করে উইকেট দখল করেন।
শেষ ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে অন্ধ্রপ্রদেশ ১৬৫ রানে অল-আউট হয়ে যায়। বিহারীর হাফ-সেঞ্চুরি ছাড়া শেষ ইনিংসে অন্ধ্রর হয়ে নীতীশ রেড্ডি ২০ ও অশ্বিন হেব্বার ২২ রান করেন। ৫২ রানে ৬টি উইকেট নেন অনুভব আগরওয়াল। ২টি উইকেট নেন কুলবন্ত খেজরোলিয়া। ১টি করে উইকেট দখল করেন সরাংশ জৈন ও কুমার কার্তিকেয়া। দুই ইনিংস মিলিয়ে ৯টি উইকেট নিয়ে ম্যাচের সেরা হন অনুভব আগরওয়াল।