জেতা ম্যাচ হাত থেকে বের করে নিয়ে গেলেন জস বাটলার। মঙ্গলবার ইডেনে শেষ বলের থ্রিলারে ২২৩ রান করার পরেও, ম্যাচ হেরে বসে থাকে কলকাতা নাইট রাইডার্স। বাটলার ৬০ বলে ১০৭ রান করে একা দায়িত্ব নিয়ে ২ উইকেটে ম্যাচ জেতান রাজস্থান রয়্যালসকে। আর ম্যাচ হেরে রীতিমতো হতাশ কেকেআর অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ার। তিনি এই হারের সঙ্গে, তেতো ওষুধ গলধকরণ করার উদাহরণ টেনেছেন।
শ্রেয়স আইয়ার ম্যাচ-পরবর্তী উপস্থাপনায় সম্প্রচারকারীদের সঙ্গে কথা বলার সময়ে, বাটলারের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন। সেই সঙ্গে ঘুরিয়ে কেকেআর বোলারদের দুষেছেন তিনি।
‘তেতো বড়ি গলধকরণ করার মতোই বিষয়’
তিনি বলেছেন, ‘তেতো বড়ি গলধকরণ করার মতোই বিষয়। আমি ভাবিনি যে, আমরা এই পরিস্থিতির মধ্যে পড়ব। এটা সত্যিই মজার খেলা। রোভম্যানও ভালো ভাবে স্ট্রাইক করছিল। কী ঘটেছে, তা ব্যাখ্যা করা কঠিন। তবে এটি মেনে নিতে হবে। এই মুহুর্তে আমাদের বুঝতে হবে কঠিন পরিস্থিতিতে ঠিক কোথায় বল করতে হবে। সেটা এই ম্যাচে করতে পারিনি। এই মাঠে বল করা সহজও ছিল না।’
‘নারিন দলের সম্পদ’
কেকেআর অধিনায়ক সুনীল নারিনকে ফ্র্যাঞ্চাইজির বড় সম্পদ বলে অভিহিত করেছেন। পাশাপাশি উল্লেখ করেছেন যে, তাঁর দল এই হারের আত্মবিশ্লেষণ করবে। এবং ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে এগিয়ে যাবে।
আরও পড়ুন: অর্ধেক প্লেয়ার ইংরেজিই বোঝে না- RCB-র ব্যর্থতার গুরুতর দিকটি তুলে ধরলেন সেহওয়াগ
নারিন এদিন রাজস্থানের বিরুদ্ধে তাঁর প্রথম আইপিএল সেঞ্চুরি করেন। যার সুবাদে কেকেআর প্রথমে ব্যাট করে ৬ উইকেটে ২২৩ রান করেছিল। কিন্তু নারিনের এই লড়াই শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়ে যায়। শ্রেয়স বলেছেন, ‘আত্মবিশ্লেষণ করতে হবে এবং এই হার থেকে শিক্ষা নিয়ে আরও শক্তিশালী হয়ে ফিরে আসতে হবে। তবে নারিন এই দলের জন্য একটি বড় সম্পদ। যখন ও সুযোগ পায়, তখন সেটাই কাজে লাগায়। আমি খুশি যে, ও আমাদের দলের সদস্য।’
শেষ ওভারে কেন বরুণ এলেন বল করতে?
বরুণ চক্রবর্তীকে শেষ ওভারে বল করতে এনেছিলেন শ্রেয়স। রাজস্থানের জয়ের জন্য শেষ ৬ বলে ৯ রান দরকার ছিল। আর বরুণ বল করতে এলে, তাঁকে প্রথম বলেই ছক্কা হাঁকান বাটলার। এখানেই ম্যাচ হেরে বসে কেকেআর।
বরুণকে শেষ ওভারে বল করানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে শকেকেআর অধিনায়ক বলেন, ‘যেহেতু বাটলার খুব ভালো শট খেলছিল, আমি ভেবেছিলাম, বলের গতিটা কমলে যদি কিছু হয়, তাই বন্ধ করে বরুণ চক্রবর্তীকে এনেছিলাম। কিন্তু বাটলারকে আটকানো সহজ ছিল না। ও নিজের মতো মেরে গিয়েছে। তবে এই হার থেকে শিক্ষা নিয়ে এটাকে পিছনে ফেলে এগিয়ে যেতে হবে। ২-৩ দিনের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ রয়েছে। সেই ম্যাচে শক্তিশালী হয়ে ফিরে আসতে হবে।’
রেকর্ড জয় রাজস্থানের
কেকেআর এদিন প্রথমে ব্যাট করে ২২৩ রান করে। ২২৪ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে রাজস্থানের ১৩তম ওভার শেষে সংগ্রহ ছিল ৬ উইকেটে ১২৫ রান। সেখান থেকে বাটলার দায়িত্ব নিয়ে ম্যাচের রং বদলে দেন। শেষ পর্যন্ত ৮ উইকেট হারিয়ে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় রাজস্থান। এটি আইপিএলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের নজির।
আর এই জয়ের সুবাদে চার বছর আগে শারজায় যে নজির গড়েছিল রাজস্থান, সেই নজির স্পর্শ করে ফেলল তারা। ২০২০ সালের আইপিএলে প্রথমে ব্যাটিং করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ২ উইকেটে ২২৩ রান তুলেছিল কিংস ইলেভন পঞ্জাব (বর্তমানে পঞ্জাব কিংস)। তিন বল বাকি থাকতেই ছয় উইকেটে ২২৬ রান তুলে ম্যাচ জিতে গিয়েছিল আরআর ব্রিগেড।