মঙ্গলবার ইডেনে কলকাতা নাইট রাইডার্স বনাম রাজস্থান রয়্যালস ম্যাচের দুই ইনিংসেই ঝড় উঠেছিল। প্রথম বার ঝড় তুলেছিলেন কেকেআর-এর সুনীল নারিন। আর দ্বিতীয় বার ঝড় ওঠে রাজস্থানের জস বাটলারের ব্যাটে। এবং সেই ঝড়ে পর্যুদস্ত হয় নাইটরা। বাটলারের সৌজন্যে রাজস্থান রয়্যালস এদিন ঐতিহাসিক জয় ছিনিয়ে নেয়। মঙ্গলবার সুনীল নারিনের বিধ্বংসী সেঞ্চুরিকে ব্যর্থ করে, কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিরুদ্ধে আইপিএলে রেকর্ড রান তাড়া করে জয় পায় রাজস্থান।
জস বাটলার এদিন ৬০ বলে অপরাজিত ১০৭ রান করে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন। ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন তিনি। আর ম্যাচের পর তিনি দাবি করেন, বিরাট কোহলি, এমএস ধোনিদের শেষ পর্যন্ত টিকে থেকে লড়াই করার মানসিকতাতেই তিনি অনুপ্রাণিত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: কমলা টুপির লড়াইয়ে বড় লাফ নারিনের, প্রথমে দশে ঢুকলেন বাটলারও, পার্পল ক্যাপ থাকল যুজিরই
‘নিজের প্রতি বিশ্বাস রাখাটাই এই সাফল্যের চাবিকাঠি’
ম্যাচ পরবর্তী উপস্থাপনায় বাটলার বলেন, ‘নিজের প্রতি বিশ্বাস রাখা, এটাই ছিল এটাই ছিল এই রাতের সাফল্যের আসল চাবিকাঠি। আমি নিজের ছন্দ ফিরে পেতে একটু লড়াই করছিলাম। মাঝে মাঝে হতাশাও আসছিল। তখন নিজেকে প্রশ্ন করেছি। আমি নিজেকে বলেছি, এটা হতেই পারে। লড়াই চালিয়ে যেতে হবে, তবে ছন্দ ফিরে পাওয়া সম্ভব। তবে নিজেকে শান্ত থাকতে হবে। এমনটা পুরো আইপিএল জুড়ে বহু বার হয়েছে। অনেক সময়ে অনেক কিছুই ঘটতে দেখা যায়। তবে নিজেকে শান্ত থাকতে হবে।’
আরও পড়ুন: অর্ধেক প্লেয়ার ইংরেজিই বোঝে না- RCB-র ব্যর্থতার গুরুতর দিকটি তুলে ধরলেন সেহওয়াগ
ধোনি-কোহলি যখন অনুপ্রেরণা
সঙ্গে তিনি আরও যোগ করেছেন, ‘ধোনি এবং কোহলির মতো প্লেয়াররা যে ভাবে শেষ পর্যন্ত লড়াই করে এবং নিজেদের প্রতি বিশ্বাস রাখে, আমিও তাই করার চেষ্টা করেছি। এই নিয়ে সাঙ্গাকরা আমাকে অনেক বুঝিয়েছে- সবার ক্যারিয়ারে এমন একটা সময় আসে, যখন হতাশা গ্রাস করে। কিন্তু সবচেয়ে খারাপ বিষয় হবে, যখন তুমি অনুভব করবে যে, লড়াইটা আর করতে পারছো না। এই বিষয়টি নিজের উপর চেপে বসলেই, অকারণে উইকেট হারাতে হবে।’
সাঙ্গাকরার পরামর্শ
এখানেই না থেমে বাটলার আরও বলেছেন, ‘সাঙ্গাকরা আমাকে বলে যে, তুমি মাঠে থাকো, গতি পরিবর্তন করো। দেখবে ছন্দ খুঁজে পাবে। একটি দুর্দান্ত শটই হয়তো গতি ফিরিয়ে দেবে। গত কয়েক বছরে এটা আমার খেলায় সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে উঠেছে। আমি আর হতাশা আসতে দিই না। আমরা যে ভাবে এত বড় রান তাড়া করতে পেরেছি, সেটা বেশ সন্তোষজনক।’
রেকর্ড জয় রাজস্থানের
কেকেআর এদিন প্রথমে ব্যাট করে ২২৩ রান করে। ২২৪ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে রাজস্থানের ১৩তম ওভার শেষে সংগ্রহ ছিল ৬ উইকেটে ১২৫ রান। সেখান থেকে বাটলার দায়িত্ব নিয়ে ম্যাচের রং বদলে দেন। শেষ পর্যন্ত ৮ উইকেট হারিয়ে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় রাজস্থান। এটি আইপিএলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের নজির।
আর এই জয়ের সুবাদে চার বছর আগে শারজায় যে নজির গড়েছিল রাজস্থান, সেই নজির স্পর্শ করে ফেলল তারা। ২০২০ সালের আইপিএলে প্রথমে ব্যাটিং করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ২ উইকেটে ২২৩ রান তুলেছিল কিংস ইলেভন পঞ্জাব (বর্তমানে পঞ্জাব কিংস)। তিন বল বাকি থাকতেই ছয় উইকেটে ২২৬ রান তুলে ম্যাচ জিতে গিয়েছিল আরআর ব্রিগেড।