শুভব্রত মুখার্জি: ভারতীয় ক্রিকেটে স্পিন বোলারের সেই ভাবে অভাব নেই বললেই বলা চলে। এমনিতেই ঘরোয়া ক্রিকেটের উইকেট সাধারণত স্পিন সহায়ক হওয়ার ফলে একাধিক তারকা স্পিনার উঠে এসেছেন ভারতের হয়ে বছরের পর বছর ২২ গজ কাঁপিয়েছেন। তবে এদের মধ্যে বেশির ভাগই ডানহাতি স্পিনার। এই মুহূর্তে ভারতীয় টেস্ট দলের হয়ে বাঁ-হাতি স্পিনার হিসেবে নিয়মিত খেলার সুযোগ পান অলরাউন্ডার রবীন্দ্র জাদেজা। এছাড়াও ভারতের মাটিতে টেস্ট খেলা হলে, প্রথম একাদশে নিয়মিত খেলতে দেখা যায় কুলদীপ যাদবকে। তবে এই দুই স্পিনারের পরবর্তীতে এমন কোনও উল্লেখযোগ্য বাঁহাতি স্পিনার কি আদৌও আছেন, যিনি জাতীয় দলের হয়ে খেলার যোগ্য? এই প্রশ্ন যখন বিভিন্ন মহলে ঘোরাফেরা করা শুরু করেছে, তখনই ঘরোয়া ক্রিকেটের এক বাঁহাতি স্পিনারের পক্ষে ব্যাট ধরলেন ভারতীয় দলের হয়ে একটা সময়ে টেস্ট ফর্ম্যাটে নিয়মিত খেলা অলরাউন্ডার মুম্বইয়ের শার্দুল ঠাকুর। তাঁর মতে, এই বাঁ-হাতি স্পিনারের রবীন্দ্র জাদেজার মতন কোয়ালিটি স্পিনার এবং ভবিষ্যতে ভারতের হয়ে তাঁর খেলার সম্ভাবনা উজ্জ্বল।
আরও পড়ুন: শ্রেয়স কিন্তু রঞ্জি খেলতে অস্বীকার করেননি- তারকা ব্যাটারের পাশে দাঁড়ালেন গাভাসকর
বর্তমানে রঞ্জি সেমিফাইনালে মুম্বই দল মুখোমুখি হয়েছে তামিলনাড়ুর। এই ম্যাচেই তামিলনাড়ুর অধিনায়কত্ব করছেন বাঁ-হাতি স্পিনার রবিশ্রীনিবাসন সাই কিশোর। আর এই বাঁ-হাতি স্পিনারের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন শার্দুল ঠাকুর। তাঁর মতে, তামিলনাড়ুর অধিনায়ক সাই কিশোর একজন অত্যন্ত দক্ষ বাঁ-হাতি স্পিনার। রবীন্দ্র জাদেজার পরবর্তীতে জাতীয় দলের হয়েও সাই কিশোরকে খেলতে দেখা যেতে পারে বলেই তাঁর মত। প্রসঙ্গত বিকেসি গ্রাউন্ডে রঞ্জি সেমিফাইনালে দ্বিতীয় দিনের শেষে অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে মুম্বই দল। তবে একটা সময়ে বেশ চাপে পড়ে গিয়েছিল তারা। তামিলনাড়ুর রান তাড়া করতে গিয়ে একটা সময়ে তাদের স্কোর ছিল ১০৬/৭। তারকা ব্যাটাররা সবাই ব্যাট হাতে ব্যর্থ হন। পৃথ্বী শ ( ৫), অজিঙ্কা রাহানে (১৯), শ্রেয়স আইয়ার (৩) ব্যাট হাতে ব্যর্থ হন। তার পর দলের হাল ধরেন শার্দুল ঠাকুর। তিনি প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে নিজের ক্যারিয়ারের প্রথম শতরানটি তুলে নেন এদিন। তাঁর ইনিংসে ভর করেই দিনের শেষে মুম্বইয়ের স্কোর ৯ উইকেটে ৩৫৩। আর এই ইনিংস খেলার পরেই তামিলনাড়ুর অধিনায়কের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন শার্দুল ঠাকুর।
আরও পড়ুন: উমেশ, যশের দাপটকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে মন্ত্রীর শতরান, ৮২ রানের লিড পেল পণ্ডিতের দল
স্পোর্টসস্টারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ঠাকুর বলেছেন, ‘ও (সাই কিশোর) খুব ভালো বোলিং করছিল। দীর্ঘ দিন বাদে আমি এমন একজনকে খুঁজে পেলাম, যে জাড্ডুর পরে একজন কোয়ালিটি বাঁ-হাতি স্পিনার হিসেবে উঠে আসছে।’ তামিলনাড়ুর অধিনায়ক এদিন বল হাতে দুরন্ত পারফরম্যান্স করেছেন। মাত্র ৯৭ রান দিয়ে তিনি নিয়েছেন ছ'টি উইকেট। আর এই পারফরম্যান্সের পরে নজিরও গড়ে ফেলেছেন তিনি। প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে তাঁর রাজ্য থেকে তৃতীয় বোলার হিসেবে তিনি এক মরশুমে ৫০ বা তার বেশি উইকেট নেওয়ার নজির গড়েছেন। এর আগে ১৯৭২-৭৩ সালে এস বেঙ্কটারাঘবন এবং ১৯৯৯-২০০০ সালে আশিষ কাপুর এই নজির গড়েছিলেন। সাই কিশোরের ঝুলিতে এই মরশুমে রয়েছে ৫৩টি উইকেট।