ঝুলন গোস্বামীর পর মেয়েদের ভারতীয় দলে ফের ফুল ফোটাচ্ছেন বাংলার আর এক জোরে বোলার তিতাস সাধু। জাতীয় দলের জার্সিতে এখনও পর্যন্ত মাত্র পাঁচটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন তিতাস। তাতে কী! এখনই জাত চিনিয়েছেন বাংলার তরুণী।
শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) মুম্বইয়ের ডিওয়াই পাটিল স্পোর্টস অ্যাকাডেমিতে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে মহিলাদের প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে নয় উইকেটে বড় জয় পায় ভারত। আর এই জয়ের পিছনে আসল কারিগর বাংলার তনয়া। ১৯ বছর বয়সী তিতাস সাধু এদিন চার ওভারে ১৭ রান দিয়ে ৪ উইকেট তুলে নেন। ম্যাচের সেরাও হন তিনি।
ম্যাচ শেষে স্মৃতি মন্ধনার সঙ্গে একটি সাক্ষাৎকার পর্বে অংশ নিয়েছিলেন তিতাস। সেখানেই তিতাসকে প্রশ্ন করেন স্মৃতি, ম্যাচের সেরার পুরস্কার পেয়ে কেমন লাগছে? জবাবে তিতাস বলেন, ‘উইকেট পাটা ছিল। বল করা খুব সহজ ছিল না। কিন্তু ভালো ভাবে ম্যাচ শেষ করতে পেরেছি। এর আগের ৪টে ম্যাচ বেঞ্চে বসে কাটাতে হয়েছে। একটা টেস্ট এবং তিনটে ওডিআই। সেটাই মনে হয় আমাকে তাতিয়েছে।’
এর পরেই স্মৃতি বলেন, ঝুলনকে ভিডিয়ো কল করতে। স্মৃতির কথা মতো তিতাস তাঁর প্রিয় ঝুলুদিকে ফোনে ধরেন। এর মাঝেই জাতীয় দলে তিতাসের সতীর্থরা তাঁর সামনে এসে বলতে থাকেন, ‘তিন লাখ কা পার্টি।’ আসলে ভারতীয় দলে এক নতুন রীতি চালু হয়েছে। যিনি ম্যাচের সেরার পুরস্কার পান, তাঁকে পার্টি দিতে হয়। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ম্যাচের সেরা যেহেতু তিতাস হয়েছেন, তাই তাঁকে পার্টি দেওয়ার কথা জানান তাঁর সতীর্থরা। তিনি জানান, পার্টি দেবেন।
আরও পড়ুন: বিদেশি ক্রিকেটাররা ভারতে এলে যেন আর অভিযোগ না করেন- পিচ নিয়ে কড়া দাওয়াই ইরফানের
যাইহোক ঝুলনের সঙ্গে কথা বলে উচ্ছ্বসিত হন তিতাসও। পেয়ে যান ঝুলনের গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ। বাংলার মেয়ের পারফরম্যান্সে উচ্ছ্বসিত ছিলেন ঝুলন গোস্বামী নিজেও। তিতাসের পারফরম্যান্স নিয়ে তিনি বলেন, ‘আজ ওর বোলিং বেশ উপভোগ করেছি। কট অ্যান্ড বোল্ডটা বিশেষ ভাবে উপভোগ করেছি।’
এরপর স্মৃতি প্রশ্ন করেন ঝুলনকে, তিনি তিতাসকে বিশেষ কোনও বিশেষ প্ল্যান দিয়েছিলেন কিনা। উত্তরে ঝুলন বলেন, ‘ওকে আমার প্ল্যান দেওয়ার দরকার নেই। আশা করি, এই ফর্ম ও আগামী ম্যাচগুলিতে ধরে রাখবে।’
তিতাস জানান, তাঁর প্রিয় ঝুলুদির সঙ্গে আলাপ ১৩ বছর বয়সে। প্রথম থেকেই ঝুলন তাঁকে একটি পরামর্শ দিয়েছিলেন, যা আজও মেনে চলেন তিনি। ঝুলন তাঁকে বলেছিলেন, ‘তুমি যেহেতু জোরে বোলার, তাই সব সময়ে জোরে বল করবে।’
ঝুলনকে ফোন করার আগেই তাঁকে নিয়ে তিতাস বলেন, ‘ঝুলন গোস্বামী আমার জীবনের একটি বড় অংশ। আমার সঙ্গে ওঁর প্রথম দেখা হয়েছিল, যখন আমার ১৩ বছর বয়স। আমরা যাঁরা বাংলা থেকে খেলি, তাঁদের প্রত্যেকের জীবনে ঝুলন গোস্বামীর অবদান অনেক। আমি ওঁর থেকে অনেক সাহায্য পেয়েছি। তিনি আমাদের বাংলা দলের মেন্টর।’
৯ উইকেটে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচ জিতেছেন ভারতের মেয়েরা। ৭ জানুয়ারি রবিবার দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হবে টিম ইন্ডিয়া। জয়ের ধারা তারা বজায় রাখতে পারে কিনা, এখন সেটাই দেখার বিষয়!