বিজয় হাজারেতে পরপর দুই ম্যাচে নাগাল্যান্ড এবং বরোদাকে কার্যত দাপটের সঙ্গে উড়িয়ে দিয়েছে বাংলা। কিন্তু নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে এসে বাংলা মুখ থুবড়ে পড়েছে তামিলনাড়ুর সামনে। বাংলার ব্যাটাররা একবারে ল্যাজেগোবরে হয়েছে। সন্দীপ ওয়ারিয়ার, টি নটরাজন, বাবা অপরাজিতদের দাপটে একেবারে তাসের ঘরের মতোই ভেঙে পড়ে বাংলার ব্যাটিং। মাত্র ৮৪ রানে অলআউট হয়ে যান সুদীপ ঘরামিরা। সর্বোচ্চ রান শাহবাজ আহমেদের। ৩১ বলে ২০ করেছেন তিনি। বাকিরা তো ২০ রানেও পৌঁছতে পারেননি।
টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমেছিল বাংলা। এর পরেই একের পর এক উইকেট হারাতে থাকে বাংলা টিম। শুরুতেই অভিমন্যু ঈশ্বরণের উইকেট হারায় বাংলা। দলের রান যখন ২, তখন প্রথম উইকেট পড়ে বাংলা দলের। অভিমন্যু ব্যক্তিগত ১ রানে আউট হন। দলের ৭ রানের মাথায় পড়ে দ্বিতীয় উইকেট। ৯ বল খেলেও রানের খাতা খুলতে পারেননি আকাশদীপ। খালি হাতে সাজঘরে ফেরেন তিনি। অধিনায়ক সুদীপ ঘরামিও চূড়ান্ত ব্যর্থ হন। ৬ বলে ৪ রান করে নিরাশ করেন বাংলার অধিনায়ক। ১২ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে গিয়েছিল বাংলা ব্রিগেড। সেই চাপ তারা আর কাটিয়ে উঠতে পারেনি। এর পর নির্দিষ্ট ব্যবধানে উইকেট হারাতে থাকে বাংলা।
অনুষ্টুপ মজুমদার আউট হন ১৩ বলে ১১ রানে। এর পর আউট হয়ে যান অভিষেক পোড়েলও। ২০ বলে ১৪ রান করে আউট হয়ে যান অভিষেক। তামিলনাড়ুর সন্দীপ এবং নটরাজনের দাপটে ৪২ রানের মধ্যে ৫ উইকেট হারিয়ে বসে থাকে বাংলা। এর পর আর কেউ ব্যাট হাতে ঘুরে দাঁড়াতে পারেননি। হাবিব গান্ধী ২৭ বলে ১৯ করেন। শাহবাজ দলের হয়ে সর্বোচ্চ ২০ রান (৩১ বলে) করেন। এর পর করণলাল ১, প্রদীপ্ত প্রামাণিক শূন্য, মহম্মদ কাইফ ৭ এবং ইশান পোড়েল ১ বল খেলে অপরাজিত থাকেন। তবে তিনি রানের খাতা খুলতে পারেননি। ২৩.৪ ওভারেই মাত্র ৮৪ রানে অলআউট হয়ে যায় বাংলা ব্রিগেড।
তামিলনাড়ুর হয়ে সবচেয়ে সফল বোলার সন্দীপ ওয়ারিয়ার। ৭ ওভারে ২৩ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিয়েছেন তিনি। টি নটরাজন, বাবা অপরাজিত ২টি করে উইকেট নিয়েছেন। সাই কিশোর, বরুণ চক্রবর্তী ১টি করে উইকেট নিয়েছেন।
এর পর রান তাড়া করতে নেমে ৫ ওভার খেলে ১ উইকেটে ২০ রান করে ফেলে তামিলনাডু। কিন্তু তার পরেই বৃষ্টির জন্য খেলা বন্ধ হয়ে যায়। সাই সুদর্শন ১৫ বলে ৮ রান করে আকাশদীপের বলে এলবিডব্লিউ হন। বৃষ্টি নামার আগে নারায়ণ জগদীশান ১৪ বলে ৭ এবং বাবা অপরাজিত ১ বলে ০ করে ক্রিজে ছিলেন। তবে বৃষ্টি শেষ হয়ে খেলা শুরু হতেই তামিলনাড়ু বাবা অপরাজিতের উইকেট হারান। ৬ বলে ৪ রান করে সাজঘরে ফেরেন তিনি। এর পর বিজয় শঙ্কর নেমে ১৪ বলে ২ রান করে সাজঘরে ফেরেন। নারায়ণ জগদীশান সর্বোচ্চ ৩০ রান (৪৫ বলে) করেন। অধিনায়ক দীনেশ কার্তিক আউট হয়ে যান ১১ বলে ৩ রান করে।
৬৫ রানে ৫ উইকেট পড়ে গিয়েছিল তামিলনাড়ুর। কিন্তু বাংলার স্কোর এতটাই কম ছিল যে, ১৯.১ ওভারে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় তামিলনাড়ু। বাবা ইন্দ্রজিৎ শেষ পর্যন্ত ১০ বলে ১৭ করে অপরাজিত থাকেন। ১৪ বলে অপরাজিত ৯ করেন শাহরুখ খান। বাংলার হয়ে ২টি করে উইকেট নিয়েছেন ইশান পোড়েল এবং মহম্মদ কাইফ। ১টি উইকেট নিয়েছেন আকাশদীপ। ৫ উইকেটে ম্যাচ জিতে পয়েন্ট টেবলে নিজেদের জায়গা শক্তপোক্ত করল তামিলনাড়ু। ২ ম্যাচ খেলে ২টিতেই জিতে তারা ‘ই’ গ্রুপের দুইয়ে রয়েছে। বাংলা ৩ ম্যাচ খেলে ২টিতে জিতেছে, একটিতে হারল। তারা ৮ পয়েন্ট নিয়ে তিনে রয়েছে। এই গ্রুপের শীর্ষে রয়েছে মধ্যপ্রদেশ। তাদের ৩ ম্যাচ খেলে ১২ পয়েন্ট। তারা তিনটি ম্যাচই জিতেছে।