শুভব্রত মুখার্জি- চলতি ওডিআই বিশ্বকাপে ভারত গ্রুপ পর্বের নটি ম্যাচের মধ্যে নটি ম্যাচেই জয় লাভ করেছে। ব্যাটিং, বোলিং ফিল্ডিং এই তিন বিভাগেই ভারতীয় দল বিপক্ষকে একেবারে উড়িয়ে দিয়েছে সবকটি ম্যাচেই। নটি ম্যাচের মধ্যে পাঁচটি ম্যাচ ভারত রান তাড়া করে জিতেছে। আর চারটি ম্যাচ তারা রান ডিফেন্ড করে জিতেছে। পেস হোক বা স্পিন দুই বিভাগেই ভারতীয় বোলাররা গোটা বিশ্বকাপ জুড়েই এখনও পর্যন্ত দাপট দেখিয়েছে। আর সে কথা ধরা পড়ল ভারতের বর্তমান বোলিং কোচ পরশ মামব্রের গলাতেও। তাঁর স্পষ্ট দাবি বিশ্বকাপের যে কোন পরিবেশের উইকেটকে সঠিকভাবে কাজে লাগানোর মতন বোলার ভারতের হাতে রয়েছে।
প্রসঙ্গত এখনও পর্যন্ত বিশ্বকাপে জসপ্রীত বুমরাহ ১৭, মহম্মদ শামি ১৬, রবীন্দ্র জাদেজা ১৬, কুলদীপ যাদব ১৪ এবং মহম্মদ সিরাজ ১২টি উইকেট শিকার করেছেন। ভারত বুধবার অর্থাৎ প্রথম সেমিফাইনালে মুম্বইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হবে নিউজিল্যান্ডের। তার আগে নটি ভিন্ন ভিন্ন ভেন্যুর নটি ভিন্ন ভিন্ন উইকেটে ভারতীয় বোলারদের এই দাপুটে পারফরম্যান্স দেখিয়েছে যা ভারতীয় দলকে নতুন করে অক্সিজেন জোগাবে।
এমন আবহে আইসিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পরশ মামব্রে জানিয়েছেন, ‘স্কিল অনুযায়ী আমি বলতে পারি আমাদের সামনে যত কঠিন চ্যালেঞ্জ হোক না কেন, যত আলাদা পরিস্থিতি হোক না কেন সবকিছুর সঙ্গে মানিয়ে নিতে আমরা তৈরি রয়েছি। আলাদা আলাদা পিচ আমাদের সামনে থাকলেও সেই পিচে ভালো পারফরম্যান্স করার বোলার আমাদের সামনে রয়েছে। আমরা কিন্তু সেটা চলতি বিশ্বকাপে প্রতিটি ম্যাচেই প্রায় করে দেখিয়েছি। আমরা একমাত্র দল যারা নটা আলাদা ভেন্যুতে খেলেছি। ফলে নটা ভিন্ন ভিন্ন উইকেটে খেলেছি আমরা। প্রত্যেক জায়গাতেই আলাদা আলাদা চ্যালেঞ্জ ছিল। প্রত্যেক পরিবেশকে কাজে লাগিয়ে বল করার বোলার আমাদের রয়েছে। আর সেটা বারবার তারা তাঁদের পারফরম্যান্সের মধ্যে দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছে।’
পরশ মামব্রে আরও জানান, ‘বুমের (বুমরাহর) অ্যাকশনটা একটু অন্যরকম। তারপরেও ভেবে দেখুন চোটের পর কীভাবে ও প্রত্যাবর্তন করেছে ২২ গজে। যা অবিশ্বাস্য, অকল্পনীয়। ওঁর অ্যাকশনটা অদ্ভুত। কিন্তু ওর যা স্কিল রয়েছে তা অনবদ্য। এখন তো ওঁর হাতে দুইধরনের সুইং রয়েছে। এখন ও বল ভিতরের দিকে এবং বাইরের দিকে দুইদিকে মুভ করাতে পারে। শামি এমন একজন বোলার যে মারাত্মক রকমভাবে বলের সিমটা সোজা রেখে উইকেটে হিট করতে পারে। শামির বল সিমে পড়ার পরে কোন দিকে যাবে তা ব্যাটারদের পক্ষে বোঝা খুব কঠিন। গত কয়েক বছরে বোলার হিসেবে সিরাজ ও উন্নতি করেছে। ও নিজের বোলিংটা ভালো বোঝে। এই মুহূর্তে ও আলাদা আলাদা রকমভাবে বল করাকে রপ্ত করেছে। বিশেষ করে 'ওবেল'( নড়বড়ে) সিমে দারুন বোলিং করে ও। আগে ওঁর হাতে শুধু ইন সুইং ছিল। এখন খুব ভালো আউটসুইংও করতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘জাদেজার বোলিং খুব সহজ সরল। ও প্রথম বল থেকেই উইকেটে হিট করার চেষ্টা করে। সঠিক লাইন, লেন্থে বোলিং করার চেষ্টা করে।এত নিখুঁত লাইন, লেন্থে বল করে যে ওঁকে মারা ব্যাটারদের পক্ষে খুব শক্ত। কুলদীপ গত কয়েক বছরে ওঁর রান আপে কিছু টেকনিক্যাল অদলবদল করেছে। যার সুফল ও পাচ্ছে। তিনিও ভালো স্পিন করছেন। বলের গতি বেড়েছে। একজন চায়নাম্যান বোলারের পক্ষে যা মোটেও সহজ ব্যাপার নয়। অন্যদিকে অশ্বিন আমাদের নিঃসন্দেহে ম্যাচ উইনার। ওঁ প্রথম একাদশে থাকল কী থাকল না সেটা বড় ব্যাপার নয়। ডাগ আউটে বসেও অশ্বিন আমাদের বোলারদের সাহায্য করে। অনেক মূল্যবান পরামর্শ দেন।’