বিশ্বকাপে বাংলাদেশের পুরো বেহাল দশা। মোট পাঁচটি ম্যাচের মধ্যে তারা মাত্র একটিতে জিতেছে। চারটিতেই হেরেছে। যার নিট ফল পয়েন্ট টেবলের লাস্টবয় এখন শাকিব আল হাসানরা। চলতি বিশ্বকাপের সেমিতে ওঠার আশা কার্যত তাদের নেই। এর মাঝেই দেশে ফিরে গেলেন বাংলাদেশের অধিনায়ক শাকিব আল হাসান।
মঙ্গলবার রাতে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হারের পরেই, বুধবার সকালে ঢাকায় হয়ে দুপুরে গিয়েছিলেন মিরপুরের শের-ই বাংলা স্টেডিয়ামে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের এক সূত্র জানিয়েছে, বুধবার সকালেই বাংলাদেশ ফিরে গিয়েছেন দলের অধিনায়ক শাকিব আল হাসান। দুপুরে তিনি মিরপুরে শের-ই বাংলা স্টেডিয়ামে তাঁর ছেলেবেলার কোচ নাজমুল আবেদিনের তত্ত্বাবধানে অনুশীলনও করেন।
আসলে নিজের চেনা ছন্দে নেই সাকিব। তাই ছন্দ ফিরে পেতে, বিশ্বকাপের মাঝে ছেলেবেলার কোচের স্মরণাপন্ন হয়েছেন শাকিব আল হাসান। জানা গিয়েছে, তিনি দলের সঙ্গে আগামী ২৭ অক্টোবর যোগ দেবেন। আর ২৮ অক্টোবর কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে বাংলাদেশের ম্যাচ।
এবারের বিশ্বকাপে চার ম্যাচ খেলেছেন শাকিব। ভারতের বিরুদ্ধে চোটের জন্য খেলতে পারেননি। মাত্র ১৪ গড়ে শাকিবের সংগ্রহ মাত্র ৫৬। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ ৪০ রানের ইনিংস খেলেছেন তিনি। বল হাতে ওভারপ্রতি ৫.৫৪ রান দিয়ে তিনি নিয়েছেন ৬ উইকেট। আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে নেওয়া ৩০ রানে ৩ উইকেট তাঁর সেরা।
এদিকে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হারার পর বাংলাদেশ আর বিশ্বকাপের সেমিতে ওঠার আশা কার্যত দেখছে না। শাকিব আল হাসান তো বলেই দিয়েছেন, ‘আমাদের টপ চার জন ব্যাটারকে ভালো করতে হবে। টুর্নামেন্টে অনেক দূরে যেতে হবে, যে কোনও কিছু হতে পারে। অনেক শেখার দরকার আছে, অনেক ক্রিকেট খেলতে হবে। আমরা পাঁচ বা ছয়ে শেষ করতে পারলে ভালো লাগবে। আমরা যেভাবে খেলে থাকি, সেভাবে খেলিনি, তবে আশা করছি শক্তিশালী হয়ে ফিরে আসব।’
শাকিব নিজেই জানেন, সেমির অঙ্কটা তাদের জন্য কতটা জটিল হয়ে গিয়েছে। সমীকরণ খুবই কঠিন। শাকিবদের সামনে বাকি আর চার ম্যাচ। তার সবকটিতেই চাই জয়। বাংলাদেশ যদি পরবর্তী ৪ ম্যাচেই জয় পায় তবে মোট পয়েন্ট হবে ১০। আর তিন ম্যাচ জিতলে হবে ৮। এই মুহূর্তে ৮ পয়েন্ট আছে নিউজিল্যান্ড এবং দক্ষিণ আফ্রিকার। বাংলাদেশের ৮ পয়েন্ট নিয়ে সেমিফাইনালে যাওয়ার স্বপ্ন দেখতে হলে এই দুই দলকে বাকি সব ম্যাচেই হারতে হবে। তবে বলে রাখা দরকার, এই দুই দল সব ম্যাচ হারলে বাংলাদেশের সামনে চলে আসবে পাকিস্তান এবং অস্ট্রেলিয়া।
দক্ষিণ আফ্রিকার এখনও পাকিস্তানের সঙ্গে ম্যাচ বাকি। ম্যাচে প্রোটিয়ারা হারলে পাকিস্তানের পয়েন্ট হবে ৬। আবার তাদের নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেও ম্যাচ বাকি। সেই ম্যাচ হারলে নিউজিল্যান্ড পেয়ে যাবে ১০ পয়েন্ট। আবার কিউয়িদের সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া, পাকিস্তান তিন দলেরই খেলা বাকি। অস্ট্রেলিয়া পাকিস্তান সেখানেও জয় পেলে ১০ পয়েন্ট পেয়ে যেতে পারে। আপাতত তাই দক্ষিণ আফ্রিকা এবং নিউজিল্যান্ডকে হিসাবের বাইরে রেখেই সমীকরণ মেলাতে হবে টাইগারদের। যার অর্থ বাংলাদেশের জন্য বাকি থাকছে কেবল চার নম্বর স্লট।
চার নম্বরের লড়াইয়ে এখন বাংলাদেশের প্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তান, অস্ট্রেলিয়া এবং আফগানিস্তান। বাংলাদেশের এক্ষেত্রে প্রত্যাশা করতে হবে পরের ম্যাচগুলোতে তাদের পয়েন্ট খোয়ানোর। অস্ট্রেলিয়া বুধবার নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে খেলছে। সেই ম্যাচে জিতলে তাদের পয়েন্ট হবে ৬। যার অর্থ, এর পরের বাকি চার ম্যাচ থেকে কমপক্ষে দু'টি ম্যাচ অজিদের হারতেই হবে। একই অঙ্ক আফগানিস্তান এবং পাকিস্তানের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। বাবর আজমরা দুই ম্যাচের বেশি জিতলেই বিপাকে পড়তে হবে শাকিবদের। এর মাঝে অস্ট্রেলিয়া এবং আফগানিস্তানের ম্যাচটায় বাংলাদেশকে বাড়তি নজর দিতে হবে।