ক্রিকেট বিশ্বকাপের টিকিট বিতর্কের জল গড়াল বহুদূর। এমনকী বিজেপি নেত্রী নূপুর শর্মার নামও জড়িয়ে গিয়েছে। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) 'দুর্নীতি' নিয়ে টুইট করেও তা মুছে দেওয়ার অভিযোগ করায় সোশ্যাল মিডিয়ায় অল্ট নিউজের সহ-প্রতিষ্ঠাতা মহম্মদ জুবায়েরকে আক্রমণ শানিয়েছেন প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার বেঙ্কটেশ প্রসাদ। প্রাক্তন ভারতীয় পেসার দাবি করেন, নিজের স্বার্থে সমাজে লাগাতার ঘৃণা ছড়িয়ে যান অল্ট নিউজের সহ-প্রতিষ্ঠাতা। তার ফলে প্রচুর মানুষের জীবন বিপন্ন হয়ে যায়। সেইসঙ্গে তাঁকে জঙ্গিদের সঙ্গেও তুলনা করেন প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার। যে বিষয়টি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় রীতিমতো ধুন্ধুমার বেঁধে গিয়েছে। কেউ-কেউ প্রসাদের সমর্থনে মুখ খুলেছেন। কোনও কোনও নেটিজেন আবার জুবায়েরকে সমর্থন করেছেন।
বিষয়টা ঠিক কী হয়েছে?
গত শনিবার সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে কয়েকটি স্ক্রিনশট (সত্যতা যাচাই করেনি হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা) পোস্ট করেন অল্ট নিউজের সহ-প্রতিষ্ঠাতা। সঙ্গে দাবি করেন যে ‘ভেঙ্কটেশ প্রসাদের ডিলিট করা টুইট।’ ওই টুইটে (সত্যতা যাচাই করেনি হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা) বলা হয়েছিল, 'কোনও একটি প্রতিষ্ঠানের কঠোর পরিশ্রম নষ্ট করে দিতে পারেন একজন দুুর্নীতিবাজ ও অহংকারী লোক। যে প্রতিষ্ঠান সাধারণত দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত থাকে না। কিন্তু (ওই লোকটার কারণে) সকলের উপর দুর্নীতির ছাপ পড়ে যায়। সেটা শুধুমাত্র তৃণমূল স্তরে নয়, বরং বৃহত্তর ক্ষেত্রে সেটা হয়।'
আরও পড়ুন: রোহিতের দলের মধ্যে কি দম আছে বিশ্বকাপ জেতার? প্রশ্ন করলেন যুবি, উত্তর এল বীরুর
জুবায়েরের সেই টুইটের পালটা দেন প্রসাদ। নিজের টুইটের সঙ্গে একটি স্ক্রিনশটও (সত্যতা যাচাই করেনি হিন্দুস্তান টাইমস বাংলা) পোস্ট করেন। তাতে দেখা গিয়েছে যে অপর একজনের টুইট রিটুইট করা হয়েছে জুবায়েরের নামের একটি অ্যাকাউন্ট থেকে। তবে সেই মূল টুইটই অবশ্য মুছে ফেলা হয়েছে। সেই রেশ ধরেই জুবায়েরকে আক্রমণ শানান প্রসাদ।
ভারতের প্রাক্তন তারকা পেসার বলেন, ‘হাহা, লাগাতার ঘৃণা ছড়িয়ে যাওয়া একটা লোক বলছে। যিনি নিজের স্বার্থে অসংখ্য মানুষের জীবন বিপদের মুখে ঠেলে দিয়েছেন। তথ্যের অনুসন্ধানকারীর আড়ালে আপনি যেভাবে নিজের আসল পরিচয়টা লুকিয়ে রেখেছেন, তা জঙ্গিদের শান্তির বার্তা দেওয়ার মতোই বিষয়। এবার পোস্ট করুন যে নিজের ওয়েবসাইটকে টিকিয়ে রাখার জন্য টাকা দরকার এবং নিজের ওয়েবসাইটের জন্য অনুদান চান। মানুষকে বোকা বানিয়ে জীবন কাটানো সত্ত্বেও কোনও লজ্জা নেই।’
বিষয়টি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ধুন্ধুমার বেঁধে যায়। বিশেষত ‘দুর্নীতিবাজ’ হিসেবে প্রসাদ কার কথা উল্লেখ করেছিলেন, তা নিয়ে হইচইয়ের মধ্যে প্রসাদ নিজের ‘টুইট ডিলিট করে দেওয়ায় বিষয়টি নিয়ে আরও জলঘোলা শুরু হয়।’ তারইমধ্যে রবিবার বিসিসিআইকে নিয়ে একটি টুইট করেন প্রসাদ। নেটিজেনদের একাংশ দাবি করেন, আগে প্রসাদ যে টুইট করেছিলেন, সেটার কিছু অংশ পরিবর্তন করে রবিবার টুইট করেছেন।
রবিবারের টুইটে প্রসাদ লেখেন, 'কোনও একটি প্রতিষ্ঠানের কঠোর পরিশ্রম নষ্ট করে দিতে পারেন একজন দুুর্নীতিবাজ ও অহংকারী লোক। যে প্রতিষ্ঠান দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত থাকে না। যে লোকের কারণে পুরো প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যায়। সেটার প্রভাব শুধুমাত্র কোনও ক্ষুদ্র স্তরে আটকে থাকে না, সেটার সুদুরপ্রসারী প্রভাব পড়ে। এটা প্রতিটি ক্ষেত্রেই সত্য। সেটা রাজনীতি হোক, খেলাধুলো হোক, সাংবাদিকতা হোক বা কর্পোরেট জীবন হোক।'
তারপর 'দুর্নীতিবাজ' ব্যক্তি কাকে বলেছেন, তা নিয়েও মুখ খোলেন প্রসাদ। সংবাদসংস্থা পিটিআইয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রসাদ দাবি করেছেন যে কোনও নির্দিষ্ট বিসিসিআই কর্তাকে নিশানা করেননি। তিনি বলেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে কাউকে বলিনি। এটা নেহাতই একটি পর্যবেক্ষণ ছিল।’ সঙ্গে তিনি বলেন, ‘যেহেতু আমার অন্য টুইটে (বিশ্বকাপের) টিকিট নিয়ে বলেছিলাম, তাই পুরো বিষয়টি ঘেঁটে গিয়েছে। টিকিট বিক্রি এবং সূচি নিয়ে আমি বিসিসিআইয়ের সমালোচনা করেছিলাম।’
সেইসঙ্গে কড়া ভাষায় জুবায়েরকে আক্রমণ নিয়েও মুখ খোলেন প্রসাদ। পিটিআইয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রসাদ বলেছেন যে 'ওই লোকটা (জুবায়ের) আমার রিপ্লাই দিয়েছিলেন এবং অপমানজনক ভাষা ব্যবহার করেছিলেন। তাই সিদ্ধান্ত নিই যে ঠিকঠাক জবাব দিতে হবে এবং সত্যটা সামনে আনতে হবে।' পরবর্তীতে প্রসাদকে ‘ফাট্টু’ (ভীতু) বলে জুবায়ের কটাক্ষ করেছেন বলে পিটিআইয়ের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।