আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে ভবানীপুর নয়, শুভেন্দু অধিকারীর খাসতালুক নন্দীগ্রামে প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছে জাহির করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার নন্দীগ্রামের তেখালি বাজার মাঠ থেকে সকলকে চমকে দিয়ে সেই ঘোষণাই করলেন তিনি। নন্দীগ্রামকে নিজের ‘লাকি জায়গা’ বলে উল্লেখ করে এদিন মমতা হালকা সুরেই বলেন, ‘আমিই যদি নন্দীগ্রামে দাঁড়াই কেমন হয়? ভাবছিলাম। কথার কথা। একটু বললাম, একটু ইচ্ছে হল। একটু গ্রামীণ জায়গা। একটু আমার ভালবাসার জায়গা...।’
তাঁর এই ঘোষণার পরই যেন গর্জে ওঠে সভামঞ্চের সামনের মাঠ। করতালিতে ফেটে পড়ে চারিদিক। মমতা বলেন, ‘২০১৬–র নির্বাচনের আগে আমি নন্দীগ্রাম থেকেই ইলেকশন ঘোষণা করেছিলাম। আমি আজও এসেছি নন্দীগ্রামে।’ মুখ্যমন্ত্রীর হুঙ্কার, ‘নন্দীগ্রাম থেকে ২০২১–এ তৃণমূল জিতবে। এবং নন্দীগ্রাম থেকেই শুরু হল জেতার পালা। তৃণমূল এই নির্বাচনে জয়লাভ করবে। প্রতিটি আসনে জিতবে তৃণমূল।’
এর পরই দলের নেতাকর্মীদের প্রতি তাঁর বার্তা, ‘আমি হয়তো ভোটের সময় অত সময় দিতে পারব না। কারণ আমাকে তো ২৯৪টি আসনে লড়তে হবে। সেই জন্য আপনারা কিন্তু কাজটা করে দেবেন। কিন্তু তার পরে যা কাজ আমি সবটা করে দেব। ঠিক আছে?’
তাঁকে যাতে নন্দীগ্রামে প্রার্থী করা হয় সেই আবেদনও এদিন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সভাপতি সুব্রত বক্সির কাছে করেন মমতা। তিনি বলেন, ‘আমি সুব্রত বক্সিকে অনুরোধ করব, এটা আমার ইচ্ছে হয়েছে। আমার মনবাসনা। ভবানীপুরকে আমি অবজ্ঞা করছি না। ভবানীপুরেও আমি ভাল প্রার্থী দেব। বক্সিকে বলব, নন্দীগ্রামেও যেন আমার নামটা থাকে।’
সুব্রত বক্সি সেই নির্দেশ মেনে মঞ্চ থেকেই ঘোষণা করেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ আমাদের সকলের সামনে যে ঘোষণা করেছেন তা আমরা দলের পক্ষ থেকে গ্রহণ করলাম। নিশ্চিতভাবে আপনাদের সামনে তাঁকে উপস্থিত করে আমরা বুঝিয়ে দিতে চাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন্দীগ্রামের মানুষকে ভোলেননি।’ এর পরই ‘মমতা বন্দ্যোপাধায় জিন্দাবাদ’ ধ্বনিতে মেতে ওঠেন রাজ্যের শাসকদলের নেতাকর্মীরা।
উল্লেখ্য, তৃণমূল ছাড়ার আগে পর্যন্ত নন্দীগ্রামের বিধায়ক ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। নিজের খাসতালুক নন্দীগ্রাম থেকে ২০১৬ সালের নির্বাচনে বিপুল ভোটে জিতেছিলেন তিনি। এবার সেই আসনে নিজেকে প্রার্থী হতে চেয়ে ইচ্ছে প্রকাশ করলেন মমতা। স্বাভাবিকভাবে বোঝাই যাচ্ছে, অধিকারী পরিবারকে কড়া বার্তা দিতেই এদিন এই ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।