বাংলা নিউজ > ভোটযুদ্ধ > অসম বিধানসভা নির্বাচন ২০২১ > বিয়ের আগে ধর্ম, আয়ের উৎস জানানোর আইন: অসমে ভোটের ইস্তেহারে প্রতিশ্রুতি বিজেপি–র

বিয়ের আগে ধর্ম, আয়ের উৎস জানানোর আইন: অসমে ভোটের ইস্তেহারে প্রতিশ্রুতি বিজেপি–র

প্রতীকী ছবি। ইনসেটে, অসমের অর্থমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। ছবি সৌজন্য : টুইটার

গত বছর নভেম্বর মাসেই অসম সরকার এমন একটি আইন আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যাতে পাত্র ও পাত্রীকে বিয়ের আগে তাঁদের ধর্ম, আয় ইত্যাদি প্রকাশ করতে হবে।

উৎপল পরাশর

বিয়ের আগে পাত্রপাত্রী দু’‌জনকেই তাঁদের ধর্ম ও আয়ের ব্যাপারে বিস্তারিত জানাতে হবে— এমনই আইন আনতে চাইছে অসম সরকার। আর আসন্ন ভোটে এই আইন চালু করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে নির্বাচনী ইস্তেহার প্রকাশ করবে শাসকদল বিজেপি। বুধবার এমনই জানালেন অসম মন্ত্রিসভার অন্যতম শীর্ষ সদস্য হিমন্ত বিশ্ব শর্মা।

এদিন গুয়াহাটিতে অসমের অর্থমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা হিমন্ত বিশ্ব শর্মা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ‘কোনও বৈবাহিক সম্পর্কে জড়ানোর আগে দু’‌পক্ষই নিজেদের ধর্ম বা আয়ের উৎস সংক্রান্ত তথ্য গোপন রাখতে পারবে না— এই শর্তে একটি বিস্তৃত আইন আনতে চলেছি আমরা। এবং তার প্রতিশ্রুতি এবার বিজেপি–র নির্বাচনী ইস্তেহারে দেওয়া হবে। বিয়ের আগে পাত্র ও পাত্রী— দু’‌জনকেই তাঁদের পরিচিতি, ধর্ম এবং আয়ের ব্যাপারে বিস্তারিত জানাতে হবে।’‌

একদিকে, যখন উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশের মতো রাজ্যগুলি ভিন্ন ধর্মালম্বীদের মধ্যে বিয়ে নিয়ন্ত্রণ বা নিয়মাধীন করতে আইন আনছে, তখনই অনেকটাই একই উদ্দেশে অসম সরকার এই নতুন আইন আনতে চলেছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। উঠে আসছে ‘‌লাভ জিহাদ’‌ আটকানোর প্রসঙ্গ। যদিও সর্বানন্দ সোনোয়ালের সরকারের অর্থ, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও পূর্ত দফতরের মন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার মতে, ‘‌এটি কোনওভাবেই লাভ জেহাদের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত নয়।’‌

গত বছর নভেম্বর মাসেই অসম সরকার এমন একটি আইন আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যাতে পাত্র ও পাত্রীকে বিয়ের আগে তাঁদের ধর্ম, আয় ইত্যাদি প্রকাশ করতে হবে। বিবাহ আরও স্বচ্ছ করার লক্ষ্যে এই আইন প্রণয়নের ব্যাপারে সে সময় হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেছিলেন, ‘‌রাজ্যের মহিলাদের স্বশক্তিকরণের উদ্দেশেই এই আইন আনা হচ্ছে। যাতে একই ধর্মের বিবাহযোগ্য তরুণ–তরুণী বিয়ের আগে নিজের এবং তাঁদের পরিবার সম্পর্কে বিশদে জানতে পারে।’

তাঁর কথায়, ‘‌এই আইন শুধু ভিন্ন ধর্মের বিয়ের জন্য নয়। অনেক সময় দেখা যায় কোনও তরুণী নিজের ধর্মেরই কোনও তরুণকে বিয়ে করল। কিন্তু পরে তিনি জানতে পারলেন যে তাঁর স্বামীর আয়ের উৎস অবৈধ। সেটা যাতে না হয়, সেই জন্যই এই আইন। আমি এর সঙ্গে লাভ জিহাদকে জড়াতে চাই না।’‌ হিমন্ত বিশ্ব শর্মা আরও বলেন, ‘‌আমরা জমি জিহাদ বা ল্যান্ড জিহাদেরও বিরুদ্ধে। নিম্ন ও মধ্য অসমের বিভিন্ন ধর্মীয়স্থানের জমি–সহ বিভিন্ন জমি কেউ বা কারা দখল করে নিচ্ছে। এবারের নির্বাচনী ইস্তেহারে এ ব্যাপারেও কিছু বক্তব্য, প্রতিশ্রুতি থাকবে।’‌

অসমের অর্থমন্ত্রী আরও বলেছেন, ‘‌‌আমরা উগ্রবাদ, মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে। আর তার প্রভাব আমাদের এবারের ইস্তেহারেও মিলবে।’ চলতি বছরের এপ্রিল–মে মাসে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে অসমে। ইতিমধ্যে বিজেপি নেতৃত্বাধীন জোট দাবি করেছে যে তারা ১২৬টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ১০০টিতে জয় লাভ করে ফের ক্ষমতায় ফিরবে।

বন্ধ করুন