নজিরবিহীন ভাবে ২০১৮-র পঞ্চায়েত ভোটে ২০ হাজারেরও বেশি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় পেয়েছিল তৃণমূল। যা কার্যত পঞ্চায়েত ভোটের ইতিহাসে রেকর্ড ছিল। তবে এবার ছবিটা বদলেছে। মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন পেরিয়ে যাওয়ার পর কমিশনের তথ্য বলছে, এ বার অনেকটাই কমেছে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ের সংখ্যা।
২০১৮ পঞ্চায়েতের তিনটি স্তর মিলিয়ে ৩৪ শতাংশ আসনে লড়াই ছাড়়াই জয় পেয়েছিল তৃণমূল। এবার সেই হার অনেকটাই কমেছে। কমিশনের হিসাব অনুযায়ী গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদ মিলিয়ে গোটা রাজ্যে ৯.৪৮ শতাংশ আসনে এবার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ফল নির্ধারণ হয়েছে। বলাই বাহল্য যে এর সিংহভাগ আসন শাসকদলের ঝুলিতে গিয়েছে। উল্লেখযোগ্য ভাবে অনুব্রত মণ্ডলের অনুপস্থিতি সত্ত্বেও বীরভূমে সবচেয়ে বেশি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ফলাফল নির্ধারিত হয়েছে। কমিশন জানিয়েছে, দক্ষিণ ২৪ পরগনা বাদে রাজ্যের সব জেলারই তথ্য তাদের হাতে রয়েছে।
কমিশনের তথ্য
রাজ্য নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, গ্রাম পঞ্চায়েতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেতা সব চেয়ে বেশি আসন রয়েছে বীরভূমে (৮৯৩টি)। তার পরই রয়েছে যাথক্রমে, উত্তর ২৪ পরগনায় (৮৬৭ টি) ও পূর্ব বর্ধমান (৮৫৪টি)। সবচেয়ে কম আসন আলিপুরদুয়ারে (৮টি)। উল্লেখযোগ্য ভাবে, দক্ষিণ ২৪ পরগণায় গ্রাম পঞ্চায়েতের সব আসনেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে এবার।
শুধু গ্রাম পঞ্চায়েত নয়, পঞ্চায়েত সমিতিতেও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সবচেয়ে বেশি আসনে ফল নির্ধারিত হয়েছে বীরভূমেই (১২৮)। তারপরই রয়েছে বাঁকুড়া (১০৬) এবং উত্তর ২৪ পরগণা (১০৪)।
জেলা পরিষদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেতা আটটি আসনের মধ্যে ১টি করে আসন যথাক্রমে কোচবিহার ও বীরভূমে। এছাড়া ৩টি করে আসন যথাক্রমে উত্তর ২৪ পরগণা ও উত্তর দিনাজপুরে।
২০১৮-তে কমিশনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গ্রাম পঞ্চায়েতের ৪৮,৬৫০ আসনের মধ্যে ১৬,৮১৪, পঞ্চায়েত সমিতির ৯,২১৭ আসনের মধ্যে ৩,০৫৯ এবং জেলা পরিষদে ৮২৫টি আসনের মধ্যে ২০৩টিতে বিনা লড়াইয়ে জয় পেয়েছিল তৃণমূলের প্রার্থীরা।
(পড়তে পারেন। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় পঞ্চায়েতের কত আসনে ভোট হবে? তথ্য প্রকাশই করল না কমিশন)
রাজ্যে ১৯৭৮ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত পঞ্চায়েত নির্বাচনে মোট বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছিলেন ২৩,১৮৫ জন প্রার্থী। সেই সব হিসাবকে টপকে ২০১৮তে ২০ হাজারের বেশি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেতে শাসকদল তৃণমূলের প্রার্থীরা।
মনোনয়ন প্রত্যাহারের সময়সীমা পেরিয়া যাওয়ার পর কমিশনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী এবার তৃণমূলের মোট প্রার্থী সংখ্যা ৬১,৯৩৪ জন। বিজেপি-র প্রার্থী সংখ্যা ৩৯ হাজার ৬১৭। সিপিএমের প্রার্থী সংখ্যা ৩৬ হাজার ২৫৭। এ ছাড়া কংগ্রেসের প্রার্থী সংখ্যা ১২ হাজার ৬৩৬ জন।