আজ বৃহস্পতিবার থেকে খুলল রাজ্যের সরকারি ও সরকার-পোষিত স্কুল। আর আগামী মাসেই রয়েছে পঞ্চায়েত নির্বাচন। এর জন্য সমস্ত স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের পঞ্চায়েত ভোটে সহযোগিতা করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন জেলা শিক্ষার আধিকারিকরা (ডিআই)। বিজ্ঞপ্তি জারি করে একথা জানানো হয়েছে। ডিআইদের এই বিজ্ঞপ্তি নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। বিরোধী শিক্ষক সংগঠনগুলি এই বিজ্ঞপ্তিতে আপত্তি জানিয়েছে। যদিও তাতে আপত্তির কিছু দেখছে না শাসক দলের শিক্ষক সংগঠনগুলি।
রাজ্যের সরকারি স্কুলগুলিতে গরমের ছুটি শুরু হয়েছিল ২ মে। গত ১৩ জুন স্কুল খোলার ঠিক আগে জেলা শিক্ষা আধিকারিকদের তরফে আরও একটি বিজ্ঞপ্তি করে স্কুল পরিষ্কার রাখা, মিড ডে মিল পরিষেবা চালুর জন্য প্রস্তুতি রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ওই বিজ্ঞপ্তির একেবারে শেষে পঞ্চায়েত ভোটে সহযোগিতা করার জন্য প্রধান শিক্ষকদের অনুরোধ জানানো হয়েছে। আর তাতেই আপত্তি তুলেছে বিরোধী শিক্ষক সংগঠনগুলি।
উল্লেখ্য, আজ বৃহস্পতিবার রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন। ১৭ তারিখে স্ক্রুটিনি। মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন ২০ জুন। ভোট হবে ৮ জুলাই। ১১ তারিখ ভোট গণনা। ফলে ২০ জুনের পর থেকেই জেলায়-জেলায় প্রস্তুতি শুরু করে দেবেন রিটার্নিং অফিসাররা। সেক্ষেত্রে স্কুলগুলিকেও কাজে লাগানো হতে পারে। তাই ডিআইদের তরফে এই নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে।
অল বেঙ্গল টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে এর বিরোধিতা করা হয়েছে। তাঁদের বক্তব্য, স্কুলের প্রধান শিক্ষকেরা নির্বাচনী আধিকারিক বা কর্মী নন। তাঁদের কাজ হল স্কুল পরিচালনা করা। স্কুলের বিল্ডিং প্রয়োজন হলে তা বিডিও বা মহকুমা শাসক ব্যবস্থা করবেন। এক্ষেত্রে প্রধান শিক্ষকের কিছু করার নেই। আরও একটি শিক্ষক সংগঠন বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতিও এই বিজ্ঞপ্তির বিরোধিতা করেছে। তাদের বক্তব্য, স্কুল খোলার বিজ্ঞপ্তি দিয়ে শিক্ষা দফতরের তরফ থেকে ভোটে প্রধান শিক্ষকদের সহযোগিতা করার কথা বলা হয়েছে। এটি সত্যি বিস্ময়কর। আগে এই ধরনের পরিস্থিতি ছিল না।
যদিও শাসকদলের শিক্ষক সংগঠন অবশ্য তাতে আপত্তিকর কিছু দেখতে পাচ্ছে না। তাদের বক্তব্য, বিরোধীরা যে সমস্ত দাবি করছেন সেগুলি অযৌক্তিক। পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির কার্যকরী সভাপতি বিজন সরকার বলেন, ভোট মানুষের সাংবিধানিক অধিকার। আর তার জন্য শিক্ষকদের কাজ করতে হয়। স্কুল কলেজের ভবনগুলিও ব্যবহার করতে হয়। বিরোধী সংগঠনগুলি যে অভিযোগ করছে তা একেবারেই যুক্তিহীন।