পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন পর্ব থেকেই হিংসার সাক্ষী থেকেছে পশ্চিমবঙ্গ। ইতিমধ্যেই পঞ্চায়েতের বলি হয়েছেন ৭ জন। এরই মাঝে আবার হিংসা কবলিত এলাকায় গিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলে এসেছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। এই বিষয়টি যদিও ভালো চোখে দেখছে না রাজ্যের শাসকদল। তবে এরই মাঝে রাজভবনের তরফে খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। যার নাম দেওয়া হয়েছে 'পিস রুম', অর্থাৎ - 'শান্তি কক্ষ'। পঞ্চায়েত ভোট সংক্রান্ত যেকোনও হিংসার ঘটনা সম্পর্কে অভিযোগ জানানো যাবে এই কন্ট্রোল রুমে। এই আবহে সোমবার রাজ্যপাল সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বললেন, পঞ্চায়েত ভোট শান্তিতে মিটবে। রাজ্যপাল বলেন, ‘ভোটের পর শববাহকেরা হকাশ হবে। নির্বাচন শান্তিতে নির্বিঘ্নে মিটবে।’
এর আগে রাজনৈতিক হিংসার পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশনারকে রাজভবনে তলব করেছিলেন রাজ্যপাল। তবে সেই তলবে সাড়া দেননি রাজীব সিনহা। এই সবের মাঝে রাজভবনে চালু হয়েছে হেল্পলাইন নম্বর। খোলা হয়েছে 'পিস রুম'। OSD2w.b.governor@gmail.com এই ইমেল আইডিতে মেল করে রাজনৈতিক হিংসার অভিযোগ জানানো যাবে রাজভবনে। পরে সেই অভিযোগ নাকি নির্বাচন কমিশনকে জানাবে রাজভবন। এছাড়া 03322001641-এই নম্বরে ফোন করেও আপনি অভিযোগ জানাতে পারবেন। ২৪ ঘণ্টা কন্ট্রোল রুমে অভিযোগ জানানো যেতে পারে। এর আগে রাজ্যপাল ভাঙড়ে গিয়েছিলেন। সেখানে আইএসএফ কর্মীরা তাঁর সঙ্গে কথা বলেছিলেন। নালিশ করেছিলেন পরিস্থিতি নিয়ে। রাজ্যপাল সেখানকার পুলিশ কর্তাদের সঙ্গেও কথা বলেছিলেন।
এদিকে এত কিছুর মাঝেই কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন নিয়ে মামলা চলছেই। গত ১৫ জুন হাই কোর্ট রাজ্য জুড়ে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছিল কমিশনকে। তবে সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন ও রাজ্য সরকার। এর আগে ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে লাগামহীন হিংসা ঘটেছিল রাজ্যে। ২০২৩ সালে সেটারই পুনরাবৃত্তি ঘটছে। এই বছরের পঞ্চায়েত ভোটের ঘোষণা পর থেকেই রাজ্যের একাধিক জায়গায় হিংসার ঘটনা ঘটেছে। রক্ত ঝরেছে। মুড়িমুড়কির মতো বোমা পড়েছে। গুলি চলেছে। এদিকে গত বৃহস্পতিবার ছিল পঞ্চায়েত নির্বাচনে মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ তারিখ। সেদিন উত্তর দিনাজপুর জেলার চোপড়ায় সিপিএম কংগ্রেসের মিছিলে গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় মৃত্যু হয় এক বাম কর্মীর। এদিকে ভাঙড়েও আইএসএফ-এর দুই কর্মীর মৃত্যু হয়। এছাড়া দিনহাটায় হিংসার বলি হয়েছেন বিজেপি প্রার্থীর আত্মীয়। মনোনয়ন তুলে নেওয়ার জন্য বিরোধীদের ওপর চাপ দেওয়ার অভিযোগ উঠছে। আরও একাধিক ঘটনা ঘটছে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে। তবে রাজ্যপাল শান্তিপূর্ণ ভোটের জন্য আশাবাদী।