পঞ্চায়েত নির্বাচনের দামামা বেজে গিয়েছে। আগামী ৮ জুলাই রাজ্যে হবে পঞ্চায়েত নির্বাচন। ইতিমধ্যেই মনোনয়ন–পর্ব শেষ হয়েছে। তবে হিংসার ঘটনা এখনও অব্যাহত। নবগ্রামের ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার সরাসরি তৃণমূল কংগ্রেস নেতাকে গুলি করে হত্যার ছক করা হল। কিন্তু দুষ্কৃতীরা পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে বন্দুকে তিনবার ট্রিগারে চাপ দিলেও গুলি বের হল না। আর গুলি না বেরনোয় প্রাণে বেঁচে গেলেন গোবরডাঙার তৃণমূল কংগ্রেস নেতা আবদুল রউফ মণ্ডল। নবগ্রামে কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীকে গুলি করে পিটিয়ে খুন করা হয়েছিল। সেখানে এই তৃণমূল কংগ্রেস নেতা বেঁচে গিয়ে বলেন, ‘সবই উপরওয়ালার ইচ্ছা’।
বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছে? তখন শুক্রবার রাত। ঝনঝনিয়া বাজার এলাকার চায়ের দোকানে রাত ১১টার সময় কর্মীদের সঙ্গে কথা বলছিলেন আবদুল রউফ মণ্ডল। সেখান থেকে সাড়ে ১১টা নাগাদ তিনি বাড়ি ফেরেন। তাঁর অভিযোগ, বাড়ি ফিরে যখন সদর দরজায় তালা লাগাচ্ছিলেন তখন একটি স্কুটি করে দু’জন সেখানে আসে। আর তাঁর নাম ধরে ডাকে। আবদুল রউফ বলেন, ‘আমি তখন এগিয়ে যাই। স্কুটির পিছনে যে বসে ছিল আমার দিকে বন্দুক তাক করে। এমনকী তিনবার ট্রিগারে চাপও দেয়। কিন্তু গুলি বের হয়নি। চতুর্থবার এই কাজ করতে গেলে আমি তাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ি। তখন ওই দু’জন স্কুটি ফেলে চম্পট দেয়। আমি প্রাণে বেঁচে যাই।’
তারপর ঠিক কী ঘটল? তখন চিৎকার–চেঁচামিচিতে বাড়ির সদস্যরাও বেরিয়ে আসেন। গোটা পাড়ায় ঢি ঢি পড়ে যায়। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে খুন করতেই এখানে এসেছিল দুষ্কৃতীরা বলে অভিযোগ ওঠে। অকুস্থলে গোবরডাঙা থানার পুলিশ এসে পৌঁছয়। স্কুটিটি থানায় নিয়ে যায় তাঁরা। আবদুল রউফের কথায়, ‘হেলমেট পরা থাকলেও তিনি ওই দুই দুষ্কৃতীকে চিনতে পেরেছেন। একজনের নাম আরাবুল মণ্ডল, আর একজন জসিম মণ্ডল। দু’জনেই সিপিএমের ক্যাডার।’ সিপিএম অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তবে এই ঘটনায় গোবরডাঙার ঝনঝনিয়া এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন ছড়িয়ে পড়েছে।
আর কী জানা যাচ্ছে? এখানে বিজেপির শক্তঘাঁটি হলেও মনোনয়নে তাঁরা বিশেষ দাগ কাটতে পারেনি। সিপিএমও সংগঠনের অভাবে সাফল্য পায়নি। তাই তৃণমূল কংগ্রেস নেতা–কর্মীদের উপর হামলা চালানো হচ্ছে বলে ঘাসফুল শিবিরের অভিযোগ। এই বিষয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের গাইঘাটা দক্ষিণ ব্লক সভাপতি তাপস ঘোষ সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘দুষ্কৃতীদের দ্রুত গ্রেফতার করতে হবে। সিপিএম নতুন করে এলাকায় সন্ত্রাস করছে।’ যদিও পাল্টা সিপিএমে গোবরডাঙার এরিয়া কমিটির সম্পাদিকা স্বপ্না ঘোষ বলেন, ‘এটা তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফল।’