আজ, শনিবার কোচবিহারের দিনহাটায় আসছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। এই দিনহাটায় পর পর তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা–কর্মী খুন হয়েছেন বলে অভিযোগ। তবে রাজ্যপালের এই সফর বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ কালিম্পং থেকে রাজ্যপাল শিলিগুড়ি আসছিলেন। সেখানে হঠাৎ তিনি রুট বদল করেন। আর রাতেই কোচবিহারে পৌঁছে যান। আজ সকালে দিনহাটা যাবেন তিনি। তাঁর এই যাত্রাপথে সাধারণ মানুষ চাইলে গাড়ি দাঁড় করিয়ে অভিযোগ জানাতে পারবেন। শুক্রবার রাতে কোচবিহার সার্কিট হাউসে পৌঁছে সাংবাদিকদের এই কথাই জানালেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। সুতরাং পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে আবার সক্রিয় রাজ্যপাল।
এদিকে আর ৬ দিন বাকি। তারপর ৮ জুলাই রাজ্যজুড়ে শুরু হয়ে যাবে পঞ্চায়েত নির্বাচন। ইতিমধ্যেই উত্তরবঙ্গের মধ্যে সবচেয়ে অগ্নিগর্ভ জেলা এখন কোচবিহার সেটা প্রকাশ্যে এসেছে। কারণ এখানে রাজনৈতিক সংঘর্ষ, প্রাণহানি নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। শাসক–বিরোধী দলের লড়াই চরমে পৌঁছেছে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যপালের এই সফর অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। অশান্তির দিনহাটা এবং নানা এলাকায় যাবেন আনন্দ বোস। সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখে পুলিশ প্রশাসন এবং জেলাশাসকের সঙ্গে কথা বলবেন বলে সূত্রের খবর। এর আগে তিনি ভাঙড়, ক্যানিং গিয়েছিলেন। তার পর আসেন উত্তরবঙ্গে।
অন্যদিকে নির্বাচনী প্রচারে যখন কোচবিহারে ছিলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী তখন দিনহাটার ভেটাগুড়ি ২ নম্বর অঞ্চলে আক্রান্ত হন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা সুনীল রায় এবং দলের কর্মীরা। আবার তারপরই ভেটাগুড়িরই সিঙ্গিজানি এলাকায় তৃণমূল কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী নির্মল বর্মণের বাড়ি–গাড়িতে ভাঙচুর চলে। এইসব ঘটনার অভিযোগ ওঠে বিজেপির বিরুদ্ধে। এরপর দিনহাটারই গিতলদহ এলাকায় খুন হন এক তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী। এমনকী সেদিন রাতে আবার গুলিবিদ্ধ হন গিতালদহ ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী লাভলি বিবির ভাই। জেলায় ‘সন্ত্রাস’ সম্পর্কে রাজ্যপালকে জানানো হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসও চেয়েছিল তাদের মৃত কর্মীর বাড়িতে যেন রাজ্যপাল যান। নিজের চোখে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখুন।
আরও পড়ুন: সব জেলা থেকে গ্রাম পঞ্চায়েতে চালু করতে হবে ডিজিটাল লেনদেন, ফরমান জারি কেন্দ্রের
ঠিক কী বলেছেন রাজ্যপাল? রাতে কোচবিহারে এসে সাংবাদিক বৈঠক করেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। সেখানে তিনি বলেন, ‘আমি পুরো পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছি। নানা জায়গায় আগে পরিদর্শন করেছি। আরও নানা জায়গা থেকে অশান্তির খবর পেয়েছি। কোচবিহারেও হিংসার ঘটনা ঘটেছে বলে খবর পেয়েছি। আমি উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় সফর ইতিমধ্যেই বাতিল করেছি। কিন্তু আজ এবং আগামিকাল আমি কোচবিহারে থাকব। এই এলাকার প্রকৃত পরিস্থিতি নিজের চোখে দেখতে চাই।’