বীরভূমে তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি এখন তিহাড় জেলে বন্দি। গরুপাচার মামলায় তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। চলছে মামলা। কিন্তু জেলে থেকেও তাঁর বিশ্বাস পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস ভাল ফল করবে। ইতিমধ্যেই বীরভূমে তৃণমূল কংগ্রেস বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিপুল পরিমাণ আসন জিতে গিয়েছে। ফলে কেষ্ট তথা অনুব্রত মণ্ডল নির্বাচনের ময়দানে না থেকেও মনে করিয়ে দিচ্ছেন তাঁর কথা। তাই তো কেষ্টর কথা শোনা গেল সাংসদ শতাব্দী রায়ের গলায়। সিউড়ি ২ নম্বর ব্লকের নানা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় জনসভা করে প্রচার শুরু করেন শতাব্দী। এখান থেকেই যে কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচি শুরু করতেন জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। তবে আজ রবিবার বিক্ষোভের মুখে পড়েন শতাব্দী রায়। সিউড়িতে ভোট প্রচারে গিয়ে ক্ষোভের মুখে পড়েন তৃণমূল সাংসদ। পানীয় জল ও আবাস যোজনায় ঘর না পাওয়ার অভিযোগে গ্রামবাসীরা ক্ষোভ দেখান শতাব্দীকে। তখন তৃণমূল সাংসদ বলেন, ‘বাড়ি–ত্রিপল পায়নি বলছে। আর নদীর উপর সেতু হয়নি বলছে। ওটা আমাকে জানতে হবে। ওই টাকা আমার কাছে আছে কি না। আমি বলে যাব, হ্যাঁ করে দেব। আমি ওরকম কথা বলি না। আমার কাছে থাকলে আমি করে দেব।’
এদিকে এই ব্লকে মাত্র পাঁচটি গ্রাম পঞ্চায়েত, একটি পঞ্চায়েত সমিতি এবং দু’টি জেলা পরিষদ আসনে ৮ জুলাই নির্বাচন হবে। বাকি সব আসনেই কোনও বিরোধী প্রার্থী না থাকায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী তৃণমূল কংগ্রেস। এদিন মঞ্চে দাঁড়িয়ে জেলা সভাপতির প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান সাংসদ শতাব্দী রায়। তিনি অনুব্রত মণ্ডলকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘যিনি দলের জন্য এতদিন ধরে কাজ করেছেন তাঁকে মনে না রাখা অকৃতজ্ঞতা। আমি মনে করি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করা উচিত। এখন তিনি আইনি লড়াইয়ের জন্য বাইরে রয়েছেন। এতদিন যিনি কাজ করেছেন, ভবিষ্যতেও করবেন।’
অন্যদিকে সাংসদ শতাব্দী রায় বারবার ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের বিষয়টি সবার সামনে উল্লেখ করেন। সেখানে বিজেপির বিরুদ্ধে অলআউট লড়াইয়ে যাতে এই ব্লক থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের ঝুলিতে বিপুল পরিমাণ ভোট যায় সেটা নিশ্চিত করারও ডাক দেন তিনি। কারণ এখানে এসেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বাংলা থেকে ৩৫টি আসন জেতার লক্ষ্যমাত্রা দিয়ে গিয়েছেন। পাল্টা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও দিয়ে ছিলেন। তবে বছর ঘুরলেই লোকসভা নির্বাচন। তাই এখন থেকেই মাটি কামড়ে পড়ে লড়াই করতে হবে। পঞ্চায়েত নির্বাচন সেক্ষেত্রে বড় পরীক্ষা।
আরও বলুন: কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে বাধল লঙ্কা কাণ্ড, ‘রিমাইন্ডার লেটার’ দিল রাজ্য নির্বাচন কমিশন
আর কী বললেন শতাব্দী? ইতিমধ্যেই সেই পরীক্ষায় অনেকটা এগিয়ে যাওয়া গিয়েছে। কারণ এখানে সংগঠন না থাকায় প্রার্থী দিতে পারেনি বিজেপি–সিপিএম। তাই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বহু আসন জেতা হয়ে গিয়েছে। আর পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে শতাব্দী বলেন, ‘আমরা অন্যান্য দলের মতো নই। যে হাতে ব্যানার নিয়ে ভোট চাইতে যাব। আমরা কাজ করে ভোট চাইতে যাই। মানুষ আমাদের তাই ভোটবাক্সে ভালবাসা দেবেন। আর এই ভালোবাসা দিয়েই কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যাবে। কেন্দ্রীয় বাহিনীর কাজ তাঁরা রুটমার্চ করবে। কিন্তু ভোট তো দেবে সাধারণ মানুষ।’