পঞ্চায়েত নির্বাচনের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বিরোধীরা দাবি করে আসছে দেদার ছাপ্পার পাশাপাশি ব্যালট বাক্স লুঠ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। বিজেপি তো টুইট করেছে, বুথ দখল করে তৃণমূল কংগ্রেস ভোট করিয়ে নিয়েছে। যদিও এসব অভিযোগের কোনও প্রমাণ তাঁরা দিতে পারেননি। বরং দেখা গেল, পঞ্চায়েত নির্বাচন শেষের পরও অশান্তি অব্যাহত থাকল। এমনকী পূর্ব বর্ধমানের মেমারিতে ব্যালট বাক্স অন্য গাড়িতে নিয়ে চম্পট দেওয়ার অভিযোগ উঠল সিপিএম–বিজেপির বিরুদ্ধে। আর তাদের সেই গাড়ি তাড়া করছে তৃণমূল কংগ্রেস।
ঠিক কী ঘটেছে মেমারিতে? স্থানীয় সূত্রে খবর, পঞ্চায়েত নির্বাচন শেষের পর যখন সব গুছিয়ে নেওয়ার কাজ চলছে তখন পূর্ব বর্ধমানের মেমারির নিমো ২ নম্বর পঞ্চায়েতের দেহুরাতে ব্যালট বাক্স ছিনতাইয়ের কাজ করল বিজেপি–সিপিএম। রাম–বামের যৌথ উদ্যোগে এমন কাজ নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। বিজেপি–সিপিএমের কর্মীরা ব্যালট বাক্স গাড়িতে তুলে চম্পট দেয়। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে তখন ওই গাড়িটির পিছনে তাড়া করে তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা। গোটা ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন এলাকাবাসী। তাঁরা পাশের বুথগুলিতে ভোটকর্মীদের আটকে রাখেন। তুমুল বিক্ষোভ শুরু হয়। অবশেষে রাত ১০টা নাগাদ পুলিশ–কেন্দ্রীয় বাহিনী ভোট কর্মীদের উদ্ধার করে।
এদিকে এমন ঘটনা নিয়ে সোচ্চার হয়েছেন গ্রামবাসীরা। কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপস্থিতিতে এমন ঘটনা কেমন করে ঘটল? তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। বিজেপি কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের ম্যানেজ করেছে এবং সিপিএম পালানোর পথ দেখিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আসলে হেরে যাবে বলেই এমন কাজ করেছে বিজেপি–সিপিএম বলে তাঁরা বলতে শুরু করেছেন। যদিও এই নিয়ে বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব কোনও প্রতিক্রিয়া জানাননি। গতকাল রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দফতরে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে শুভেন্দু অধিকারী সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলেছিলেন। ব্যালট বাক্স লুঠের অভিযোগ করেছিলেন। কিন্তু এই ঘটনা নিয়ে কিছু এখনও বলেননি।
আরও পড়ুন: ‘বাংলার রাজনৈতিক মানচিত্রে বিভাজন করছে বিজেপি’, টুইটে অমিতকে বিঁধলেন নুসরত
আর কী জানা যাচ্ছে? অন্যদিকে এখানে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয়েছিল। কোথাও কোনও হিংসার ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু শেষে যা ঘটল তা আলোড়ন ফেলে দিয়েছে। এই ঘটনা নিয়ে ওই বুথে পুনরায় নির্বাচনের দাবি তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এই বিষয়ে বুথের সেক্টর অফিসার সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘বিকেল ৫টায় ভোট শেষ হয়। আমরা অন্যান্য বুথে ঘুরে তারপর ওই বুথে যাই। কিন্তু সেখানে গিয়ে জানতে পারি পুলিশ সেক্টর থেকে আগেই গাড়ি এসে ব্যালট বাক্স তুলে নিয়ে গিয়েছে। পরে গোটা বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। সিপিএম–বিজেপি গাড়িতে ব্যালট বাক্স তুলে নিয়ে চম্পট দেয়। পাল্টা তৃণমূল কংগ্রেস ধাওয়া করে।’