সাধারণত নির্বাচনে লড়াইয়ের জন্য প্রচুর অর্থ খরচ করে থাকেন রাজনৈতিক দলের নেতারা। তবে সেই পরিমাণ অর্থ খরচ করার সামর্থ্য ছিল না তাঁর। তা সত্ত্বেও শুধুমাত্র মানুষের হয়ে কাজ করার জন্য ধার দেনা করেই এবার মধ্যপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচনে লড়েছিলেন। আর শেষ পর্যন্ত জয়ী হয়েছেন ভারতীয় আদিবাসী পার্টির প্রার্থী কমলেশ দোদিয়ার। ভোটে জেতার পরে প্রথমবার তিনি যেভাবে বিধানসভায় পৌঁছলেন তাতে অবাক হয়েছেন সকলেই। অন্যান্য নেতাদের মত চার চাকা গাড়িতে করে নয়, বাইকে করে বিধানসভায় পৌঁছলেন দিন মজুর পরিবারের সন্তান এই বিধায়ক। এই নিয়ে সমস্ত মহলে এখন জোর চর্চা শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন: মধ্যপ্রদেশে শোচনীয় হারের পর পদত্যাগ করুন কমল নাথ, চাইছে হাইকমান্ডও
ভারতীয় আদিবাসী পার্টির একমাত্র বিধায়ক নিজের হিরো স্প্লেন্ডার বাইকে করে ৩৫০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে ভোপালে বিধানসভায় পৌঁছন। সাইলানা নির্বাচনী কেন্দ্র থেকে তিনি জয়ী হয়েছেন তিনি। রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অন্যান্য নেতারা জয়ের জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচ করলেও সেই টাকা ছিল না এই বিধায়কের কাছে। তাই জনগণের কাছ থেকে অনুদান নিয়ে এবং ধার করে নির্বাচনে লড়েছিলেন ।
তিনি বলেন, ‘আমি দিনমজুর পরিবারের সন্তান। আমিও দিনমজুর ছিলাম। কঠিন জীবনযাপন করতে প্রতি মুহূর্তে আমাদের সংগ্রাম করতে হয়েছে। তাই নির্বাচনী খরচের টাকা ছিল না। তাই আমি টাকা ধার করে নির্বাচনে লড়েছি। তাঁর দল জনগণের কাছ থেকে ২.৩৮ লক্ষ অনুদান পেতে সক্ষম হয়েছিল। তাই ধার দেনা করে তিনি ১২ লক্ষ টাকা জোগাড় করেছিলেন।
তরুণ এই নেতা নিজের নির্বাচনী এলাকার জনগণ ও সম্প্রদায়ের পরিবর্তন আনতে বদ্ধপরিকর। তিনি বলেন, ‘মানুষকে বোকা বানানো, ভোট দেওয়ার ভয় দেখানো, টাকা ও মদ বিতরণের রাজনৈতিক ঐতিহ্যকে আমি ভেঙে দিয়েছি। আমি মানুষের কাছে গিয়ে তাদের আস্থা অর্জন করেছি। আমি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম যে আমি তাদের সমস্যার সমাধান করব। এই কারণেই মানুষ আমাকে ভোট দিয়েছে।’
তবে তাঁর কাছে যেহেতু অর্থ নেই তাই আগামী দিনে এই বাইকে করেই সব জায়গায় যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বিধায়কের। এই বাইকের সামনে একটি এমএলএ স্টিকার রয়েছে৷ তবে নিরাপত্তার কোনও সমস্যা হলে তখন তিনি অন্য পরিবহণ বেছে নেবেন।
বিধায়ক জানান, তাঁর অনুপ্রেরণা হলেন প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। তিনিই হলেন কমলেশের আদর্শ। তাঁর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়েই তিনি মানুষের সেবা করতে চান। উল্লেখ্য, কমলেশ দোদিয়ার ২০১৮ সালে নির্দল প্রার্থী হিসাবে প্রথম নির্বাচনে লড়াই করেছিলেন। তবে তাতে তিনি হেরে যান। পরের বছর, তিনি লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন কিন্তু তাতেও জিততে পারেননি। এবারের নির্বাচনে তিনি কংগ্রেসের প্রার্থী হর্ষ বিজয় গেহলটকে ৪,৬০০ ভোটে হারিয়েছেন।