২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, দ্বিতীয় দফায় মোট ৬০ শতাংশ ভোট পড়েছে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি ভোট পড়েছে মণিপুর ও ত্রিপুরায়। এবার তীব্র গরমে ভোট হওয়ায় অনেক জায়গাতেই ভোটের হার গতবারের চেয়ে কমে গিয়েছে। তবে সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে কর্ণাটকের এমন একটি প্রত্যন্ত গ্রাম রয়েছে যেখানে ১০০ শতাংশ ভোট পড়েছে। অর্থাৎ ওই গ্রামের প্রতিটি ভোটার ভোট দিয়েছেন। যা কার্যত অবাক করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশনের আধিকারিকদের। কর্ণাটকের দক্ষিণ কন্নড়ের বাঞ্জারুমালে গ্রামে এমনই ছবি দেখা গিয়েছে দ্বিতীয় দফার ভোটে। আর জঙ্গল এলাকায় অবস্থিত এই গ্রামের ভোটারের সংখ্যা জানলেও অবাক হবেন।
আরও পড়ুনঃ আজ দ্বিতীয় দফায় ৮৮ কেন্দ্রে ভোট, ২০১৯ সালের নির্বাচনে ক'টা আসনে জিতেছিল BJP?
কোনও বুথে ১০০ শতাংশ ভোট কার্যত নজিরবিহীন। সাধারণত, যে কোনও বুথে ভোট ৯০ শতাংশের বেশি বা ১০ শতাংশের কম হলে তা সন্দেহের আওতায় চলে আসে। সেক্ষেত্রে তদন্ত করে বিষয়টি খতিয়ে দেখে নির্বাচন কমিশন। এই গ্রামটির ক্ষেত্রেও সেটাই হয়েছে। ১০০ শতাংশ ভোট পড়ার খবর পেয়েই নির্বাচন কমিশন একটি দল গঠন করেছে। ওই দল বুথে গিয়ে তদন্ত করে দেখবে। যদি তদন্তে কোনও অনিয়ম ধরা পড়ে তাহলে ভোট সঠিক বলে গণ্য হবে না। কিন্তু, কোনও অনিয়ম পাওয়া না গেলে ভোট সঠিক বলেই ধরে নেওয়া হবে।
জানা গিয়েছে, ওই গ্রামের মোট ভোটার সংখ্যা হল ১১১ জন। ফলে এত কম ভোটার থাকায় ভোটের শতাংশ সঠিক হতে পারে বলেই ধারণা করা হচ্ছে। তবে নিয়ম মেনে কমিশন তা খতিয়ে দেখবে। কমিশন সূত্রের খবর, এই গ্রামে সন্ধ্যা ৬টায় ভোট শেষ হওয়ার দু ঘণ্টা আগেই ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। এই গ্রামের বাসিন্দারা মূলত জঙ্গলে বাস করেন। তাঁরা হলেন আদিবাসী কৃষক এবং জঙ্গল থেকে কাঠ এবং অন্যান্য জিনিস সংগ্রহ করে জীবিকা নির্বাহ করেন।
গ্রামটিতে বিদ্যুৎ বা পরিবহন সংযোগের কোনও ব্যবস্থা নেই। এমনকী পানীয় জলের জন্য পশ্চিমঘাট পাহাড়ের জলের ওপরেই তাঁদের ভরসা করতে হয়। তা সত্তেও গ্রামবাসীদের ভোট দেওয়ার উৎসাহ দেখে অবাক হয়েছে নির্বাচন কমিশন। জানা গিয়েছে, এর আগে ২০২৩ সালে কর্ণাটক বিধানসভা নির্বাচনে এই গ্রামটিতে ৯৯ শতাংশ ভোট রেকর্ড করা হয়েছিল।
এই গ্রামের বাসিন্দাদের বক্তব্য, তাঁরা সরকারি সুবিধা সেভাবে পান না। তাতেও তাঁদের কোনও অভিযোগ নেই। এক গ্রামবাসীর কথায়, ‘আমরা বুঝতে পারি যে শহরগুলিতে যে সুবিধা দেওয়া হয় তা সব গ্রামে দেওয়া যায় না। তবে সেবিষয়টি আমাদের ভোট দিতে বাধা দেয়নি।’ তিনি বলেন, ‘এই গ্রামে যদি ৫০০ জন বা তার বেশি ভোটার থাকত তাহলেও তারা সকলেই ভোট দিতেন।’