তোমরা আমাদের ভোট দাও। আমি তোমাদের লক্ষ্মীর ভাণ্ডার দেব। কার্যত তৃণমূলের প্রতিটা সভাতেই নেতা নেত্রীরা এই ধরনের বিষয়কেই সামনে আনার চেষ্টা করছেন। প্রচারে, দেওয়াল লিখনে বার বার উঠে আসছে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার।
তবে এবার দেখা গেল যে বৃহস্পতিবার পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদলে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের সভায় লক্ষ্মীর সাজে ছাত্রীদের নিয়ে আসা হয়েছিল বলে দাবি করা হচ্ছে। কিন্তু নির্বাচনী সভায় এভাবে লক্ষ্মীর সাজে ছাত্রীদের আনা কতটা যুক্তিযুক্ত তা নিয়ে প্রশ্নটা থেকেই গিয়েছে।
কিন্তু ছাত্রীদের কেন লক্ষ্মীর সাজে আনা হয়েছিল ভোটের মিটিংয়ে? রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, পুরোটাই প্রচার। আসলে এবারও ভোট পাওয়ার ক্ষেত্রে তৃণমূলের বড় হাতিয়ার হল লক্ষ্মীর ভাণ্ডার। বর্তমানে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের ভাতা হাজার টাকা করা হয়েছে।
এমনকী সভার শুরুতেই কোচবিহারের এক বিজেপি নেত্রীর ভাষণের অংশ শোনাচ্ছেন তৃণমূল নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়। মূলত সেখানে দাবি করা হচ্ছে ভোটের তিন মাসের পরে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার বন্ধ করে দেওয়া হবে। আর সেই আংশিক বক্তব্যকে হাতিয়ার করে ভোট বৃদ্ধি করার চেষ্টা করছে তৃণমূল।
এমনকী এবার একাধিক প্রচারে দেখা যাচ্ছে একটা ভান্ডার দেখাচ্ছেন তৃণমূল প্রার্থীরা। কৃষ্ণনগরে মহুয়া মৈত্রকে একাধিকবার দেখা গিয়েছে সেই ভাণ্ডারকে তুলে দেখাতে। এমনকী বিভিন্ন জায়গায় তৃণমূলের মহিলা কর্মীরা রীতিমতো ভাণ্ডার নিয়ে হাজির হয়ে যাচ্ছেন বাড়ি বাড়ি। মূল কথা হল লক্ষ্মীর ভাণ্ডার নিয়ে প্রচার। আর সেই প্রচারের আসল লক্ষ্য হল ভোটটা যেন তৃণমূলে পড়ে।
আর একাধিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার মহিষাদলে ছিল মুখ্য়মন্ত্রীর জনসভা। সেখানে কয়েকজনকে লক্ষ্মীর সাজে দেখা যায়। তবে বিজেপির দাবি, তাদের মধ্য়ে কয়েকজন স্কুল ছাত্রীও ছিল। তারা এসেছিল লক্ষ্মীর সাজে।
লালপাড় সাদা শাড়ি, মুকুট, গয়না পরে তারা হাজির হয়েছিলেন সভায়। তাদেরকে জোর করে আনা হয়নি। কীভাবে গ্রামে গ্রামে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার মহিলাদের মধ্য়ে জনপ্রিয় হয়েছে সেটা বোঝানোর জন্যই এই লক্ষ্মীর সাজে এসেছিলেন মহিলারা। দাবি শাসকদলের।
এদিকে বিজেপি নেতৃত্বও ইতিমধ্য়েই দাবি করতে শুরু করেছে যে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পরে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের ভাতা আরও বাড়িয়ে দেওয়া হবে। এমনকী এর নাম অন্নপূর্ণা ভাণ্ডার করা হবে বলেও একাংশ বলতে শুরু করেছেন। সব মিলিয়ে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারকে কেন্দ্র করে এবারও যে ভোটের ভরকেন্দ্র তৈরি হচ্ছে এটা বোঝাই যাচ্ছে।