আজ, বৃহস্পতিবার নির্বাচনী সভা করতে মেদিনীপুর ও পরে তমলুকে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তমলুকের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী দেবাংশু ভট্টাচার্যের হয়ে প্রচারে আসেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর খানের মঞ্চ থেকেই শিশির–শুভেন্দু, বিজেপি এবং প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে একযোগে তুলোধনা করলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। বললেন আমি ওর হয়ে ভোট প্রার্থনা করতে এসেছি। আজ নন্দীগ্রামের স্মৃতি উস্কে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিশানা করেন শুভেন্দু অধিকারীকে। গরমে সাত দফায় নির্বাচন করার জন্য মঞ্চে নির্বাচন কমিশনকে দুষছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিকে তমলুক আসন যে তৃণমূল কংগ্রেসের চাই তা আগেই ঘনিষ্ঠমহলে বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। আর এবার প্রকাশ্য মঞ্চ থেকে জনগণের কাছে এই লোকসভা কেন্দ্র দেওয়ার জন্য আহ্বান করেন তৃণমূলনেত্রী। তিনি বলেন, ‘আমি ওর হয়ে ভোট প্রার্থনা করতে এসেছি।’ নির্বাচন কমিশনকে দুষে বললেন, ‘মেদিনীপুরের রোদে দাঁড়িয়ে একবার দেখুন।’ তারপরই শুরু করলেন নন্দীগ্রাম প্রসঙ্গ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবার সুর সপ্তমে চড়িয়ে বলেন, ‘নন্দীগ্রামে যখন গুলি চলেছিল তখন সিপিএমের গুণ্ডারা মদ খেয়ে কোলাঘাটে আটকে দিয়েছিল। আমার গাড়িতে পেট্রোল বোমা মারার চক্রান্ত করেছিল। আনিসুরকে ডেকে পাঠিয়েছিলাম। যে এখন জেলে আছে এখানকার গদ্দারটার জন্য। সেদিন যখন কেউ ছিল না, আনিসুরকে বলেছিলাম, আমাকে ওরা পৌঁছতে দেবে না। কী করে পৌঁছবো বলতো। সেদিন আনিসুরের মোটরবাইকে তমলুক পর্যন্ত এসেছিলাম। নন্দীগ্রামে যখন গেলাম, সেদিন পিতা–পুত্র কেউ ছিল না।’
আরও পড়ুন: ‘দুর্নীতিতে যুক্ত পিনারাই বিজয়ন, পদক্ষেপ করে না কেন্দ্র’, কেরলের মুখ্যমন্ত্রীকে তোপ প্রিয়াঙ্কার
অন্যদিকে এখানেই থেমে থাকেননি মুখ্যমন্ত্রী। নাম না করে শুভেন্দু অধিকারী ও শিশির অধিকারীকে তুলোধনা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘সেদিন যখন এসেছিলাম আমি, কোথায় ছিলেন পিতা–পুত্র? কেউ কেন দেখতে পাননি তাঁদের? ১০দিন পিতা–পুত্র কেউ বেরোয়নি। কেউ আসেনি। সারারাত বোমা-গুলির আওয়াজ শুনেছিলাম। তখনও কিন্তু কেউ আসেননি। চিত্ত মাইতি আমাকে থাকতে দিয়েছিল। হ্যাঁ, আমি ওদের কথা আমার বইয়ে লিখেছিলাম। ভুল লিখেছিলাম। নিজেদের লোকের নাম করব না? তাই লিখেছিলাম। এখন সংশোধন করে দেব। কারণ আমি ১০ দিন ওখানে পড়েছিলাম। পিতা–পুত্র কেউ বাইরে বেরোয়নি।’
এছাড়া ২৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি যাওয়া নিয়েও তুমুল ক্ষোভে ফেটে পড়েন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিরোধী দলনেতাকে নাম না করে তৃণমূল সুপ্রিমোর প্রশ্ন, ‘কার কার চাকরি খাবেন উনি ঠিক করবেন? রায়টা আগে থেকে জানে কী করে? ওঁর এক পকেটে ইডি–সিবিআই। আর এক পকেটে বোমা। একবার বললাম হ্যাঁ রে, আমাদের সরকার না থাকলে দিঘায় আমাদের ঢুকতে দেবে তো? আমি ভাবছি দিঘায় একটা বাড়ি বানাবো। শুনে বাবু রেগে মেগে গাড়ি থেকে নেমে গেল। আমি ছিলাম, ও ছিল, আর এক সাংবাদিক ছিল সেদিন গাড়িতে। কংগ্রেস যখন করতাম, ও তিনবার দাঁড়িয়েছে। প্রত্যেকবার আমি এসেছি। ও গোহারা হেরেছে। বাবা মন্ত্রী হবে বলে ওর গুসসা হয়েছিল। বাবা মন্ত্রীর শপথ নিল। তাই ও সেখানে যায়নি। এঁদের কাছ থেকে শিক্ষা নেব? আর এখানে যিনি বিজেপি প্রার্থী হয়েছেন তিনি বিচারকের নামে কলঙ্ক।’