জোর কদমে শুরু হয়েছিল আলোচনা। এমনকী রবিবার সম্পর্কে শিলমোহর পড়তে চলেছিল। তবে সেই আলোচনা থমকে গেল মাঝপথেই। দীর্ঘদিন ধরেই দক্ষিণ ভারতে নিজেদের পায়ের তলার জমি শক্ত করতে চাইছে বিজেপি। একমাত্র কর্ণাটক ছাড়া সেভাবে দক্ষিণের কোনও রাজ্যেই শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারেনি তারা। আর তাই পুরনো বন্ধু টিডিপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে অন্ধ্রপ্রদেশে নিজেদের অস্তিত্বের জানান দিতে চাইছিল গেরুয়া শিবির। তবে জাতীয় দল হওয়ার দরুণ বিজেপির 'খিদেটাও' বেশি। টিডিপি এবং জনসেনা সেই খিদে না মেটাতে পারাতেই অন্ধ্রে জোট আলোচনা ভেস্তে গিয়েছে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে ইঙ্গিত সেদিকেই। অবশ্য অন্ধ্রে টিডিপির সঙ্গে জোট আলোচনা ভেস্তে গেলেও এই তিন দল যে একসঙ্গে কাজ করবে, সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ইতিমধ্যেই। (আরও পড়ুন: মাঠে মারা গেল মোদী-নবীন ব্রোম্যান্স? BJP-BJD জোট আলোচনায় জল ঢাললেন জগন্নাথ!)
উল্লেখ্য, দিল্লিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডার সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন টিডিপি প্রধান চন্দ্রবাবু নাইডু। সেই আলোচনায় সামিল হয়েছিলেন জনসেনা প্রধান তথা তেলুগু অভিনেতা পবন কল্যাণও। রবিবার এই জোটের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা হওয়ার কথা ছিল। তবে আপাতত জোট আলোচনা ভেস্তে গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তবে টিডিপির রাজ্যসভার সাংসদ রবীন্দ্র কুমার দাবি করেছেন, 'নৈতিক ভাবে বিজেপি, টিডিপি এবং জনসেনা একসঙ্গে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।'
জানা গিয়েছে, পবন কল্যাণের উপস্থিতিতে চন্দ্রবাবু এবং বিজেপি নেতৃত্বের বৈঠক হয়েছিল অমিত শাহের বাসভবনে। প্রায় এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলে সেই আলোচনা। অন্ধ্রপ্রদেশের মতো রাজ্যে যেখানে মাত্র ২৫টি লোকসভা আসন রয়েছে, সেখানে বিজেপির মতো দলকে নিয়ে তিন দলের জোট গড়া বেশ কঠিন কাজ। রিপোর্ট অনুযায়ী, অন্ধ্রপ্রদেশের ৬টি লোকসভা আসন বিজেপিকে ছাড়তে রাজি হয়েছে টিডিপি। জানা গিয়েছে, আরাকু, রাজমুন্দ্রি, এলুরু, রাজমপেট, তিরুপতি এবং নরসপুরম আসনগুলি বিজেপিকে ছাড়তে পারে টিডিপি। অবশ্য বিজেপি আরও তিনটি আসনের দাবি জানিয়েছে। রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, বিশাখাপত্তনম, বিজয়ওয়াড়া এবং হিন্দুপুরম কেন্দ্রগুলিতে লড়তে ইচ্ছুক বিজেপি।
গতবার এই ২৫টির মধ্যে ২২টিতেই জিতেছিল জগনের দল। আর টিডিপির ঝুলিতে গিয়েছিল মাত্র ৩টি আসন। বিজেপি কোনও আসনেই দাগ ফোটাতে পারেনি। এদিকে লোকসভার সঙ্গেই অন্ধ্রে অনুষ্ঠিত হবে বিধানসভা নির্বাচন। গতবারে অন্ধ্রের ১৭৫টি আসনের মধ্যে ১৫১টিতেই জিতেছিল জগনের দল। আর টিডিপির ঝুলিতে গিয়েছিল মাত্র ২৩টি আসন। বিজেপি এখানেও একটি আসনেও জিততে পারেনি। তবে এবার জোট হলে বিজেপি বিধানসভা নির্বাচনেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় আসন ছাড়তে হবে। প্রসঙ্গত, এর আগে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ-তে ছিল টিডিপি। সেই সময় অন্ধ্রের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন চন্দ্রবাবু নাইডু। তবে ২০১৮ সালে এনডিএ থেকে বেরিয়ে গিয়ে বিরোধী জোটে নাম লেখান চন্দ্রবাবু। তবে নিজের রাজ্যে জগনের দলের কাছে বিশাল হারের মুখে পড়েন চন্দ্রবাবু। এই আবহে ফের বিজেপির সঙ্গে জোট গড়তে আগ্রহী হন তিনি। তবে 'ব্রেকআপের' পরে ফের সম্পর্কে যাওয়া এতটা সহজ হচ্ছে না দুই দলের কারও কাছেই।