বিজেপির আবার একটি প্রার্থী তালিকা প্রকাশ হয়েছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে শ্রীরামপুর লোকসভা কেন্দ্রে বারবার জিতে আসা সাংসদ তথা আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বিজেপি প্রার্থী করেছে তাঁর প্রাক্তন জামাই কবীর শঙ্কর বোসকে। কবীরের সঙ্গে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মেয়ের বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছে বহুদিন আগেই। কিন্তু তার পরও দু’পক্ষের মধ্যে ক্ষোভ অব্যাহত। আর সেটাকেই কাজে লাগাতে চেয়েছে বিজেপি। ২০১৫ সালে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে পাঁচ কোটি টাকার মানহানির মামলা করেছিলেন কবীর। তার জেরে কবীরের আবাসনের বাইরে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন কল্যাণের অনুগামীরা। সুতরাং এখন শ্বশুর–জামাইয়ের (প্রাক্তন) লড়াইয়ে শ্রীরামপুর কেন্দ্র নজরকাড়া হয়ে উঠেছে।
এদিকে হুগলির শ্রীরামপুর এবার পারিবারিক লড়াই দেখবে। তৃণমূল কংগ্রেসের কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বিজেপি প্রার্থী করেছে কবীরশঙ্কর বসুকে। এই কবীর শঙ্করই কল্যাণের প্রাক্তন জামাই। তবে এই কেন্দ্রে বিজেপি সংগীত শিল্পী বাপি লাহিড়ীকে প্রার্থী করেও কল্যাণকে হারানো যায়নি। আসলে এটা কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের গড়। যেভাবে মানুষের কাজ করে গিয়েছেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় তাতে শ্রীরামপুর লোকসভা কেন্দ্রে তাঁকে হারানো কঠিন। এখানে একটা অতীত রয়েছে। সেটি হল—কবীরকে যিনি রাজনীতিতে নিয়ে এসেছিলেন তিনি এখন প্রায় ঘরে বন্দি। তাঁর নাম মুকুল রায়। মুকুলের ঐকান্তিক হাতযশেই কবীর শুধু বিজেপিতে আসেননি, তিনি কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তাও পান।
আরও পড়ুন: সমাবর্তনে আমন্ত্রিত রাজ্যপাল, আপত্তি উচ্চশিক্ষা দফতরের, কাজি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে জট
অন্যদিকে একুশের বিধানসভা নির্বাচনে শ্রীরামপুর কেন্দ্রে কবীরকে প্রার্থী করেছিল বিজেপি। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেস নেতা সুদীপ্ত রায়ের কাছে তিনি শোচনীয়ভাবে পরাজিত হন। সেই কবীরকে আবার লোকসভা নির্বাচনেও প্রার্থী করল গেরুয়া শিবির। ৬ মাসের বেশি সময় ধরে শ্রীরামপুর এলাকায় দৌড়ঝাঁপ করতে দেখা যাচ্ছিল কবীরকে। তখনই এলাকার স্থানীয় মানুষজন আন্দাজ করতে শুরু করেছিলেন শ্বশুরের বিরুদ্ধে প্রাক্তন জামাইকে প্রার্থী করবে বিজেপি। হলও তাই। ২০১৭ সালে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মেয়ের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ হয় কবীরের। কিন্তু তারপরও ক্ষোভ রয়ে গিয়েছে কবীরের। যার প্রেক্ষিতে আজ একে অন্যের প্রতিদ্বন্দ্বী।
এছাড়া কবীর শঙ্কর পেশায় আইনজীবী। সুপ্রিম কোর্টে প্র্যাকটিস করেন। আবার কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ও সিনিয়র আইনজীবী। সুপ্রিম কোর্ট এবং কলকাতা হাইকোর্টে তাঁর বিশেষ সুনাম রয়েছে। ভিখারি পাসওয়ান মামলায় সুপ্রিম কোর্টে সওয়াল করে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন কল্যাণ। তাঁর বিরুদ্ধেই এবার বিজেপি প্রাক্তন জামাই তথা আইনজীবীকে প্রার্থী করল। তবে বিজেপির এই প্রার্থী ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচন থেকে রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে ওঠেন। তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে প্রচার চালিয়ে ছিলেন। সিপিএম এবার এখানে প্রার্থী করেছে নতুন প্রজন্মের রাজনীতিবিদ দীপ্সিতা ধর। এবার দেখার লড়াইয়ের ফল কেমন হয়।