একুশের বিধানসভা নির্বাচনে কোচবিহার জেলার পুলিশ সুপার ছিলেন দেবাশিস ধর। যাঁকে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি প্রার্থী করেছে। বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী করা হয়েছে দেবাশিস ধরকে। আজ, সোমবার তারাপীঠে মায়ের পুজো দিয়ে প্রচার শুরু করবেন প্রাক্তন এই আইপিএস অফিসার। এখন তিনি বিজেপি নেতা হয়ে গিয়েছেন। কোচবিহারের পুলিশ সুপার থাকাকালীন শীতলকুচি কাণ্ড ঘটে। যার পরে তাঁকে সাসপেন্ড করা হয় বলে অভিযোগ। এই শীতলকুচি কাণ্ড নিয়ে রাজ্য– রাজনীতিতে আলোড়ন পড়ে গিয়েছিল।
এদিকে লোকসভা নির্বাচনের প্রচার চলছে জোরকদমে। তৃণমূল কংগ্রেস–বিজেপি কেউ কাউকে এক ইঞ্চি জমি ছাড়ছে না। সেখানে চাকরি ছেড়ে বিজেপির টিকিটে বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী হয়েছেন দেবাশিস ধর। প্রার্থী হয়ে তিনি বলেন, ‘এটা আমার জীবনের নতুন অধ্যায়। রাজনীতি আর পুলিশ একে অপরের পরিপূরক। আমি যখন ল অ্যান্ড অর্ডার সামলাতে ইউনিফর্ম পরেছিলাম, তখন মুদ্রার একদিকে ছিলাম। এখন আমি মুদ্রার অন্য দিকে।’ বীরভূম লোকসভা কেন্দ্র থেকে গত তিনবার জয়ী হয়েছেন শতাব্দী রায়। তাঁকে এবারও টিকিট দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। এই বিষয়ে দেবাশিসবাবুর বক্তব্য, ‘আমি তাঁকে দিদি বলে ডাকি। শ্রদ্ধার সঙ্গে বলছি, এখানে দু’টি পার্টির লড়াই হবে। দুটি আদর্শের লড়াই হবে।’
আরও পড়ুন: রাস্তা থেকে উধাও হয়ে যাচ্ছে বাস–মিনিবাস, লোকসভা নির্বাচনের প্রেক্ষিতে এমন হাল
অন্যদিকে বীরভূমে এখনও অনুব্রত মণ্ডলের নামে ভোট হয়। তিহার জেলে বন্দি তিনি থাকলেও এখানে আজও পড়েছে বড় কাটআউট। প্রচার হয়েছে। এই প্রসঙ্গে দেবাশিস ধর বলেন, ‘বীরভূমের বড় শক্তি হলেন মা তারা। যিনি উপর থেকে সবকিছুকে নিয়ন্ত্রণ করেন। তাঁর উপরে খেলার ক্ষমতা আর কারও নেই। বীরভূম কোন দিকে যাবে, তিনি কোন দিকে খেলবেন, সেটা তাঁর লীলার উপরই নির্ভর করছে।’ তবে এক্স হ্যান্ডেলে শতাব্দী রায় লেখেন, ‘কোচবিহারের শীতলকুচিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে চারজন গ্রামবাসীর মৃত্যু হয়েছিল। তারপরেই তাঁকে সাসপেন্ড করে রাজ্য সরকার। সিআইডির আতসকাচের তলায় ছিলেন ওই অফিসার।’
সুতরাং শতাব্দী রায় বুঝিয়ে দিয়েছেন বিজেপি যাঁকেই প্রার্থী করে তাঁকে নিয়েই বিতর্ক রয়েছে। স্বচ্ছ ভাবমূর্তির কেউ বিজেপির প্রার্থী হয় না। তাই শতাব্দীর কথায়, ‘উনি প্রচারে নামুন। জনতা সঠিক রায় দেবেন।’ শতাব্দীর দাবিকে অস্বীকার করে প্রাক্তন আইপিএস দেবাশিস ধরের পাল্টা দাবি, ‘শীতলকুচির ঘটনার জেরে আমাকে সাসপেন্ড করা হয়নি। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল যে, ভোট পরবর্তী হিংসায় আমি ঠিকমতো কাজ করিনি। তাই কোচবিহার জেলায় হিংসা ছড়িয়েছিল। অথচ আমি দু’দিনে ১৩২ জনকে গ্রেফতার করেছিলাম। কেন আমার উপর পুরোটা চাপিয়ে দেওয়া হল সেটা আজও বুঝিনি।’