এই কূলে আমি আর ওই কূলে তুমি। মাঝেখানে বয়ে যাচ্ছে ভোট বৈতরণী। যিনি পার হতে পারবেন, মোক্ষ লাভ করবেন তিনিই। একদিকে সুজাতা মণ্ডল। বিষ্ণুপুরের তৃণমূল প্রার্থী। আর অন্যজন তাঁরই প্রাক্তন স্বামী বিজেপি প্রার্থী সৌমিত্র খাঁ।
দুজনেই এখন একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী। লড়াই জোরকদমে। আর সেই লড়াই বেশ ভালোই উপভোগ করছে বিষ্ণুপুর। সোমবার ট্রেনে উঠে পড়েন সৌমিত্র। সেখানেই যাত্রীদের সঙ্গে দেখা করলেন তিনি। ঝালমুড়িও খেলেন। আর সেই সোমবারেই আদিবাসীদের সঙ্গে মেতে গেলেন সুজাতা। আসলে দুজনেরই মূল লক্ষ্য হল ভোট প্রচার। ভোটের বাজারে বাসিন্দাদের মন জয় করা।
এদিন সোনামুখী স্টেশন থেকে একেবারে ট্রেনে চেপে পড়েন বিজেপি প্রার্থী সৌমিত্র খাঁ। লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিটও কেনেন তিনি। এরপর সোজা ট্রেনে। সেখানে তিনি সাধারণ যাত্রীদের মধ্য়ে ভোটের প্রচার করেন। নিঃসন্দেহে অভিনব উদ্যোগ। তবে শুধু শুকনো মুখে ভোটপ্রচার নয়, ঝালমুড়িও খান তিনি। সাধারণ যাত্রীদের সঙ্গে নানা বিষয় নিয়ে কথাবার্তা বলেন।
আর অন্য়দিকে এদিন সুজাতাকে দেখা গেল একেবারে অন্য মুডে। তিনি গিয়েছিলেন বেলিয়াতোড়ের বেনাচাপড়া গ্রামে। বেশিরভাগই আদিবাসীদের বাস সেই গ্রামে। সেখানেই যান তিনি। ভোটপ্রচারের সঙ্গেই সাধারণ মানুষের সুখ দুঃখের খবর নেন তিনি। একেবারে ঘরের মেয়ের মতো তিনি মিশে যান তাঁদের সঙ্গে। ধামসা মাদলের তালে নেচেও ওঠেন তিনি। এক আদিবাসী পরিবারের বাড়ির উঠোনে বসে মুড়িও খান তিনি। একেবারে গল্পে মেতে ওঠেন তিনি। কার্যত ঘরের মেয়ে এই ইমেজটাকে সামনে এনে ভোট প্রচারে নেমেছেন তিনি। সুজাতা বলেন, আমার বিরুদ্ধে যিনি রয়েছেন তার সঙ্গে সাধারণ মানুষ কোথায়। এত নিরাপত্তারক্ষী। মানুষ তো ভয় পেয়ে যাচ্ছেন।
তবে পাঁচ বছর আগেও পরিস্থিতিটা এমন ছিল না। তখনও প্রাক্তন হননি সৌমিত্র। তাঁর হয়েই দাপিয়ে প্রচার করেছিলেন সুজাতা। শেষ পর্যন্ত জিতেও যান সৌমিত্র। কিন্তু সম্পর্কটা শেষ পর্যন্ত টেকেনি। দুজনের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যায়। এখন দুজনের দুই দলের প্রার্থী। রাজনৈতিক লড়াই চলছে একে অপরের বিরুদ্ধে।
এদিকে এবার ভোট যুদ্ধে নেমে নানা ধরনের বিতর্কিত মন্তব্য করে ফেলছেন সৌমিত্র। তবে সেই তুলনায় অনেকটাই সাবধানে পা ফেলছেন সুজাতা। একেবারে বাড়ির অন্দরমহলে গিয়ে বাড়ির মহিলাদের সঙ্গে জমিয়ে গল্প করছেন তিনি। তবে শেষ পর্যন্ত বিষ্ণুপুর কার হবে সেটা জানার জন্য় আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতেই হবে।