দিনহাটায় হিংসার ঘটনায় আচমকাই বনধের ডাক দিয়েছিল তৃণমূল। কিন্তু সেটা যে এমন ব্যুমেরাং হয়ে যাবে সেটা হয়তো আন্দাজ করতে পারেনি তৃণমূলের একাংশ। অন্যদিকে বনধের রাজনীতি থেকে সাধারণত দূূরে থাকে তৃণমূল। সেক্ষেত্রে কেন আচমকা বনধ ডাকা হল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল দলের অন্দরেই। অন্যদিকে রমজান মাসের মধ্যে এভাবে বনধ ডাকায় অনেকেই সমস্যায় পড়ে যান। এরপরই বুধবার দুপরে ফেসবুকে পোস্ট করে বিকাল ৪টেতে বনধ প্রত্যাহারের কথা ঘোষণা করে দেন উদয়ন গুহ।
ফেসবুকে তিনি লিখেছেন, বনধে সাধারণ মানুষের ব্যপক সমর্থন। মানুষের অসুবিধের কথা এবং রমজান মাসের কথা বিবেচনা করে বেলা ৪টায় বনধ প্রত্যাহার করা হোক। উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহর এই বক্তব্যকে সমর্থন জানিয়েছেন অনেকেই। কিন্তু প্রশ্ন উঠতে থাকে কেন রমজান মাসের মধ্য়ে বনধ ডাকল তৃণমূল? দিনের ব্যস্ততম দিনে বনধ ডেকে আখেরে জনজীবনের কতটা সুবিধে করে দিল শাসকদল? তবে কি দলের নীতির বাইরে হেঁটে বনধ ডেকে বিপাকে পড়েছিলেন উদয়ন গুহ? সেকারণেই কি তড়িঘড়ি বনধ প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত?
একসময়ের ফরওয়ার্ড ব্লকের দাপুটে নেতা ছিলেন উদয়ন গুহ। তৃণমূলে এসে তিনিই এখন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী। বাম জমানায় কোচবিহারে বনধ ছিল প্রায় নিত্যদিনের ঘটনা। কথায় কথায় ডাকা হত বনধ। অন্যদিকে তৃণমূল জমানায় সেই বনধের রাজনীতি থেকে সরে এসেছিল দল। তবে হিংসার ঘটনায় অতীতে দেখা গিয়েছে দিনহাটায় কার্যত অঘোষিত বনধ পালিত হয়েছে। কার্যত আতঙ্কে দোকানপাট খুলতে পারতেন না ব্যবসায়ীরা। কিন্তু দিনহাটায় হিংসার ঘটনায় কেন বনধ ডাকা হল তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
মঙ্গলবার রাতে দিনহাটায় দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়িয়েছিল। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তথা কোচবিহারের বিজেপি প্রার্থী যখন প্রচার সেরে ভেটাগুড়ির বাড়িতে ফিরছিলেন তখন তাঁর কনভয়ে দিনহাটা শহরে হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ। এরপরই উদয়ন গুহ ও নিশীথ প্রামাণিক একেবারে মুখোমুখি হয়ে যান। তীব্র উত্তেজনা ছড়ায়। তবে তৃণমূলের পালটা দাবি তাদের উপরই হামলা চালানো হয়েছে।
অন্যদিকে বিজেপির এসপি অফিস অভিযানকে কেন্দ্র করে কোচবিহারে ব্যপক উত্তেজনা ছড়ায়। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে নিশানা করে মন্ত্রী উদয়ন গুহ লিখেছেন, মাননীয় রাজ্যপাল মহোদয়, শুনলাম আপনি দিনহাটায় আসছেন। নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে অবশ্যই নিয়ে আসবেন।