ওয়েনাড় লোকসভা কেন্দ্রটি কেরলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি লোকসভা কেন্দ্র। তার সঙ্গে সঙ্গে গোটা দেশের সাপেক্ষেও এই কেন্দ্রটির একটি বিশেষ রাজনৈতিক গুরুত্ব রয়েছে। জাতীয় কংগ্রেসের অন্যতম নেতৃত্ব রাহুল গান্ধী এই কেন্দ্রটি থেকে গত লোকসভা নির্বাচনে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন। সর্বশেষ লোকসভা নির্বাচনের তথ্য অনুযায়ী এই কেন্দ্রের মোট ভোটার সংখ্যা ১৩ লক্ষ ৫৭ হাজার ৮১৯ জন, বর্তমানে কোন কেন্দ্রটিতে কোন রিজার্ভেশন নেই। সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রের সমন্বয়ে ওয়েনাড় লোকসভা কেন্দ্রটি গঠিত। কেরল রাজ্যে সিপিএম, সিপিআই সহ অন্যান্য বামপন্থী দলগুলির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকলেও জাতীয় কংগ্রেসের একটি নির্দিষ্ট ভোট ব্যাঙ্ক রয়েছে। ওয়েনাড় কেন্দ্রটিতে রাহুল গান্ধী গতবার নির্বাচনে জাতীয় কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বিপুল জনসমর্থন পেয়ে জয়ী হন।
এবার রাহুল গান্ধীকে বেগে ফেলার জন্য শক্ত প্রার্থী দিয়েছে সিপিআই ও বিজেপি। সিপিআই-এর প্রার্থী ডি রাজার স্ত্রী তথা বিশিষ্ট নেত্রী অ্যানি রাজা। তিনি দলের জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য। অন্যদিকে বিজেপির প্রার্থী কেরলে রাজ্য দলের সভাপতি কে সুরেন্দ্রন। ফলে চাপে আছেন রাহুল, যদিও তিনি যে ফেভারিট, সেটা বলা বাহুল্য। দ্বিতীয় দফায় ২৬ এপ্রিল এই কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ।
২০০৯ সালে এই লোকসভা কেন্দ্রটির আত্মপ্রকাশের পর জাতীয় কংগ্রেস প্রার্থী এম আই সানাভাস এই কেন্দ্রটি থেকে বিপুল ভোট পেয়ে জয়লাভ করেন। অন্যদিকে সিপিআই প্রার্থী এম রহমাতুল্লাহ পেয়েছিলেন ৩১ শতাংশ ভোট। ২০১৪ সালের নির্বাচনে এই কেন্দ্রটি থেকে জয় লাভ করেন ৪১ শতাংশ ভোট পেয়ে, সিপিআই-এর ভোটের শেয়ার ৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে প্রায় ৩৯ শতাংশ গিয়ে পৌঁছায়। বিজেপির ভোটের শেয়ারও গতবারের তুলনায় পাঁচ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। তবে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে রাহুল গান্ধী জাতীয় কংগ্রেসের পক্ষ থেকে প্রার্থী হওয়ার পর এই কেন্দ্রে কংগ্রেস ২৩.৭ শতাংশ ভোটে পরাজিত করেন নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সিপিআই-এর প্রার্থী পি পি সুনীরকে।
২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের ক্ষেত্রে এই কেন্দ্রের দিকে নজর থাকবে সমস্ত রাজনৈতিক দলের। ২০২১ সালের কেরল বিধানসভা নির্বাচনের দিকে নজর রাখলে দেখা যাবে মানন্তবাদী কেন্দ্রে (তফসিলি উপজাতিদের জন্য সংরক্ষিত) সিপিআইএমের পক্ষ থেকে বাকেলু জয়লাভ করেন। তফসিলি উপজাতিদের জন্য সংরক্ষিত সুলতান বাথেরি কেন্দ্রটিকে জাতীয় কংগ্রেস প্রার্থী আইসি বালাকৃষ্ণান জয়ী হন। কালপেট্টা কেন্দ্রটিতেও জাতীয় কংগ্রেসের পক্ষ থেকে টি সিদ্দিক জয়লাভ করেছিলেন। তিরুপাম্বাদি কেন্দ্রটিতে সিপিআইএম প্রার্থী লিন্টো জোসেফ জয়ী হন৷ অন্যদিকে এরানত কেন্দ্রটিতে ইন্ডিয়ান ইউনিয়ন মুসলিম লীগের পক্ষ থেকে পিকে বশির জয় লাভ করেন। নীলাম্বর কেন্দ্রে নির্দল প্রার্থী পিভি আনোয়ার এলডিএফ-এর পক্ষ থেকে জয়ী হন। অন্যদিকে ওয়ন্দুর কেন্দ্রটিতে এ পি অনিল কুমার জাতীয় কংগ্রেসের পক্ষ থেকে জয়লাভ করেন।