সাঁইবাড়ি হত্যাকাণ্ডের পর বর্ধমানে পা রেখেছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী। তারপর ইতিহাসের পাতা অনেকবার উল্টেছে। জলও গড়িয়েছিল বহুদূর। আর এই বর্ধমানের মন্তেশ্বরের রাস্তার ধার থেকে হঠাৎ সরে গেল দেশের দুই প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী–রাজীব গান্ধীর মূর্তি। আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠল পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বর। এই দুটি মূর্তি রাজনৈতিক কারণে উচ্ছেদ করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে কংগ্রেস। আর তাই তারা এই এলাকায় বিক্ষোভ দেখায়। দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে মন্তেশ্বর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে এই ঘটনায় তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজনৈতিক বাতাবরণ।
কংগ্রেস সূত্রে খবর, ১৯৯০ সালে মন্তেশ্বরের বাজার এলাকায় দুই প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী–রাজীব গান্ধীর মূর্তি বসানো হয়েছিল। কংগ্রেসের অভিযোগ, ৯ ফেব্রুয়ারি রাতে জেসিবি দিয়ে মূর্তি দুটি ভেঙে ফেলা হয়। তৃণমূল কংগ্রেস থেকে বিজেপিতে যোগ দেওয়া দেবব্রত রায়ের নেতৃত্বে ইন্দিরা–রাজীবের মূর্তি সরিয়ে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। সেই ঘটনায় অবিলম্বে অভিযুক্তকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছে কংগ্রেস নেতৃত্ব।
এই বিষয়ে অধুনা বিজেপি নেতা দেবব্রত রায় জানান, কংগ্রেসের অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। মূর্তি দুটি যেখানে বসানো হয়েছিল সেই জায়গাটি ভেঙে গিয়েছিল। তার জেরে মূর্তি দুটি হেলে পড়েছিল। তিনি ৩,০০০ টাকা খরচ করে মূর্তি দুটিকে ওখান থেকে তোলার ব্যবস্থা করেছিলেন। তাঁর ঘরেই তত্ত্বাবধানে রাখা হয়েছিল। কয়েকদিন আবার বসিয়ে দেওয়া হবে। কংগ্রেস অবশ্য এই কথা মানতে রাজি নয়। বরং তাদের দাবি সময়ের গতিতে ভুলিয়ে দেওয়ার জন্যই এই অজুহাত খাঁড়া করা হয়েছে।
এখন প্রশ্ন উঠছে, বিজেপি নেতা হয়ে হঠাৎ তিনি ইন্দিরা–রাজীবের মূর্তি প্রতিষ্ঠা করবেন কেন? রাজ্য সরকার এবং কংগ্রেসকে না জানিয়ে তিনি এই কাজ করলেন কেন? দেবব্রত রায় বলেন, ‘১৯৯০ সালে আমরা ওই মূর্তি দুটি প্রতিষ্ঠা করেছিলাম। আজ যাঁরা তৃণমূল কংগ্রেসের উস্কানিতে আমার দিকে অভিযোগের আঙুল তুলছেন সেই কংগ্রেস নেতারা কোনওদিন মূর্তি দুটিতে মালা পর্যন্ত দেননি। তাই তাঁদের মুখে ওসব কথা মানায় না। আমি নিয়ম করে মূর্তি দুটিতে মালা পরিয়েছি। সেক্ষেত্রে দেশবরেণ্য এই দুই নেতা–নেত্রীর মূর্তি প্রতিষ্ঠা করার ক্ষেত্রে আমার কোনও সমস্যা নেই।’