নন্দীগ্রামে প্রচারে গিয়ে পায়ে আঘাত লেগেছিল তৃণমূল সুপ্রিমোর। তা নিয়ে রাজ্য–রাজনীতিতে কম জলঘোলা হয়নি। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে, রিপোর্ট তলব করে নির্বাচন কমিশন। সেই আঘাতের পর থেকে তৃণমূল নেত্রী হুইল চেয়ারে সফর করে চলেছেন। দ্বিতীয় দফায় সেখানে ভোট ছিল। নন্দীগ্রাম নজরকাড়া কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল মমতা–শুভেন্দুর লড়াইয়ে। এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পায়ের চোট লাগা নিয়ে বিতর্ক গড়াল দেশের সর্বোচ্চ আদালতে। সিবিআই তদন্তের আর্জি জানিয়ে মামলা করা হয়েছে। নন্দীগ্রামে ঠিক কী ঘটেছিল? এই ঘটনার সিবিআই তদন্তের প্রয়োজন জানিয়েই সুপ্রিম কোর্টে মামলা করলেন তিন আইনজীবী— শুভম অবস্তি, আকাশ শর্মা, সপ্তর্ষি মিশ্র।
এই তিন আইনজীবী সর্বোচ্চ আদালতে পিটিশন দাখিল করেছেন। নন্দীগ্রামের ঘটনার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করে আসছেন, নন্দীগ্রামে তাঁর ওপর হামলা হয়েছিল। কে বা কারা এই হামলার পেছনে রয়েছে, কেন হামলা করা হয়েছে এবং ঘটনাটির সত্যতা কতটা, তার জন্য সিবিআই তদন্তের প্রয়োজন বলে মনে করছেন তাঁরা। এই মামলায় নির্বাচন কমিশন, পশ্চিমবঙ্গ সরকার, সিবিআই এবং কেন্দ্রীয় সরকারকে পক্ষ করা হয়েছে। গত ১০ মার্চ নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আঘাত পাওয়ার ঘটনার সিবিআই তদন্তের দাবি করে সুপ্রিম কোর্টেও গিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। আজ তৃণমূল কংগ্রেসের সেই আবেদন খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। শুক্রবার প্রধান বিচারপতি এসএ বোবদের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের এক বেঞ্চের তরফে শুনানিতে জানিয়ে দেওয়া হয়, সুপ্রিম কোর্টে নয়, এই আবেদন কলকাতা হাইকোর্টে করুন।
উল্লেখ্য, গত ১০ মার্চ নন্দীগ্রামে প্রচারে গিয়ে পায়ে চোট পান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘটনার পর থেকেই নেত্রী অভিযোগ করেছেন, পূর্ব পরিকল্পনা করে কয়েকজন এসে তাঁর গাড়ির দরজা বন্ধ করে দিয়েছিল। তাতেই তিনি আঘাত পেয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর উপর হামলা হয়েছে বলে তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানানো হয়েছিল। এই ঘটনার পরই রাজভবনে গিয়ে ঘটনার পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট জমা দেন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ডিজিপি নীরজনয়ন।
ভিডিও ফুটেজ, স্থানীয় পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ানের ভিত্তিতে রিপোর্ট তৈরি হয়। তাতে পর্যবেক্ষকদের মতামতকেই সিলমোহর দেয় নির্বাচন কমিশন। বাংলার নিযুক্ত পর্যবেক্ষক ও মুখ্যসচিবের রিপোর্টের ভিত্তিতে কমিশন স্পষ্ট করে, নন্দীগ্রামের বিরুলিয়া গ্রামে মমতার পায়ে লাগা নেহাত একটি দুর্ঘটনা ছিল। কোনও হামলা হয়নি। যদিও কমিশনের এই পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরও বিভিন্ন সভা খেকে ‘হামলা’র অভিযোগ করে চলেছেন নেত্রী। আর তার জেরেই এবার এই ইস্যু গড়াল সর্বোচ্চ আদালতে।