তৃণমূল কংগ্রেসে থেকে কাজ করা যাচ্ছে না। এই অভিযোগ তুলে পদ্মাসনে বসলেন সাংবাদিক–বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল। আর ভেঙে দিলেন দীর্ঘ ৩৯ বছরের সম্পর্ক। বহুল প্রচারিত দৈনিকের সাংবাদিক প্রবীর ঘোষাল ও বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল দু’জনের সঙ্গেই মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সম্পর্ক ছিল চিরমধুর। তবে সূত্রপাত হয়েছিল সাংবাদিকতার জীবন থেকেই। এমনকী সাংবাদিক জীবন থেকে অবসর নেওয়ার পর একটি বেসরকারি বড় সংবাদমাধ্যমে তাঁকে উচ্চপদে বসিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী বলে শোনা যায়। সেই সম্পর্ক বিজেপিতে যোগদানের সঙ্গে সঙ্গেই ছিন্ন করে দিলেন উত্তরপাড়ার বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের পাঠানো বিশেষ বিমানে ওঠার আগে তিনি শুধু বলেন, ‘মমতার প্রতি ও তাঁর পরিবারের প্রতি আমার সম্মান, ভালোবাসা, কৃতজ্ঞতা আজও অটুট আছে, ছিল ও থাকবে।’ যদিও তৃণমূল কংগ্রেসের এক প্রথমসারির নেতা বলেন, ‘এখান থেকে গুছিয়ে নিয়ে এখন বিজেপিতে গোছাতে গিয়েছেন প্রবীর। মানুষ সব দেখছে।’
গত সোমবার (২৫ জানুয়ারি) মুখ্যমন্ত্রীর সভায় গরহাজির ছিলেন প্রবীর ঘোষাল। সভাটি ছিল হুগলির পুরশুড়ায়। পরের দিন ২৬ জানুয়ারি প্রজাতন্ত্র দিবসের দিন জেলায় দলের মুখপাত্র ও কোর কমিটির সদস্য পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন উত্তরপাড়ার বিধায়ক তথা তৃণমূল কংগ্রেস নেতা প্রবীর ঘোষাল। আর শনিবার নিজের অবস্থান জানিয়ে দিয়ে বললেন, ‘একটা অস্বস্তি হচ্ছে এটা ঠিক। তবে তৃণমূল কংগ্রেসটা আর করা যায় না। তাই বিজেপিতে যোগ দিলাম।’
লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের খারাপ ফল হয় হুগলি জেলায়। দলের খারাপ ফলের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে কর্মীদের একাংশের খারাপ আচরণকে দায়ী করেছিলেন প্রবীর ঘোষাল। তাঁদেরকে দলের মধ্যে তিনি পচা মুখ বলে অ্যাখ্যা দিয়েছিলেন। আবার প্রবীর ঘোষাল বলছেন, ‘একটা চক্র কাজ করছে আমাকে হারানোর জন্য।’ তবে হুগলি জেলার তৃণমূল কংগ্রেসের এক নেতা বলেন, ‘তলে তলে লকেট চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে হাত মিলিয়েছিলেন প্রবীর ঘোষাল। তাই ফল খারাপ হয়েছিল। এবার আর হবে না। কারণ দল থেকে সে নিজেই বেরিয়ে গিয়েছে। আর ক্ষতি করতে পারবে না।’
উল্লেখ্য, ১৯৮২ সাল থেকে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সঙ্গে সম্পর্ক মমতা বন্দোপাধ্যায়ের। সাংবাদিক প্রবীর ঘোষালকে উত্তরপাড়ায় ২০১৬ সালে টিকিট দেন মমতা বন্দোপাধ্যায়। সেখান থেকে জিতে বিধায়ক হন তিনি। মমতা বন্দোপাধ্যায়ের এক সময়ের আস্থাভাজনের গলায় আজ অবশ্য অমিত-স্তুতি।