বুধবার ভোট প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে রাজ্যে এসেছে নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চ। আর বৃহস্পতিবার সকালে প্রথমেই এডিজি আইনশৃঙ্খলা জ্ঞানবন্ত সিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল আরোরা। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার প্রশ্নে ভোটের আগে বাংলায় শান্তি ফেরানোর উপযুক্ত পদক্ষেপ করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। তবে বৃহস্পতিবার তৃণমূল কংগ্রেসের মহাসচিব নির্বাচন কমিশনের ফুলবেঞ্চের সামনে বিস্ফোরক অভিযোগ করেছেন। যা নিয়ে এখন রাজ্য–রাজনীতি তোলপাড় হয়ে গিয়েছে।
রাজনৈতিক দলের নেতা–কর্মীদের সঙ্গে দেখা করার কথা ছিল মুখ্য নির্বাচন কমিশনার–সহ কমিশনের ফুল বেঞ্চের। সেখানে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় সাক্ষাৎ করেন। কমিশনে সাক্ষাতের পর সংবাদমাধ্যমের সামনে বিস্ফোরক অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের উপর আস্থা আমাদের আছে। তবুও বেশ কিছু বিষয় আমরা নজরে এনেছি এবং আলোকপাত করেছি। যার অবিলম্বে আমরা সুরাহা চাই। সীমান্তে বিএসএফের যাঁরা দায়িত্বে আছেন, তাঁরা গ্রামে গ্রামে গিয়ে একটি বিশেষ দলকে সহায়তা করার জন্য ভোটারদের ভয় দেখাচ্ছেন। তাঁরা বলছেন, তোমরা যদি ভোট না দাও, তাহলে তোমাদের নিরাপত্তায় রাখা যাবে না। আর আমরাই সীমান্তে থাকব। এটা ভয়ংকর অভিযোগ। এই নিয়ে নির্বাচন কমিশন অবিলম্বে হস্তক্ষেপ করুক।’
এই অভিযোগের পরই তোলপাড় হয়ে গিয়েছে রাজ্য–রাজনীতি। বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ অভিযোগ করেছেন রোহিঙ্গাদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। সেই কথাও কমিশনে জানান পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘বিজেপি’র পক্ষ থেকে কোনও কোনও নেতা অভিযোগ করেছেন রোহিঙ্গা–সহ বাংলাদেশের অনেক ভোটার নাকি তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এটা সর্বজনবিদিত যে ভোটার তালিকা তৈরি করে নির্বাচন কমিশন। সুতরাং নির্বাচন কমিশনের উপর চাপ তৈরি করে এমন পরিবেশ তৈরি করা যাতে নির্বাচনের প্রতি মানুষের আস্থা ও গণতান্ত্রিক পদ্ধতি বিঘ্নিত হয়।’
বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ কমিশনের দ্বারস্থ হন। কমিশনের ফুল বেঞ্চের সঙ্গে সাক্ষাতের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অভিযোগ খারিজ করেন। তাঁর দাবি, ‘বিএসএফ নিজের কাজ করছে। পুলিশ পক্ষপাতিত্ব করছে। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি জানিয়ে এসেছি।’ কিন্তু বিজেপি রাজ্য সভাপতি বিএসএফের এই কাণ্ড না মানলেও কমিশন কিন্তু বিষয়টি সরেজমিনে দেখবে বলে সূত্রের খবর।