ভোট–চতুর্থীর সকালে রক্তাক্ত হয়েছে কোচবিহার। তার জেরে মৃত্যু হয়েছে পাঁচজনের। তাঁদের মধ্যে চারজনের প্রাণ গিয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে। আর এই ঘটনার পর উত্তর ২৪ পরগনার হিঙ্গলগঞ্জের সভা থেকে সরাসরি অমিত শাহকে আক্রমণ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বললেন, ‘গুলির বদলা নিতে হবে ভোট দিয়ে। একটা মারাত্মক ঘটনা ঘটেছে। আর সেই ব্যথ্যা নিয়েই আমি এখানে এসেছি। যা আমাকে মর্মাহত করেছে। সিআরপিএফ গুলি চালিয়ে আজকে চারজন মানুষকে মেরে দিয়েছে।’
চলতি সপ্তাহেই শীতলকুচিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। শনিবার ভোটের দিন সেই শীতলকুচিতেই ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের কাছেই গুলিবিদ্ধ হয়ে এক তরুণের মৃত্যু। গোটা ঘটনায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। মৃত যুবক আনন্দ বর্মণ তাদের কর্মী ছিলেন বলে দাবি বিজেপির। অন্যদিকে আনন্দকে তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী বলে দাবি করেছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী তথা নাটাবাড়ির তৃণমূল প্রার্থী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ।
এই পরিস্থিতিতে তৃণমূল সুপ্রিমো তীব্র আক্রমণ করে বলেন, ‘আমি প্রথম দিন থেকে বলে আসছি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর চক্রান্তে কাজ করছে সিআরপিএফ। আর আজকে প্রমাণ হয়ে গিয়েছে শীতলকুচির ঘটনায়। সিআরপিএফ আমার শত্রু নয়। সিআরপিএফকে বিজেপির হয়ে কাজ করতে হচ্ছে। বিজেপি জেনে গিয়েছে ওরা হারবে। তাই নানারকম অশান্তি ছড়াচ্ছে। আমাদের কর্মীদের গুলি করে মারছে। সাধারণ মানুষকে মারছে। কী অন্যায় করেছিল ওই চারজন? কেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাধারণ মানুষের উপর অত্যাচার নামিয়ে আনার নির্দেশ দিচ্ছেন?’ ভোটের দিন সরাসরি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে কাঠগড়ায় তোলায় রাজ্য–রাজনীতি তোলপাড় হয়ে গিয়েছে। পাশাপাশি একসঙ্গে পাঁচজনের মৃত্যুতে তপ্ত হয়ে উঠেছে ভোট আবহ।
উল্লেখ্য, শীতলকুচির পাঠানপুলি এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। ভোটের লাইনেই গুলি করা হয় আনন্দকে। অভিযোগ বিজেপির। মৃত তরুণের পরিবারের দাবি মাত্র ১৮ বছরের আনন্দ প্রথম ভোট দেওয়ার জন্য সকাল সকাল ভোট গ্রহণকেন্দ্রের দিকে রওনা দেন। কিন্ত ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের কাছেই তাঁকে গুলি করা হয়। এই ঘটনা নিয়ে সোচ্চার হয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। নির্বাচন কমিশনের সাফাই, ‘বাধ্য হয়ে গুলি চালিয়েছে বাহিনী।’ কমিশনের এই সাফাই নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ‘এত মানুষ মেরে বলছে আত্মরক্ষা। আমি বলব, কেউ অশান্তি ছড়াবেন না। ভোট দিয়ে বদলা নিন। তবেই মৃতদের আত্মা শান্তি পাবে।’