যশরাজ ফিল্মসের ব্যানার তৈরি ছবি 'সম্রাট পৃথ্বীরাজ' ছিল ২০২২ সালের সবচেয়ে প্রতীক্ষিত ছবিগুলির মধ্যে একটি। নির্মাতারা আশা করেছিলেন যে এই ছবিটি করোনা মহামারীর সময় বক্স অফিসে তৈরি হওয়া খরার অবসান ঘটাবে এবং দর্শকদের প্রেক্ষাগৃহে ফিরিয়ে আনবে। কিন্তু ঠিক উল্টো ঘটনা ঘটেছিল। ছবিটি সেই বছরের সবচেয়ে বড় ফ্লপ প্রমাণিত হয়। পরিচালক চন্দ্রপ্রকাশ দ্বিবেদী সম্প্রতি অক্ষয় কুমার এবং মানুশি চিল্লার অভিনীত ছবিটির ফ্লপ হওয়া নিয়ে দুঃখিত। সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে, দ্বিবেদী বলেছিলেন যে ছবির প্রযোজক আদিত্য চোপড়া তাঁর পরামর্শ উপেক্ষা করেছিলেন। তিনি আরও জানান যে, ছবিটি ফ্লপ হওয়ার পর এর প্রধান অভিনেতা অক্ষয় কুমার ফেলেছিলেন চোখে জল।
চন্দ্রপ্রকাশ দ্বিবেদী বলেন, ‘ছবিটি মুক্তির আগেই দর্শকরা অনেক বিষয় নিয়ে সমালোচনা শুরু করেছিলেন। ছবিতে অক্ষয়কে কেমন দেখাচ্ছে তা নিয়ে তাঁরা আপত্তি তুলেছিল। কীভাবে অভিনেত্রী মানুশি চিল্লার এত কম বয়সী ছিলেন এবং অক্ষয়, যিনি তখন ৫৫ বছর বয়সী ছিলেন, এক ২৬ বছর বয়সী রাজার ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন। তাঁর গোঁফ নিয়েও প্রশ্ন ওঠে যে, কেন আসল গোঁফ নেই? এমনকী বলা হয়েছিল যে, তাঁর শরীরের গঠন পৃথ্বীরাজের মতো ছিল না। আজ আমি স্বীকার করতে চাই যে, এই আপত্তিগুলির বেশিরভাগই সঠিক ছিল।’
এরপর প্রযোজক আদিত্য চোপড়ার দিকে অভিযোগের আঙুল তুলে তিনি জানান, ‘তিনি সক্রিয়ভাবে তাঁর প্রযোজিত সব সিনেমার সঙ্গে জড়িত থাকেন। কিন্তু পৃথ্বীরাজ একটি ঐতিহাসিক ছবি। এই ছবি নিয়ে তাঁর সম্পূর্ণ ভিন্ন ধারণা ছিল। পৃথ্বীরাজ চলচ্চিত্র সম্পর্কে তাঁর নিজস্ব মতামত ছিল। তিনি শুধু একজন অর্থদাতা নন, তিনি একজন সৃজনশীল ব্যক্তিও। তার কিছু ধারণা ছিল যা ছবির শুরুতেই আলোচনা করা উচিত ছিল। তিনি শুধু একজন অর্থদাতা নন, তিনি একজন সৃজনশীল ব্যক্তিও। আমি মনে করি, ইতিহাস সম্পর্কে তার এবং আমার মতামত সম্পূর্ণ ভিন্ন।’
অক্ষয় কুমারের কথা উল্লেখ করে চন্দ্রপ্রকাশ দ্বিবেদী বলেন, ‘আমি এবং অক্ষয় কুমার দুজনেই সম্রাট পৃথ্বীরাজের ফ্লপ থেকে শিখেছি যে ইতিহাসের উপর হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়। সিনেমা মুক্তি পাওয়ার পর যখন আমি ওর সঙ্গে ছবির সমালোচনা ভাগ করে নিয়েছিলাম, তখন ওঁর চোখে জল ছিল।’
দ্বিবেদী আরও বলেন, ‘অক্ষয় একজন সফল অভিনেতা এবং আমার জীবনে তাঁর একটা জায়গা আছে। যেখানে আমি তাঁর সামনেই তাঁর সমালোচনা করতে পারি। আমি শুধু কথায় তাঁকে সমালোচনা করিনি, আমি তাঁকে ইমেইলেও এই বিষয়ে লিখেছিলাম। এবং তারপরেও আমাদের সম্পর্কের কোনও উত্তেজনা ছিল না।’ এটি উল্লেখযোগ্য যে, পৃথ্বীরাজের পরে দ্বিবেদী এবং অক্ষয় রাম সেতু এবং ওএমজি ২-এ একসঙ্গে কাজ করেছিলেন। এই দুটি ছবিরই সৃজনশীল প্রযোজক ছিলেন দ্বিবেদী।