অঞ্জন দত্ত মানেই এক ধাক্কায় অনেক কিছু মনে পড়ে যাওয়া। ‘বেলা বোস’ থেকে ‘মেরি অ্যান’, ‘ম্যাডলি বাঙালি’ থেকে ‘দত্ত ভার্সেস দত্ত’। ওহ, ‘প্রিয় বন্ধু’কে কী করে ভুলি। গান থেকে ছবি, ওয়েব সিরিজ থেকে লেখা, সবেতেই সমান দক্ষ তিনি। কলেজ জীবনে যাঁদের গান আজও ক্লাসরুমে বেঞ্চ বাজিয়ে বা ফেস্টে গাওয়া হয় তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন অঞ্জন দত্ত। কিন্তু এত বছর ধরে দর্শকদের বহু ভালো কাজ দেওয়ার পর তাঁদের থেকে রিটার্ন গিফট হিসেবে অফুরান ভালোবাসা পাওয়ার পর আচমকা তাঁর মনে একাধিক প্রশ্ন জেগেছিল।
ফেসবুকের পাতায় একটি পোস্ট করে রঞ্জনার স্রষ্টা জানতে চান দর্শক বা শ্রোতারা কেন তাঁকে ভালোবাসেন? এদিন তিনি পোস্টে খোলাখুলি প্রশ্ন রাখেন যে সবাই কেন তাঁকে চেনেন বা পছন্দ করেন? কতজন ‘২৪৪১১৩৯’ -এ আজও বিশ্বাস করেন? কতজন তাঁর ‘আমি আসব ফিরে’র জন্য তাঁর কাজকে ভালোবেসেছেন? নাকি যাঁরা তাঁকে ভালোবাসেন তাঁরা তাঁর ‘বৃষ্টি দেখেছি’ বা ‘ভগবান জানে’ তার জন্য ভালোবাসেন?
আরও পড়ুন: 'অনেকেরই পছন্দ হবে না', মৃণাল সেনকে নিয়ে সিনেমা প্রসঙ্গে কেন এই কথা বললেন অঞ্জন দত্ত
এদিন এই বর্ষীয়ান সঙ্গীত শিল্পী তথ্য পরিচালক, লেখক লেখেন, ' এই পোস্ট থেকে আমি জানতে চাই কী কারনে আমার কাজ ভালো লাগে? এই পোস্ট আপনাদের সবাইকে সম্মান জানানোর জন্য আর আপনাদের ভালো লাগা খারাপ লাগার বিষয়ে জানতে চাই, ঠিক কী কারনে আপনারা এতদিন ধরে আমাকে রোজগার করতে সাহায্য করলেন? আপনারাই করলেন। কিন্তু কী কারণে? আমি ভালো গান লিখেছি বলে? আমি রাজনীতির বোকামি থেকে শত হস্ত দূরে থাকি বলে? আমি ভালো অভিনেতা বলে?' তিনি প্রশ্ন তোলেন আরও। কিন্তু কেন সেটা স্পষ্ট হয় না। হওয়ার দরকারও ছিল না বোধহয়।
পছন্দের শিল্পী যখন পোস্ট করেছেন তখন তো উত্তর দেওয়া তো বনতা হ্যায়! মাত্র কয়েক ঘণ্টায় তাঁর পোস্টে কমেন্টের সংখ্যা ১০০০ ছাড়িয়ে যায়। ৫০০ এর বেশি মানুষ তাঁর পোস্ট শেয়ার করে নিজেদের মতামত জানান। কেউ লেখেন, 'আপনি অঞ্জন দত্ত বলে।' কেউ আবার বলেন, ‘বেলা বোস’, ‘উমা’র জন্য। কারও মতে ‘রঞ্জনা আমি আর আসব না’, তো অন্য কিছু। কিন্তু কেন এই প্রশ্ন রেখেছিলেন তিনি? সেই ধোঁয়াশা বেশিক্ষণ জিইয়ে রাখলেন না। রাত পোহাতেই উত্তর দিলেন। অঞ্জন দত্ত তাঁর ফেসবুক পোস্টে এদিন লেখেন, ‘Exactly ৪৮ ঘণ্টা আগে আমি আমার পরবর্তী কাজের সিদন্ত নিচ্ছিলাম। আমার ৬৯ বছরের অভিজ্ঞতা, সময় এবং আপনাদের কাছে পৌঁছবার সঠিক রাস্তা, প্ল্যাটফর্ম বা মেথড বেছে নিতে চাইছিলাম। একটা সিদ্ধান্ত নেবার দরকার ছিল। তাই আপনাদের কাছেই জানতে চেয়েছিলাম, আমার কী বেশি ভালো লাগে? লেখা, গান, সিনেমা, অভিনয় না অন্য কিছু? আমি বেছে নিয়েছি। বাংলাদেশ থেকে অনেকগুলো নতুন গান, সিনেমা, অভিনয়, গপ্পো আসবে যেটা আমার জায়গা বা আমার নিজের অবস্থান। দুঃখবোধ, ভালোবাসা, বন্ধুত্বের অনেক নতুন গান যা আমার পুরনো গানের মতোই আলাদা। আমার পুরনো সিনেমার মতো কিন্তু নতুন সিনেমা। বাংলাদেশ থেকে আসবে কিন্তু কলকাতার গপ্পো, সিনেমা আর অনেক গান। এটা হতে পারে, যদি সব ঠিক ভাবে এগিয়ে যায়।’
অর্থাৎ ৭০ বছরে পা দেওয়ার আগেই নতুন কাজের ঝুলি নিয়ে আসছেন তিনি।