অনুরাগের ছবির নায়িকা হওয়া মোটেই সহজ নয় তা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছেন সানি লিওন। মে মাসে কান চলচ্চিত্র উৎসবে প্রশংসা কুড়িয়েছে ‘ব্ল্যাক ফ্রাইডে’ পরিচালকের ‘কেনেডি’। যে ছবিতে মুখ্য নারী চরিত্রে অভিনয় করেছেন সানি লিওন। গ্ল্যামার কুইন সানি এই ছবিতে ধরা দিয়েছেন একদম অচেনা অবতারে। পর্নস্টার তকমা যেন এত বছর পরেও পিছু ছাড়েনি সানির। কিন্তু কেনেডি-তে দর্শক দেখবে একদম অন্য সানি লিওনকে।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে অনুরাগ কশ্যপ জানিয়েছেন কেন নিও-নয়ার ধারার এই ছবিতে সানিকে কাস্ট করেছেন তিনি। সানির কাস্টিং নিয়ে চারিদিকে যে এতো আলোচনা সেই ধারণার সমালোচনা করেন অনুরাগ। তাঁর কথায়, ‘এটাই তো চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় ভারতের চিন্তা-ভাবনা। সকলকে তাঁরা একইরকমভাবে দেখতে অভ্যস্ত। সকলে চায় পর্দায় শাহরুখ খান প্রত্যেক বার একই জিনিস তুলে ধরবেন, যখন তাঁদের মনের মতো কিছু হয় না তখন বলবে- এটা কেন করল, এই রকম কেন করল না। পাঠান হিট হয়েছে মানে এখন এটাই ফর্মুলা। সানিকে মানুষজন নিজের দৃষ্টিভঙ্গির বাইরে কোনওদিন দেখেনি। আমি কখনও সানির একটা ছবিও দেখিনি, তবে ওর একটা সাক্ষাৎকার দেখেছিলাম! কী দুর্দান্ত মহিলা’।
সানির অভিনয় ক্ষমতা সম্পর্কে কোনও ধারণা ছিল না অনুরাগের, তবুও তাঁকে কাস্ট করতে আগ্রহ দেখান পরিচালক। কারণ ওই সাক্ষাৎকারে সানির ঝলক দেখে তিনি নিশ্চিত ছিলেন অভিনেত্রীর দক্ষতা সম্পর্কে। পরিচালকের কথায়, সানির কাছে এই ছবির জন্য অডিশন দেওয়ার প্রস্তাব রাখলে এক কথায় রাজি হয়ে যান অভিনেত্রী, যা অবাক করেছিল তাঁকে। অনুরাগ নিশ্চিত ছিলেন সানিই তাঁর স্বপ্নের চরিত্রকে পর্দায় ফুটিয়ে তুলতে পারবেন। তুবও সানির অগ্নিপরীক্ষা নিতে ছাড়েননি অনুরাগ। তিনি বলেন,'আমি ওর জন্য অডিশন পর্বটা খুব অস্বস্তিকর করে তুলেছিাম। আমি সকলকে ঘরের মধ্যেই রেখেছিলাম, কারণ আমি দেখতে চেয়েছিলাম ও কী করে। মানসিক চাপ নেওয়ার ক্ষমতা কতখানি সেটা দেখতে চেয়েছিলাম।… ও নিজেকে নিয়ে কতখানি সচেতন তা জানতে চেয়েছি। ও মাথা উঁচু করে রুমে ঢোকে, লোকে ওকে নিয়ে কী ভাবছে সেই ব্যাপারে ওর মধ্যে কোনও ছুৎমার্গ নেই। ও একজন দৃঢ়চেতা মহিলা, আমি ওকে সম্মান করি। আমি জানতাম এই চরিত্রের জন্য ওই সেরা'।
এই ছবিতে সানির চরিত্র সম্পর্কে বিশেষ কিছু ফাঁস করতে না-রাজ অনুরাগ। তবে সানি সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে অনুরাগ কাশ্যপ ফিল্ম কম্প্যানিয়নকে এর আগে জানিয়েছিলেন, ‘আমার ৪০-এর উপরের একজন মহিলার দরকার ছিল। যাকে নিয়ে তার চারপাশের পুরুষরা যৌন চিন্তাভাবনা করে। সেই-সব পুরুষ যাদের বয়স ৫০-৬০-এর মধ্যে। আমার সেক্সের অভিনয় দেখার দরকার ছিল না। আমার দেখতে হত এমন একজন যে সত্যিকারের জীবনে এরকম পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যায়। সানির মধ্যে, আমি এমন একজন মহিলাকে পেয়েছি যে এই সমস্ত জিনিসগুলিকে অতিক্রম করে এসেছে।’
কেনেডি-তে সানির চরিত্র সম্পর্কে খুব বেশি কিছু প্রকাশ করা হয়নি, তবে টিজারে অভিনেত্রীর একটি ছোট্ট ঝলক রয়েছে। লিফটে উঠার পর তাকে হাসিতে ফেটে পড়তে দেখা যায়। এই ছবিতে অনিদ্রা রোগে ভোগা এক প্রাক্তন পুলিস অফিসারের গল্প উঠে এসেছে। দুনিয়ার চোখে বহুদিন আগেই মৃত তিনি, তবে দুর্নীতিগ্রস্ত সমাজব্যবস্থার বিরুদ্ধে অগোচরেই লড়াই চালাচ্ছেন তিনি। সেই চরিত্রেই রয়েছেন রাহুল ভাট।